একটা সময় ছিল যখন চোখের চারপাশে বলিরেখা বা হালকা হালকা দাগ দেখতে পাওয়া গেলে বলা হত যে বয়স হয়ে গেছে, কিন্তু এখন ত্বকে বলিরেখা পড়ার কোনও বয়স হয় না। পঁচিশ-ত্রিশ বছর বয়সেই অনেকের ত্বকে বলিরেখা দেখা যায় এবং তা বেশ স্পষ্ট। নানা কারণে বলিরেখা দেখা দিতে পারে। শুধু যে চোখের পাশেই Wrinkles বা বলিরেখা দেখা যায় তা কিন্তু নয়। ঠোঁটের পাশে, কপালে, এমনকি গলা বা ঘাড়েও বলিরেখা দেখা যায় অনেকেরই, বেশ অল্প বয়সেই। বলিরেখা দূর করে ত্বক টানটান ও মসৃণ করে তোলার জন্য অনেকেই নানারকমের বিউটি প্রোডাক্টের উপরে নির্ভর করেন, আবার কেউ কেউ ভরসা রাখেন ঘরোয়া চিকিৎসার উপরেই।
বলিরেখা দূর করার নানা ঘরোয়া চিকিৎসার (Home Remedies For Wrinkles) বিষয়ে আজ তো কথা বলবই, কিন্তু তার আগে জানা প্রয়োজন যে বলিরেখা কী এবং কী কী কারণে ত্বকে অকালে বলিরেখা দেখা দিতে পারে।
শরীরের কোন কোন অংশে বলিরেখা পড়ার আশঙ্কা বেশি থাকে
বলিরেখা দূর করার দশটি ঘরোয়া চিকিৎসা
বলিরেখা সংক্রান্ত কিছু জরুরি প্রশ্নোত্তর
বলিরেখা কাকে বলে? (What Are Wrinkles?)
কখনও খেয়াল করে দেখবেন যে ত্বকের কিছু কিছু অংশের চামড়া কুঁচকে যায়, এগুলোই Wrinkles বা বলিরেখা। ত্বকের স্বাভাবিক ইলাস্টিসিটি যখন নষ্ট হয়ে যায়, তখনই মুখে, গালে, গলায় বা ঘাড়ে চামড়া ঝুলে যায় এবং বলিরেখা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। মুখের চামড়া ঝুলে পড়া, চোখের পাশে এবং নীচের দিকে হালকা হালকা লাইন, হাত বা পায়ের চামড়া কুঁচকে যাওয়া কপালে এবং ঠোঁটের চারদিকে স্পষ্ট হয়ে ওঠা ভাঁজ – এসবই বলিরেখা পড়ার লক্ষণ।
বলিরেখা হওয়ার কারণ (What Causes Wrinkles?)
