ADVERTISEMENT
home / বিনোদন
গুরুগম্ভীর ব্যক্তিত্বের আড়ালে লুকিয়ে ছিল এক রসিক মন!চেনা ছকের বাইরে এক অচেনা সত্যজিৎ রায়

গুরুগম্ভীর ব্যক্তিত্বের আড়ালে লুকিয়ে ছিল এক রসিক মন!চেনা ছকের বাইরে এক অচেনা সত্যজিৎ রায়

আজ ২রা মে। সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Ray) জন্মদিন (happy birthday)। তাঁর অগাধ জ্ঞান, সিনেমা নিয়ে অপার পড়াশোনা আর দক্ষতা, ছবি আঁকা থেকে শুরু করে পশ্চিমি সঙ্গীত নিয়ে আগ্রহ এসবই আমরা জানি। ছফুট লম্বা পরিচালকের ব্যক্তিত্ব ছিল এমন যে তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে ইতস্তত করতেন অনেকেই। তাই বলে কি ভাবছেন, মানুষটাও খুব গম্ভীর ছিলেন? একদম না। সুকুমার রায়ের ছেলে বলে কথা। রসের ধারা যে রক্তের মতো তাঁর শিরায় প্রবাহিত। তাই আপাতদৃষ্টিতে তাঁকে গম্ভীর মনে হলেও তাঁর টুকটাক মন্তব্যে ছিল মজার (trivia) ছোঁয়া। আজ সিনেমার মহারাজার জন্মদিনে আমরা তুলে এনেছি এমন কয়েকটা ঘটনা, যা আমাদের সামনে তুলে ধরে অন্য এক সত্যজিতের (Satyajit Ray) ছবি।

জহর রায় বললেন আপনি যে image এ বড়

manik 1

‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ ছবির শুটিং চলছে। দুষ্টু মন্ত্রীমশাইয়ের ভূমিকায় রয়েছেন জহর রায়। শুটিং শেষে এক আড্ডায় আলোচনা হচ্ছে কার কত বয়স সেই নিয়ে। দেখা গেল জহর রায় সত্যজিৎ রায়ের চেয়ে বয়েসে বড়। সত্যজিৎবাবু অবাক হয়ে জহর রায়কে বললেন “তুমি আমায় মানিকদা বলো কেন?” রসিক মেজাজ জহর রায়েরও কম নয়। তিনি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় বললেন, “আমি আপনার চেয়ে age এ বড়, আর আপনি যে আমার চেয়ে image এ বড়!”

লিখেও বুঝি টাকা মেলে?

manik 2

ADVERTISEMENT

ফেলুদা’র গল্প তখন লিখতে শুরু করেছেন। প্রকাশিত হয়েছে ‘বাদশাহী আংটি’ এবং ছোট গল্পের সংকলন ‘এক ডজন গল্প।’ প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশক গেছেন দুই বইয়ের রয়্যালিটির টাকা দিতে। প্রকাশক সেই প্রথম সত্যজিৎ রায়কে দেখেছেন। একথা সেকথার পর আস্তে আস্তে চেকটা বের করে সত্যজিতের হাটে দিলেন। সত্যজিৎ রায় অবাক হয়ে বললেন, “ওমা লিখেও টাকা পাওয়া যায়?”

আমায় কি জলে ঝাঁপ দিতে হবে?

manik 3

বিশ্বজোড়া খ্যাতি হয়ে গেছে তখন মানিকবাবুর। স্বভাবতই সম্মানীয় মানুষজন ছাড়া নানা উটকো লোকও মাঝে মাঝেই তাঁকে বিরক্ত করতে আসে। কেউ আসেন বিশ্বখ্যাত পরিচালককে একবার চোখের দেখা দেখতে, কেউ আসেন সই চাইতে আবার কেউ অদ্ভুত আবদার নিয়ে আসেন। একদিন সত্যজিৎ রায় নিজের স্টাডিরুমে বসে স্কেচ করেছেন, দরজার বেল বাজল। পাঠভবন স্কুলের মাস্টারমশাই পার্থ বসু দরজা খুললেন। জনা পাঁচেক স্বাস্থ্যবান যুবক দাঁড়িয়ে। তারা জানাল একটা সুইমিং পুলের ওপেনিংয়ে রায়মশাইকে চান তারা। পার্থবাবু তো আজ মানিকদা বোম্বাই যাচ্ছেন, কাল প্যারিস যাচ্ছেন এসব বলে এড়িয়ে যাচ্ছেন ক্রমাগত। শেষে ছেলের দল বিরক্ত হয়ে চলে গেল। পার্থবাবুকে মানিকদা জিগ্যেস করলেন কী ব্যাপার? পার্থ বসু সঙ্কোচ করে বললেন, একটা সুইমিং পুলের উদ্বোধনে আপনাকে চাইছে! গম্ভীর মুখে সত্যজিৎ বললেন, “তা আমাকে কী করতে হবে সেখানে? সুইমিং কস্টিউম পরে জলে ঝাঁপ দিতে হবে?”  

