কলকাতা (kolkata)! সিটি অব জয় (city of joy)! প্রাণের শহর (city)! যেখানকার মানুষ প্রতিটা উত্সব-পার্বণে মেতে ওঠে। সে বড় উত্সব (festivals) দুর্গাপুজোই হোক অথবা বড়দিনই হোক। সাহিত্য, ইতিহাস, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের এক অপূর্ব মেলবন্ধন এই কলকাতা শহর। এটুকু বললেই আশা করি বোঝা যায় কলকাতার ‘সিটি অব জয়’ (city of joy) নামটা সার্থক।
তবে কলকাতার (kolkata) মধ্যেই যেন একটা আলাদা দুনিয়া রয়েছে! এখানে এখনও পাড়ার চায়ের দোকানে কান পাতলে শুনতে পাবেন রাজনৈতিক চর্চা। যেটা মাঝেমধ্যেই চলে আসে তর্কাতর্কি। তবে সেই টপিকটা আর শেষ হয় না। আবার পরের দিন নতুন উদ্যমে নতুন কিছু নিয়ে আড্ডা শুরু হয়! শুধু কি তা-ই! যে কোনও খেলা নেই উন্মাদনা এই শহরের (city)। বিশ্বকাপের সময় বিশ্বকাপ জ্বরে কাবু হয় গোটা শহর (city)। আর ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান আর ঘটি-বাঙাল ঝগড়াটা তো চিরকালীন। কলকাতা মানে ডোভার লেন মিউজিক কনফারেন্স। বিভিন্ন ক্লাসিক্যাল নাচ-গানের নানা অনুষ্ঠান। আর এ ভাবেই যেন চলতে থাকে শহরটা! আর যাঁরা নিজেদের প্রাণের শহর (city) ছেড়ে কাজের স্বার্থে বাইরে রয়েছেন, তাঁরা তো প্রতি মূহূর্তেই কোনও না কোনও ভাবে কলকাতাকে খুঁজে নিতে চেষ্টা করেন। প্রতিটা প্রবাসী বাঙালির কাছে কলকাতা মানেই হল ‘ঘরে ফেরা’। কারণ কলকাতা (kolkata) শহরটা (city) সত্যিই সিটি অব জয়! নিন্দুকেরা অনেক কথাই বলবেন, মিটিং-মিছিল-যানজট! তা-ও সব কিছুর উপরে কলকাতা প্রাণের শহর হয়েই থাকবে।
আরো পড়ুনঃ কলকাতার সেরার সেরা দুর্গা মণ্ডপ
ঐতিহ্য ও ইতিহাস
কলকাতা ঐতিহ্যবাহী শহর। কলকাতায় (kolkata) এক সময় ব্রিটিশ রাজ ছিল। এখনও তার ছাপ রয়ে গিয়েছে। শহরের আনাচে কানাচে চোখে পড়বে ভিক্টোরিয়ান ডিজাইনের বিল্ডিং, চার্চ, মনুমেন্ট, অফিস। এমনকি ট্রাম, হাতে টানা রিকশা- এই সব কিছু রয়েছে একমাত্র কলকাতাতেই।
হাওড়া ব্রিজ
গঙ্গা নদীর উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী হাওড়া ব্রিজ। আর কলকাতার সঙ্গে অন্যান্য শহরতলি ও জেলাগুলোর যোগসূত্র স্থাপন করে রেখেছে হাওড়া ব্রিজ। সারাদিন গাড়িঘোড়া-অগুনতি মানুষের আনাগোনায় মুখর থাকে হাওড়া ব্রিজ। কিন্তু রাতের দিকে যখন যানবাহন আর কোলাহল থেমে যায়, তখন হাওড়া ব্রিজও যেন সারা দিনের ক্লান্তি ঝেড়ে একটু জিরিয়ে নেয়।
আরো পড়ুনঃ কলকাতার কয়েকটি সেরা সঙ্গীত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
গঙ্গার ঘাট
কোনও এক মন খারাপের বিকেলে ছুটে চলে যেতে পারেন গঙ্গার ঘাটে। সূর্যাস্ত দেখার সঙ্গে সঙ্গে নানা বয়সের মানুষের আনাগোনা দেখেই কাটিয়ে দিতে পারবেন অনেকটা সময়!