আমাদের বয়স হওয়ার সঙ্গেই ত্বকেরও বয়স বাড়ে এবং ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা কমতে শুরু করে। তবে এখন নানা কারণে অল্প বয়সেই আমাদের ত্বকে বলিরেখা পড়তে পারে –
- অত্যধিক দূষণ
- অনেকক্ষণ রোদে থাকা
- ঠিকভাবে ত্বকের যত্ন না নেওয়া
- ধূমপান
- ভিটামিন ডি-৩-এর অভাব
- অতিরিক্ত কসমেটিকস ব্যবহার করা
- ঘন ঘন বিউটি প্রোডাক্ট বদলানো
আমাদের শরীরের কোন কোন অংশে বলিরেখা পড়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি থাকে
এই প্রশ্নের খুব সহজ উত্তরটি হল, শরীরে যে যে অংশের ত্বক তুলনামূলকভাবে নরম সেখানে বলিরেখা পড়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। আমাদের শরীরে মুখের ত্বক সবচেয়ে বেশি নরম হয়, সুতরাং বুঝতেই পারছেন, মুখের ত্বকে বলিরেখা পড়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি থাকে। এছাড়াও
- চোখের চারপাশে ও নীচে
- ঠোঁটের চারপাশে
- কপালে
- ঘাড়ে
- গলায়
- হাতে ও পায়েও wrinkles পড়ে।
বলিরেখা দূর করার দশটি ঘরোয়া চিকিৎসা (Home Remedies For Wrinkles On Face)
বাজারচলতি নানা অ্যান্টি-রিঙ্কল ক্রিম বা ফেসপ্যাক ব্যবহার (Wrinkles Home Remedies) করতে পারেন ঠিকই, তবে এই প্রোডাক্টগুলোয় রাসায়নিকের পরিমাণ এতটাই বেশি থাকে যে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। হয়ত একটি সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করলেন কিন্তু ত্বকে আরও দশটি সমস্যা তৈরি হয়ে গেল। সেক্ষেত্রে ঠাকুমা-দিদিমার বলে যাওয়া ঘরোয়া চিকিৎসার উপরে (Home Remedies For Wrinkles) কিন্তু চোখ বন্ধ করে ভরসা রাখতে পারেন।
১। নারকেল তেল
নারকেল তেল শুধুমাত্র মাথায় মাখার কাজেই ব্যবহৃত হয় না, ত্বকের পরিচর্যায়ও নারকেল তেলের ব্যবহার বহুকাল ধরে চলে আসছে। নারকেল তেল বলিরেখা কমাতে (Wrinkle Treatment At Home) তো সাহায্য করেই, সঙ্গে ত্বক করে তোলে উজ্জ্বল এবং আর্দ্র। ফলস্বরূপ বলিরেখা হয় উধাও এবং ফিরেও আসে না।
কী কী উপকরণ প্রয়োজন – এক চা চামচ অরগানিক নারকেল তেল
কীভাবে ব্যবহার করবেন – নারকেল তেল নিয়ে চোখের চারপাশে, গলায়, ঠোঁটের চারপাশে ভাল করে মাসাজ করুন। একবার ক্লকওয়াইজ এবং একবার অ্যান্টিক্লকওয়াইজ মাসাজ করুন। সারা রাত রেখে দিন এবং পরদিন সকালে মাইল্ড কোনও ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
কতদিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে হবে – প্রতিদিন রাতে শুতে যাওয়ার আগে পাঁচ মিনিট মাসাজ করুন (Face Wrinkles Home Remedies), দেখবেন কিছুদিনের মধ্যেই বলিরেখার অত্যাচার থেকে মুক্তি পাবেন।
২। ভিটামিন ই ক্যাপসুল
ভিটামিন ই ত্বকের পরিচর্যায় দারুণ কাজ দেয়। যে-কোনও রকমের ত্বকের সমস্যার দ্রুত সমাধানে এই ঘরোয়া চিকিৎসাটি (Wrinkle Treatment At Home) কিন্তু খুবই জবরদস্ত! অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-এ সমৃদ্ধ ভিটামিন ই ক্যাপসুল ত্বকের আর্দ্রতাও বজায় রাখে; ফলে ত্বকের স্বাভাবিক ইলাস্টিসিটি বজায় থাকে এবং বলিরেখা পড়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না।
কী কী উপকরণ প্রয়োজন – একটি বা দুটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল
