বাচ্চা প্রথমবার যখন হাঁটতে শেখে, তখন বারে-বারে হোঁচট খেয়ে তার যেমন টালমাটাল অবস্থা হয়, তেমনই প্রেমের সম্পর্কের শুরুর দিনগুলিতে বিশ্বাস এবং ভালবাসার ( Relationship) ভিতটা এতটাই নড়বড়ে থাকে যে, সম্পর্কের দেওয়ালে অল্পবিস্তর চিড় ধরার আশঙ্কা থাকে। তাই তো ইনিংস শুরুর সময় কতগুলি বিষয় মাথায় রাখা একান্ত প্রয়োজন। তাতে যেমন সম্পর্কের বুনোট আরও মজবুত হয়ে ওঠে, তেমনই প্রেম তার গভীরতা খুঁজে পায়। ফলে হাজার ঝড়-ঝাপটাতেও প্রেমের নৌকা পাল্টি খাওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না।
১. আঠার মতো সারাক্ষণ চিপকে থাকলে মুশকিল
প্রেমের শুরুতে একে-অপরকে ছেড়ে এক মুহূর্ত থাকতে মন চায় ঠিকই, কিন্তু তাই বলে গঁদের আঠার মতো চিপকে থাকলেও বিপদ! কারণ, ইকনমিক্স বলছে, কোনও কিছুর যোগান যখন চাহিদার থেকে বেড়ে যায়, তখন ধীরে-ধীরে তার প্রতি আকর্ষণ কমতে থাকে। তাই পাগলের মতো একে-অপরের সঙ্গে সময় কাটাতে শুরু করলে অল্প দিনেই যে ‘বোর’ লাগবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই! তাই দিনের কিছুটা সময় একসঙ্গে কাটান, তাতে কোনও ক্ষতি নেই। কিন্তু চব্বিশ ঘণ্টা একে অপরের সঙ্গে কোনও না-কোনওভাবে সেঁটে থাকার ভুল কাজটা করবেন না যেন!
২. মুখোশ পরলেই বিপদ
আপনি যেমন, ঠিক তেমন ভাবেই পার্টনারের সামলে নিজেকে মেলে ধরুন। তাতে বিশ্বাসের বুনিয়াদ আরও মজবুত হবে। সঙ্গে একে অপরকে আরও কাছ থেকে চেনার সুযোগ পাওয়ার কারণে পার্টনারের ভাল-মন্দ সম্পর্কে বুঝে উঠতে আপনার যেমন কোনও সমস্যা হবে না, তেমনই আপনার চরিত্রের খারাপ-ভাল দিকগুলি সম্পর্কেও আপনার জীবনসঙ্গী জেনে-বুঝে নিতে পারবেন। তাতে সম্পর্কের ক্যানভাসটা নানা রঙে রঙিন হয়ে উঠবে! আর যদি পার্টনারের মন জয় করার ফিরিকে মুখোশ পরেন, তা হলে প্রথম কয়েকটা দিন হয়তো সব কিছু ঠিক থাকবে। কিন্তু যে মুহূর্তে আপনার মুখোশটা খুলে যাবে, তখনই কিন্তু সত্যিটা সামনে এসে যাবে। সে সময় হাজার চেষ্টা করেও কিন্তু সম্পর্ককে বাঁচিয়ে তোলা আর সম্ভব হবে না। তাই মিথ্যাকে প্রশ্রয় দিয়ে নয়, বরং সত্যিকে আশ্রয় করে সম্পর্কের ভিত আরও শক্তপোক্ত করে তোলাটাই আসল কাজ।
৩. তুলনায় তেতো হয় সম্পর্ক
আইসক্রিমের স্বাদ নিশ্চয়ই গুলাবজামুনের মতো হবে না। তা হলে বোকার মতো অতীতকে টেনে এনে বর্তমান সম্পর্ককে তেতো করছেন কেন! এক্সের সঙ্গে মানিয়ে উঠতে পারছিলেন না বলেই তো নতুন সম্পর্কের খেঁজে বেরিয়ে পরেছিলেন। তা হলে আজ যখন সেই মনের মানুষের সন্ধান পয়েছেন, তখন এক্সের প্রসঙ্গ তুলে বা অতীতের সঙ্গে বর্তমানের তুলনা করে পরিস্থিতিকে বিষিয়ে তোলাটা যে বোকামি, তা নিশ্চয়ই আর বলে দিতে হবে না। তাই সম্পর্কের শুরুর দিনগুলিতে কোনও পরিস্থিতিতেই এক্সের সঙ্গে পার্টনারের তুলনা করতে যাবেন না যেন! তাতে লাভ তো কিছু হবেই না। উল্টে সম্পর্কে শুরু হতে না-হতেই শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়বে।
৪. তাড়াহুড়ো করলেই হাত-পা ভাঙবে
‘ফাস্ট টাইম দেখা তুঝে লাভ হো গয়া, সেকেন্ড টাইম মে সব হো গয়া’, এমনটা হলে কিন্তু বিপদ! কারণ, ভালবাসা নিজের মতো করে এগলেই সেটা নিরাপদের। কারণ, কোনও কিছু নিয়ে বেশি তাড়াহুড়ো করলেই এক্সিডেন্ট হবে। তখন কিন্তু চোখের জল ফেললেও কোনও লাভ হবে না। তাই ‘ধীরে চলো নীতি’ মেনে ফাস্ট গিয়ারে এগোতে থাকুন। দেখবেন, একদিন না-একদিন প্রেমের রেলগাড়ি প্রান্তিক স্টেশনে পৌঁছে যাবেই। কারণ, প্রেম টি২০ নয়, এটা টেস্ট ম্য়াচ। তাই সম্পর্ককে যদি বিয়ে পর্যন্ত টিকিয়ে রাখতে হয়, তা হলে রাহুল দ্রাবিড়ের মতো ধৈর্য ধরে ব্যাটিং করে যাওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
৫. খারাপ চিন্তাকে প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়
সম্পূর্ণ অচেনা দু’জন মানুষ এক অচেনা পথে একসঙ্গে বেরলে একটু-অধটু মনের অমিল তো হবেই। কিন্তু খারাপ চিন্তাকে প্রশ্রয় দিলে সমস্যা আরও বাড়বে। কারণ, খারাপ চিন্তা বিষের মতো হয়, অল্প সময়েই তা মনকে চুরমার করে দেয়। ফলে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই যতই ঝগড়া-ঝাটি হোক না কেন, খারাপ চিন্তাকে প্রশ্রয় দেওয়া চলবে না। বরং মনোমালিন্যের পর পরই মাঠা ঠান্ডা হওয়ামাত্র একে অপরের সঙ্গে কথা বলবেন। দেখবেন, অশান্তির কালো মেঘ কেটে গিয়ে প্রেমের আকাশে রামধনুর ছোঁয়া লাগতে সময় লাগবে না। মনে রাখবেন, কাউকে মন থেকে যখন ভালবেসেছেন, তখন তাঁর বিরুদ্ধে মন তেতো হবে, এমন কোনও চিন্তাকে যেমন সঙ্গী করা নয়, তেমনই এমন সব কাজ করা থেকেও নিজেকে বিরত রাখতে হবে, যা ভালবাসার পরিপন্থী, তাহলেই দেখবেন প্রেম তাঁর নিরাপদ আস্তানা একদিন ঠিক খুঁজে পেয়ে যাবেই যাবে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!