ঘোরাঘুরি
মন চাইলে এ দিক সে দিক বেড়িয়ে পড়ুন। শহরের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ান। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে। ঘোরার লিস্টটা তো লম্বা- মল্লিকঘাট ফুলের মার্কেট, ভিক্টোরিয়া, প্রিন্সেপ ঘাট, বাবুঘাট, রবীন্দ্র সরোবর লেক, নিক্কো পার্ক, ইকো পার্ক, সায়েন্স সিটি, ভারতীয় জাদুঘর। এক্সপ্লোর করা যায় উত্তর কলকাতার অলিগলি। সেই পুরনো দিনের বাড়ি। পুরনো দরজা। সেখান থেকে কুমোরটুলি। তার পর উত্তর কলকাতার কিছু ঘাট।
স্ট্রিট ফুড
কলকাতা হচ্ছে স্ট্রিট ফুডের স্বর্গ। রোল-চাউমিন-ফিশ ফ্রাই-কাটলেট-পোলাও-মাংস-বিরিয়ানি-স্যান্ডউইচ। শুধু কি তা-ই! লিস্টে রয়েছে ফুচকা-চাট-ঝালমুড়ি-ভেলপুরি-ধোসা-পাওভাজিও। বলে আর শেষ করা যাবে না! তালিকাটা লম্বা হতেই থাকবে!
শপিং
শপিং করতে হলে নিউ মার্কেট, গড়িয়াহাট আর হাতিবাগান। ফুটপাত থেকে অত্যন্ত কম দামে দারুণ দারুণ জিনিস কেনা যাবে। জামা-কাপড়, অ্যাকসেসরিজ থেকে শুরু করে ঘর সাজানোর জিনিসপত্রও। আর তার সঙ্গে তো রয়েইছে দরকষাকষির মজা!
কলেজ স্ট্রিট-কফি হাউস
সাহিত্য়প্রেমী বাঙালিদের স্বর্গ হচ্ছে কলেজ স্ট্রিট। নতুন-পুরনো সব রকম বই পেয়ে যাবেন এখানে। আর এখানেই রয়েছে কফি হাউস। মনে পড়ে মান্না দে-র ‘কফি হাউসের সেই আড্ডাটা’ গানটা! আরে বাঙালি মানেই তো আড্ডা। সেটা কফি হাউস ছাড়া আর কোথাও হতে পারে!
দুর্গাপুজো-ইদ-বড়দিন
কলকাতা সব সময়ই যেন উত্সবমুখর (festivals)। একটার পর একটা চলতেই থাকে। দুর্গাপুজো তো সব থেকে বড় উত্সব (festivals),এটা তো জানা কথা! দুর্গাপুজো থেকে শুরু করে ইদ, বড়দিন প্রতিটা উত্সবেই মেতে ওঠে কলকাতার মানুষ। আর পয়লা বৈশাখ, পিঠে-পার্বণ, সরস্বতী পুজো, দোল-বসন্ত উত্সব- এ সব তো সারা বছর লেগেই রয়েছে।
এ ভাবে তো সবটা বলা হয় না। অনেকটাই বাকি থেকে যায়। যে সব প্রবাসীদের সে ভাবে কলকাতা আসা হয় না, তাঁরা কলকাতায় (kolkata) এসে ভাল করে ঘুরে দেখুন। তা হলে বুঝতে পারবেন, কলকাতা কেন একটা ইমোশন। সব শেষে এটুকুই বলব, কলকাতা হল- নস্ট্যালজিয়া, ভালবাসা, ইমোশন আর অভ্য়েস!
ছবি সৌজন্যে: ইউটিউব
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি এবং বাংলাতেও!