বিয়ে নিয়ে প্রতিটি ছেলে এবং মেয়ে – দুজনের মনেই নানা স্বপ্ন থাকে। সে যে যাই বলুক না কেন! বিয়ের দিন কেমন সাজবেন তা নিয়ে বেশ অনেকদিন আগে থেকেই নানা জল্পনা-কল্পনা চলতে থাকে। মা, মাসি, পিসি, কাকি-জেঠি এমনকি প্রতিবেশীদের মধ্যেও কেউ-কেউ এসে তাঁদের মতামত দিতে শুরু করেন কনের কেনাকাটা (shopping) এবং সাজগোজের ব্যাপারে। ‘বিয়েতে বেনারসি পরতেই হবে, না পরলে অনর্থ ঘটে যাবে’ কিংবা “ব্যস, মাত্র চারটে শাড়ি কিনেছিস? বিয়ের পর তো শাড়িই পরতে হবে!” এই জাতীয় মন্তব্য প্রকাশ্যে বা আড়ালে চলতেই থাকবে ভাই! এত কথা মাথায় নিলে তো বিয়ের জন্য গোটা দোকানটাই কিনে ফেলতে হয় তাই না?
বিয়ের দিন আপনি যেমন সাজেন, বিয়ের পর কিন্তু বিয়ের শপিং বাবদ কেনা জিনিসের মধ্যে থেকে সিংহভাগ পোশাক বা জুতোই আপনি আর ব্যবহার করেন না, কিংবা করলেও হয়তো কালেভদ্রে। কিন্তু ওই যে রাঙা পিসিমা বা ফুল কাকিমার কথা শুনে আপনি কিনেছিলেন, বলতে গেলে টাকা ধ্বংস করেছিলেন! এবারে সেই ভারী জরির কাজ করা বেনারসি বা স্টোন বসানো সোনালি জুতোর কী হবে? কাজেই, বিয়ের সময়ে কনের (bride) কেনাকাটা যদি একটু স্মার্টলি করা যায়, তা হলে তখন কেনা জিনিসগুলো পরেও ব্যবহার করা যায় আর তার সঙ্গে পকেটেও বেশি টান পড়ে না!
কনের জন্য কেনাকাটা করতে যাওয়ার আগে এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন
১। আপনার বিয়ের পরের অবস্থা বুঝে কেনাকাটা করুন। বুঝলেন না তো? আপনি যদি চাকুরিরতা হন এবং ঠিক করে থাকেন যে বিয়ের পরেও চাকরি করবেন, তা হলে সেভাবেই পোশাক কিনুন। অর্থাৎ বাইরে বেরনোর পোশাক বেশি করে কিনুন। যেহেতু বিয়ের ঠিক পরপরই আপনি জিনস আর টপ পরে অফিস যেতে পারবেন না, কাজেই চুড়িদার বা কুর্তি-লেগিংস বেশি করে কিনুন।
২। আবার যদি আপনি বিয়ের পর গৃহবধূ হয়েই থাকতে চান, তা হলে বাড়িতে পরার পোশাক বেশি করে কিনুন। মনে রাখবেন, বিয়েতে কিন্তু আপনি বাইরে পরার পোশাক পাবেন উপহার বা তত্ব হিসেবে, কিন্তু বাড়িতে পরার মতো পোশাক কিন্তু কেউ আপনাকে উপহার দেবে না।
৩। বেশিরভাগ সময়েই দেখা যায় বিয়ের জন্য কনেকে এক ধরনের টিপিক্যাল সোনালি রঙের চুমকি বসানো চটি বা জুতো দেওয়া হয়, যা ওই বিয়ে-বউভাতের অনুষ্ঠানের পর আর কোনও দিন কেউ পরে না। ওই ধরনের জুতোগুলোর দামও বেশ ভালই হয়। ঠিক আছে, আপনি না হয় সোনালি জুতোই কিনলেন, তবে এমন জুতো কিনুন, যা আপনি পরেও কোনও না-কোনও সময় পরতে পারবেন।
৪। রাতপোশাক কেনাটা কিন্তু নতুন বউয়ের জন্য মাস্ট! তবে আপনি বলিউডি সিনেমার স্বপ্নদৃশ্য দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে বেশ কয়েকটা সেক্সি বেবিডল কিনে ফেললেন, কিন্তু লজ্জায় বরের সামনেও সেটি আর কোনও দিন পরতে পারলেন না, এমন হলে মুশকিল। ভেবে দেখুন, আমাদের প্রায় কারও চেহারাই বেবিডল পরার উপযুক্ত নয়! মানে, ব্যাপারটা অনেকটা ‘হতে চাইলেন সানি লিওনি কিন্তু হয়ে গেলেন সানি দেওল’ টাইপের যেন না হয়ে যায় সেটা মাথায় রাখুন!
