বছর শেষ হয়ে আসছে। দেখতে দেখতে কেটে গেল ২০১৮। সেদিন অফিস থেকে ফিরে চা খেতে খেতে এই গল্পই করছিল সুজয় আর রত্না। দুজনেই ব্যস্ত চাকুরে। হাতে বেড়াবার সময় বলতে বিশেষ একটা থাকে না। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে দুজনেই জন্মেছে পায়ের তলায় সর্ষে নিয়ে। এক দিন ছুটি পেলেই শহরের সীমানা পেরিয়ে দুজনে উধাও। এই করে করে খরচ হয়ে গেছে অফিসের বেশিরভাগ ছুটির ভাণ্ডার। তাই বলে বছরের শেষ উইকেন্ড ঘরে বসে কাটানোর বান্দা দুজনে নয়। তাহলে যাবেটা কোথায়? ওদের মতো আপনার মনেও এই প্রশ্ন আসছে তো? জানতাম। সেইজন্যই তো আমরা নিয়ে এসেছি কলকাতার খুব কাছেই (near Kolkata) পাহাড়, জঙ্গল(Jungle), সমুদ্র সব মেশানো পাঁচটা দুর্দান্ত উইকেন্ড ডেসটিনেশানের (weekend destination) সুলুক সন্ধান। দেখে নিন আর বেরিয়ে পড়ুন অজানার উদ্দেশ্যে।
আরও পড়ুনঃ কয়েকটি বিখ্যাত ঐতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্র
হি বার্মিওক
যারা পাহাড় ভালোবাসেন তাদের জন্য এই জায়গা আদর্শ। হিমালয়ের (Himalaya) কোলে দুটি পাশাপাশি গ্রাম হি ও বার্মিওক। প্রকৃতি এখানে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছে।
কী কী দেখবেন- শ্রীজঙ্ঘা মন্দির ও ফলস, বার্সে রডোড্রেনডন স্যাংচুয়ারি ও আলেদারার প্রাচীন গুহামন্দির।
কীভাবে যাবেন- কলকাতা থেকে এনজেপি হয়ে শিলিগুড়ি। সেখান থেকে মেল্লি বা জোরথাং। জোরথাং থেকে ভাড়া গাড়িতে হি বার্মিওক।
হিমালয়ের কোলে পাহাড়ি গ্রাম হি বার্মিওক
মুরগুমা
পাহাড়(Mountain) থেকে সমতলে নেমে এসে চলুন পুরুলিয়ায়। শীতকালে পুরুলিয়ার মুরগুমা খুব সুন্দর লাগে। আদিবাসী অধ্যুষিত এই অঞ্চলে বেশ একটা বন্য বন্য ব্যাপার আছে। এক সময় নাকি এখানে প্রচুর ময়ূর বা মোর ঘুরে বেড়াত। সেখান থেকেই এই জায়গার নামকরণ হয়েছে।
কী কী দেখবেন- শালের জঙ্গল, ঝর্ণা, পাহাড়ি টিলা
কীভাবে যাবেন- রূপসী বাংলা, পুরুলিয়া এক্সপ্রেস বা হাওড়া রাঁচি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে আসুন পুরুলিয়া। সেখান থেকে গাড়িতে মুরগুমা।
শালের জঙ্গলের হাতছানি দেয় মুরগুমা
ভালোপাহাড়
জে জায়গার নামই ভালোপাহাড় সে জায়গা ভালো না হয়ে যায় কোথায়? পুরুলিয়ার রুক্ষ মাটিতে অসংখ্য গাছ লাগিয়ে তাকে সবুজ করে তুলেছেন কবি কমল চক্রবর্তী। সবুজ…যেদিকে তাকাবেন শুধু সবুজ আর সবুজ আপনার দুচোখ জুড়িয়ে দেবে।
কী কী দেখবেন- আদিবাসী গ্রাম, জঙ্গল
কীভাবে যাবেন- হাওড়া থেকে ট্রেনে গালুডি। সেখান থেকে অটো বা গাড়িতে ভালোপাহাড় যেতে পারবেন।
সবুজের সমারহে সেজে উঠেছে রুক্ষ ভালোপাহাড়
গনগনি
এই মুহূর্তে এই জায়গাটি পর্যটকদের কাছে বেশ প্রিয় হয়ে উঠছে। কারণ কি জানেন? পশ্চিম মেদিনীপুরের এই অখ্যাত নদীখাতের চেহারা একদম আমেরিকার গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের (Grand Canyon) মতো। লাল ল্যাটেরাইট মাটি ক্ষয় করে শিলাবতী নদী (River) গড়ে তুলেছে অপরূপ ভাস্কর্য।
কী কী দেখবেন- গিরিখাত(Canyon), নদী, শালের জঙ্গল, সর্বমঙ্গলা মন্দির
কীভাবে যাবেন- রূপসী বাংলা বা আরণ্যক এক্সপ্রেসে গড়বেতা। এখান থেকে টোটো করে গনগনি যাওয়া যায়।
আমেরিকার গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের মতো দেখতে গনগনি
তাজপুর
পাহাড় হল, জঙ্গল হল এবার সমুদ্র (Ocean) হবে না? এটাই ভাবছেন তো? ঠিক ধরতে পেরেছি মনের কথা। বাঁধ ভাঙা ঢেউ আর নোনা হাওয়া যাদের ভালো লাগে তারা চলে যেতে পারেন তাজপুর।
কী কী দেখবেন – সমুদ্র, ঝাউবন, মন্দারমণি
কীভাবে যাবেন- কলকাতা থেকে দিঘাগামী বাসে বালিসাই। সেখান থেকে গাড়িতে তাজপুর। ট্রেনে এলে রামনগরে নামবেন। রামনগর থেকে গাড়িতে মাত্র ২০ মিনিট লাগবে তাজপুর আসতে।
সমুদ্রের নোনা হাওয়া ছাড়া কোনও বেড়ানো সম্পূর্ণ হয়না
ছবি সৌজন্যঃ পেক্সেল ডট কম
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!