চাকরির সুবাদে সেই জলপাইগুড়ি থেকে কলকাতায় এসেছিল তনুকা। আরও তিনজন বান্ধবীর সঙ্গে একটা ফ্ল্যাট শেয়ার করে দিব্যি জীবন চলছিল ওর। তবে এই ফেব্রুয়ারি মাসে ভ্যালেন্টাইনস ডে এলেই ওর মনে হয় কলকাতা ছেড়ে কোথাও পালিয়ে যায়। ভীষণ একা লাগে তখন। কারণ ওর সঙ্গে যারা থাকে সেই তিনজন তাদের বয়ফ্রেন্ড নিয়ে ধাঁ! কেউ ক্লাবে গিয়ে নাচানাচি করছে, কেউ টুক করে কাটিয়ে আসছে একদিনের ছুটি, কেউ বা যাচ্ছে ক্যান্ডেল লাইট ডিনারে। প্রতিবছরই এরকম চলছে। এক বেচারা তনুকাই এখনও সিঙ্গল রয়ে গেছে। না, কেউ যে প্রপোজ করেনি এমনটা নয়। তবে এখনও মনের মতো কাউকে খুঁজে পাইনি তনুকা। তাই ওই ভ্যালেন্টাইনস ডে (Valentine’s Day) এলে বুকের মধ্যে চোরা মনখারাপ। আরে বাদ দিন তো! প্রেম (love) যখন হওয়ার ঠিক হবে। আর তাছাড়া প্রেমের দিন মানেই কি প্রেমিকের হাত ধরে আদিখ্যেতা? একদম নয়। বরং বিন্দাস হয়ে উপভোগ করুন নিজের সিঙ্গল স্টেটাস।
আরও পড়ুনঃ ভ্যালেন্টাইনস ডে স্পেশ্যাল মেনু
হতে পারে ভ্যালেন্টাইনস ডে কাপলরা বেশি ভালো উপভোগ করে অনেক আনন্দ উল্লাসে সময় কাটায়, কিন্তু আমরা সিঙ্গেলরাও কম কিসে? তাই আর মন উদাশ করে না থেকে আপনি একাই ভ্যালেন্টাইনস ডে টি প্রান খুলে উপভোগ করুন। নিশ্চয়ই ভাবছেন কিভাবে করবেন? আর ভাবনার কোনো প্রয়োজন নেই দেখে নিন সিঙ্গেলদের ভ্যালেন্টাইনস ডে উপভোগ করার কিছু টিপস –
প্রেমিক নেই তো বয়েই গেল। আচ্ছা সেই মানুষটিকে মনে আছে, যিনি ছোটবেলায় আপনার দেখাশোনা করতেন? বা সেই কাকু, যিনি সেই ছোট্ট আপনাকে স্কুলের বাসে থেকে নামিয়ে দিত? বা স্কুলের কোনও শিক্ষক/শিক্ষিকা যাকে আপনি খুব শ্রদ্ধা করেন। এরকম বহু মানুষ আছেন, যারা আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।আত্মীয় পরিজন না হয়েও যারা আপনাকে খুব ভালোবাসেন। তাদেরকে ফোন করুন। তাদের জন্য কিনুন ছোটখাট উপহার। আর পৌঁছে যান তাদের কাছে।
আপনার বন্ধুদের মধ্যে এরকম দুচারজন সিঙ্গল একটু খুঁজলেই পাবেন। তাদেরকে আমন্ত্রন জানিয়ে ছোট্ট একটা পার্টি দিন।আজকের এই গতির জুগে বহু বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা আছেন, যারা একা থাকেন। আপনার আশেপাশে এরকম কেউ থাকলে তাদেরও ডেকে নিন। নিঃসঙ্গ মানুষগুলোর আন্তরিকতার স্পর্শে আপনারও ভালো লাগবে।
অন্য কোনও মানুষকে ভালোবাসার আগে আপনাকে নিজেকে ভালোবাসতে হবে। আয়নার দিকে তাকিয়ে বলুন আমি যেমন ঠিক তেমনভাবেই সুন্দর। অন্য কারও চাহিদা অনুযায়ী আমি নিজেকে পাল্টাব না।কী খেতে ভালোবাসেন আপনি? কিনে আনেন সেটা। নিজেকে উপহার দিন ভালো ব্যাগ বা জুতো। ফুল আর আলো দিয়ে সাজান নিজের ঘর। নিজেকে বলুন, “এই দিনটা আমি তোমায় দিলাম।”
এরকম একটা দিনে বাড়িতে বসে থাকতে মোটেই ভালো লাগে না। বেরিয়ে পড়ুন বাড়ি থেকে। যাদের কেউ নেই তাদের পাশে দাঁড়ান। চলে যান কোনও বৃদ্ধাশ্রমে। ফোকলা দাঁতের হাসি আর ঠাট্টায় কাটান গোটা একটা দিন।ছোট শিশুদের প্রতি যদি আপনার টান থাকে তাহলে সেদিন চলে যেতেন পারেন কোনও অনাথাশ্রমে। মাদারের ‘নির্মল হৃদয়’ বা ঠাকুরপুকুর ক্যানসার হাসাপাতালে অসংখ্য কচি মুখের সারি। ছড়িয়ে দিন ভালোবাসা আর অনেক অনেক চকোলেট, বেলুন, ক্যান্ডি।
গভীরভাবে প্রেমে পড়তে বলছিনা। কিন্তু এমন কেউ আছে যাকে আপনি পছন্দ করেন বা যে আপনাকে পছন্দ করেন? উত্তর হ্যাঁ হলে তাকে একটা ফোন করুন। কোনও সিনেমা বা ডিনারের প্ল্যান করুন। জমিয়ে আড্ডা দিন। ভালোলাগাও তো একেক সময় ভালোবাসায় পরিণত হয় তাই না? কে বলতে পারে সামনের ভ্যালেন্টাইনস ডেতে আপনি আর সিঙ্গল থাকলেন না!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!