৫। ব্যাগ আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বেশিরভাগ সময়েই খেয়াল করবেন বিয়ের কনের হাতে একটি পুঁচকে ক্লাচ থাকে যার মধ্যে নিদেনপক্ষে ফোনটাও ঢোকে না। এমন ব্যাগ কিনে কী লাভ ভাই? আপনার বন্ধু-বান্ধব বা কোনও সহকর্মী যাঁরা বিয়েতে নিমন্ত্রিত, তাঁরা যে সকলেই আপনার বাড়ির লোকজনকে চিনবেন তেমন তো না-ও হতে পারে, তাই না? তাঁরা আপনাকে ফোন করতেই পারেন বিয়েবাড়ির রাস্তা ঠিকভাবে চিনে আসার জন্য। তখন যদি আপনার ফোনটি আপনার কাছে না থাকে, তা হলে মুশকিল। একটু বড় সাইজের ব্যাগ কিনুন যাতে অন্তত টাকাপয়সা, মোবাইল ফোন আর গুটিকয়েক টিসু রাখতে পারেন। তা ছাড়া পরেও সেই ব্যাগটি আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।
৬। শাড়ি বা গয়না কেনার সময়ে নিজের মতামত দিন। না, আমি বলছি না যে, খুব দামি শাড়ি বা গয়না কিনতেই হবে, কিন্তু অন্তত নিজের পছন্দের রঙ বা ডিজাইন সম্পর্কে তো মতামত দিতেই পারেন। মনে রাখবেন, বাড়ির বা শ্বশুরবাড়ির লোকের মন রাখতে গিয়ে এমন কিছু কিনে ফেলবেন না যা আপনি সারাজীবনে কোনও দিন আর পরবেন না।
৭। বিয়ের তত্ত্বে প্রসাধনী দু’বাড়ি থেকেই আসে। গুচ্ছখানেক টিপের পাতা আর কুমকুম দিয়ে ট্রে না সাজিয়ে যেগুলো আপনার প্রয়োজন, সেসব রাখুন। একই ফাউন্ডেশন বা কম্প্যাক্ট দুটো-দুটো করে না কিনে বরং তার বদলে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে ট্রে সাজান। ট্রে ভরানোর দরকার হলে সুগন্ধি কিনুন বেশ কয়েকটি। ওগুলোর এক্সপায়ারি ডেট হয় না কিনা!
৮। বিয়ের কেনাকাটা করতে যাওয়ার আগে বাজেট ঠিক করে নিন এবং চেষ্টা করুন বাজেটের বাইরে না যাওয়ার। দু’-পাঁচশো এদিকওদিক হতেই পারে। কিন্তু এমন যেন না হয় যে, আপনি ভেবেছিলেন হাজার টাকার ব্যাগ কিনবেন, কিন্তু কিনে ফেললেন পাঁচ হাজার টাকার ব্যাগ! অথবা পারফিউম কিনবেন হয়তো দু’হাজার টাকার, কিন্তু কিনে ফেললেন আট হাজার টাকার!
৯। অন্তর্বাস কিনতে কার্পণ্য করবেন না, কারণ, অন্তর্বাস কিন্তু আপনাকে কেউ উপহার দেবে না!
১০। রূপচর্চার জিনিসপত্র যে ব্র্যান্ডের ব্যবহার করেন, সেই ব্র্যান্ডেরই কিনুন। এতে পরে ত্বক বা চুলের সমস্যা হবে না। অন্যের মন রাখতে গিয়ে নিজের ত্বকের বা চুলের সঙ্গে আপোস করার কোনও মানেই হয় না।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এগুলোও আপনি পড়তে পারেন
কলকাতার বিখ্যাত Wedding Photographer-এর সন্ধান
কলকাতায় প্রি-ওয়েডিং এর বেস্ট Location
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!