শুভেন্দুর ছবি মস্কোয় যাবে

manik 4

ADVERTISEMENT

‘মেরা নাম জোকার’ এ রাশিয়ান অভিনেত্রী রাবিনকিনা প্রেমে পড়ে গেলেন অভিনেতা শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি সহ অভিনেত্রী সিমি গ্রেওয়ালের হাতে নিজের একটা ছবি পাঠালেন শুভেন্দুবাবুকে। পিছনে লিখে দিলেন, “with all my heart to Shubhendu!”  সেটা দেখে সত্যজিৎ রসিক স্বরে বললেন, “এবার দেখছি শুভেন্দুর ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ মস্কো ফেস্টিভ্যালেই পাঠাবো!”

এই এত্তটা!

sotyo

‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ ছবির সেই দৃশ্যটা মনে আছে? যেখানে গুপী লম্বা বলে রাজকন্যা পেল, আর বাঘা বলল, “আমি তোমার চেয়ে কম কীসে?” উল্লাসিত গুপীর উত্তর, “এই এত্তটা!” এরকমই ঘটেছিল বাস্তবেও। গ্র্যান্ড হোটেলের কাছে আছে ‘ফরেন বুক এজেন্সি’। একদিন কফি হাউসের আড্ডায় সত্যজিৎ রায় বললেন, তাঁর এক পরিচিত সাংবাদিক নিরঞ্জন মজুমদারের সঙ্গে কাল বইয়ের দোকানে দেখা হয়েছিল কিন্তু নিরঞ্জন কোনও কথা বলেননি মানিকদার সাথে। সবাই যখন জানতে চাইল কেন? সত্যজিৎ ভাবলেশহীন মুখে উত্তর দিলেন “ কি জানি, বোধহয় আমি ওর পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলাম বলে!” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সাংবাদিক নিরঞ্জন মজুমদার ছিলেন বেশ খর্বকায় আর সত্যজিৎবাবুর উচ্চতা ছ’ফুট।

যামিনী রায় নয় মানিকী রায়

sotyo 2

ADVERTISEMENT

‘সোনার কেল্লা’ ছবিতে ফেলুদার ড্রয়িং রুমে যামিনী রায়ের আঁকা একটা ছবি ছিল। জানেন কি যে ওটা আদৌ যামিনী রায়ের আঁকা নয়? ওটা এঁকেছিলেন স্বয়ং সত্যজিৎ রায়। সত্যজিৎ রায়কে এই প্রশ্ন করেছিলেন পার্থ বসু। উনি বলেছিলেন, “বাঃ কী সুন্দর ছবি যামিনী রায়ের।” ছবিতে ফিনিশিং টাচ দিতে দিতে সত্যজিৎ বললেন, “এটা মানিকী রায়ের ছবি!”

অপ্রস্তুত হয়ে গেলেন বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়

sotyo3

সত্যজিৎ রায় গাড়ি করে যাচ্ছেন প্রিটোরিয়া স্ট্রিট দিয়ে। দেখলেন অভিনেতা বিপ্লব চট্টোপাধ্যায় যাচ্ছেন প্রেমিকাকে (বর্তমানে স্ত্রী) নিয়ে। সেই সময় প্রিটোরিয়া স্ট্রিট ছিল খুব নির্জন। বিপ্লব প্রায় দেখতেই পেলেন না মানিকদাকে। অন্য একদিন ক্যামেরাম্যান সৌমেন্দু রায়, সত্যজিৎ ও বিপ্লব আসছেন অন্য একটা নির্জন রাস্তা দিয়ে। ভালোমানুষ মুখ করে সত্যজিৎ সৌমেন্দু রায়কে বললেন, “বিপ্লবকে এই রাস্তাটা ভালো করে চিনিয়ে দাও। এটাও বেশ নির্জন কিনা!” বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের মুখের কি অবস্থা হয়েছিল বুঝতেই পারছেন!

কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ হাসি গল্পে সত্যজিৎ

ADVERTISEMENT

Picture Courtsey: Satyajit Ray (Instagram) Satyajit Ray Society of Calcutta(FB)

POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!

   

02 May 2019

Read More

read more articles like this
good points

Read More

read more articles like this
ADVERTISEMENT