শীত পড়ে গেছে জাঁকিয়ে। আর বাঙালিদের আদিখ্যেতাও শুরু হয়ে গেছে। সক্কলে কেন যে এই সময়েই বিয়ে করতে চায় কে জানে। যাকগে সে তাদের ব্যাপার। আমাদের কাজ আমরা করি। বিশ্বজুড়ে এখন ডেসটিনেশান ওয়েডিং-এর হিড়িক চলছে। কারোরই আর নিজের জায়গায় বিয়ে করতে ইচ্ছে করছে না। তাহলে আর কি? সদলবলে চলো অন্য জায়গায়। এবার এই অন্য জায়গাটা নির্বাচন হবে কি করে? অবশ্যই আগে দেখতে হবে খরচ কত হবে। সবার পক্ষে তো ইতালির টাসকানি বা লেক কোমোতে যাওয়া সম্ভব নয়। নাচতে নাচতে এক কাঁড়ি লোক নিয়ে উমেদ ভবনেও যাওয়া সম্ভব নয়। তাহলে কি ডেসটিনেশান ওয়েডিং হবে না? হবে হবে। আমরা আছি কি করতে? আমাদের এই পশ্চিমবঙ্গেই আছে কয়েকটি সুন্দর জায়গা যেখানে গিয়ে দিব্যি বাজেটের মধ্যে ডেসটিনেশান ওয়েডিং করে নেওয়া যায়। বিয়েও হল আর বাড়ির লোকজনেরাও একটু অন্য জায়গায় গিয়ে শান্তি পেলেন। কোথায় কোথায় যাওয়া যায় বলুন দেখি? আসুন ঝট করে একবার চোখ বুলিয়ে নিয়।
আরও পড়ুনঃ বিয়ের পর হানিমুনে কী ধরনের ড্রেস নেবেন
শান্তিনিকেতন
এই মুহূর্তে ডেসটিনেশান ওয়েডিং-এর হটস্পট হচ্ছে শান্তিনিকেতন। কি কারণ? সকলেই কি রবি ঠাকুর আর তাঁর কবিতা ভালোবাসে? মোটেই না। শান্তিনিকেতনে শীত পড়ে জমিয়ে। চারদিকে গাছ গাছালি আর পাখ পাখালিতে ভরা। নানা রঙের ফুল ফোটে সেখানে। দিব্যি লাগে। তাছাড়া কলকাতা থেকে এই জায়গার দুরত্ত্বও বেশি নয়। গাড়িতে বা ট্রেনে চেপে ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে দিব্যি চলে যাওয়া যায়।
মালদা
বিয়ের সময় আপনার মনে যদি নবাবি নবাবি হাবভাব আসে তাহলে আরেকটু দূরে যেতে পারেন। যেমন ধরুন মালদা।তবে মালদা যেতে গেলে এক রাত্তির ট্রেনে থাকতে হবে। গাড়ি বা বাসে যাওয়ার সামান্য ধকল আছে। নবাবিয়ানার কথা কেন বললুম বলুন তো? এখানে আছে নবাবি ও সুলতানি আমলের প্রচুর সৌধ।যারা মস্ত মস্ত লেন্সওয়ালা ক্যামেরা নিয়ে ঘুরে বেরায় তাদের জন্য এই স্থান আদর্শ। লুকোচুরি দরজা থেকে ফিরোজ মিনারে নতুন বর বউয়ের ফটো সেশান দারুণ জমবে। ও হ্যাঁ বলতে ভুলে গেছি, মালদাতেও বেশ ভালোই শীত পড়ে।
মন্দারমনি
কি ভাবছেন? বেশি ঠাণ্ডা পছন্দ নয়? তাহলে সোজা চলে যান মন্দারমনি। সোনা রোদ ঝিকমিক/ দেখো বালু চিকচিক। আহা সমুদ্রের আছড়ে পরা ঢেউ, ঢেউয়ের গরজন, নোনা জলের স্বাদ আর চারদিকে ধুধু বালি। কি রোম্যান্টিক তাই না? এখানেও দিব্যি ডেসটিনেশান ওয়েডিং করা যেতে পারে। কলকাতা থেকে বেশি দূরও নয় এই জায়গাটা।
ডুয়ার্স
ও আচ্ছা বুঝেছি আপনার জঙ্গল চাই, চোখ জুড়নো সবুজ চাই আর তার সঙ্গে চাই আদিম বুনো একটা ব্যাপার। এসব ব্যাপার স্যাপার থাকলে তবেই না জমবে ডেসটিনেশান ওয়েডিং। আপনার জন্য আদর্শ হল ডুয়ার্স। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে সদলবলে এক রাত্তির ট্রেনে চাপতে হবে।তবে এখানে গেলে আপনার হাতে অপশানও অনেক বেশি থাকবে। চাপরামারি, সান্তালিখোলা, সামসিং, লাভা বা লোলেগাঁও জায়গার অভাব থাকবেনা।
এগুলো ছাড়াও বকখালি, রায়চক বা মুকুটমনিপুরেও বেশ ভালো ডেসটিনেশান ওয়েডিং হতে পারে। সেটা নির্ভর করবে আপনার কেমন জায়গা পছন্দ সেটার উপর।
ডেসটিনেশান ওয়েডিং করার আগে
আপনি চেনা জায়গা ছেড়ে অন্য জায়গায় যাচ্ছেন তাই এই ধরণের বিয়ের দায়িত্ব কোনও এজেন্সির হাতে দেওয়াই ভালো।
ট্রেন বা প্লেনের টিকিটের প্রয়োজন হলে সেটা আগে কেটে নেবেন। নাহলে বেশি দাম দিতে হবে।
অতিথি তালিকা সম্পূর্ণ হলে তবেই টিকিট কাটবেন।
বেশি দূরে না গিয়ে কাছাকাছির মধ্যে ভালো স্পট খুঁজুন, এতে খরচ কম হবে।
যে জায়গায় যাচ্ছেন সেখানকার বিষয়ে ভালো করে খোঁজ খবর নিয়ে নেবেন। চেনা পরিচিত কেউ থাকলে তার সাহায্য নিন।
এগুলোও আপনি পড়তে পারেন
ভারতবর্ষের কিছু উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্র
কলকাতার সেরা ওয়েডিং প্ল্যানার এর হদিশ
১৫টি বলিউড গান যা আপনার ককটেল পার্টির জন্য বেস্ট