কীভাবে ব্যবহার করবেন – একটি ছোট্ট কাচের বাটিতে যতগুলো প্রয়োজন ততগুলো ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙে নিন। এবারে ক্যাপসুলের ভিতরের তেলটি বলিরেখাযুক্ত অংশে লাগিয়ে মিনিট দশেক আলতো হাতে মাসাজ করুন। খুব বেশি চাপ দেবেন না, তাতে ত্বকের চামড়া আরও বেশি কুঁচকে যেতে পারে। দু-তিন ঘন্টা ওভাবেই রেখে দিন। ভিটামিন ই অয়েল ত্বক শুষে নেবে।
কতদিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে হবে – প্রতিদিন রাতে (Face Wrinkles Home Remedies) শুতে যাওয়ার আগে করতে পারেন অথবা যে-কোনোও সময়ে যখন কোনও কাজ করবেন না।
৩। অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার
অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার ত্বকের পি এইচ ব্যাল্যান্স সঠিক করতে সাহায্য করে। তবে সরাসরি কখনওই ত্বকে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার লাগাবেন না, ত্বক জ্বলে যেতে পারে। মধু বা দই বা অ্যালো ভেরার সঙ্গে মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করতে পারেন বলিরেখা দূর করার জন্য।
কী কী উপকরণ প্রয়োজন – এক টেবিল চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার এবং এক টেবিল চামচ অরগানিক মধু
কীভাবে ব্যবহার করবেন – দুটি উপকরণই খুব ভাল করে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এবারে মুখে, গলায়, ঘাড়ে – যেখানে যেখানে বলিরেখা দেখা দিয়েছে সেখানে ওই পেস্ট (Home Remedies For Wrinkles On Face) লাগিয়ে রাখুন। মিনিট ২০ পর উষ্ণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। নরম পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে আলতো করে মুখ মুছে নিজের ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
কতদিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে হবে – বলিরেখা দ্রুত দূর করতে সপ্তাহে দু’বার করে এই ঘরোয়া চিকিৎসা ট্রাই করতে পারেন।
৪। ডিমের সাদা অংশ
নানা ব্র্যান্ডের নানা দামের অ্যান্টি-রিঙ্কল ক্রিম মাখার পরেও বলিরেখার সমস্যা থেকে মুক্তি পাননি? তাহলে বরং কমদামী ঘরোয়া চিকিৎসার উপরে (Natural Remedies For Wrinkles) ভরসা করুন একবার। ডিমের সাদা অংশ বলিরেখা এবং ফাইনলাইন দূর করতে খুবই কার্যকরী।
কী কী উপকরণ প্রয়োজন – একটি ডিমের সাদা অংশ
কীভাবে ব্যবহার করবেন – খুব ভাল করে ডিমের সাদা অংশটি ফেটিয়ে নিন যাতে একটা ক্রিম ক্রিমভাব তৈরি হয়। এবারে ওই ক্রিমটি একটি ব্রাশের সাহায্যে মুখে, গলায় এবং ঘাড়ে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে উষ্ণ জলে একটি তোয়ালে ভিজিয়ে মুছে নিন।
কতদিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে হবে – যদি বলিরেখা খুব বেশি হয় তাহলে সপ্তাহে দু’দিন করে এই ঘরোয়া ফেসমাস্ক ব্যবহার করুন (Face Wrinkles Home Remedies), অল্প বলিরেখা থাকলে সপ্তাহে একবার করে করুন।
৫। পেঁপে ও কলা
পেঁপের মধ্যে প্যাপাইন নামে একটি এনজাইম রয়েছে যা ত্বকের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখতে সাহায্য করে। অন্যদিকে কলায় রয়েছে নানা ভিটামিন, যা ত্বকে ভিতর থেকে পুষ্টি যোগায় এবং ত্বকের আর্দ্রতাও বজায় রাখে। তারুণ্য ধরে রাখতে এবং বলিরেখার সমস্যা দূর করতে পেঁপে ও কলার ফেসপ্যাক কিন্তু খুব ভাল কাজ দেয়।
কী কী উপকরণ প্রয়োজন – অর্ধেক পাকা কলা এবং কয়েক টুকরো পাকা পেঁপে
কীভাবে ব্যবহার করবেন – ব্লেন্ডারে পাকা কলা এবং পাকা পেঁপে ব্লেন্ড করে একটি স্মুদ পেস্ট তৈরি করুন। এবারে ত্বকের যে যে অংশে (চোখের চারপাশে, ঠোঁটের চারপাশে, গলায়, ঘাড়ে, কপালে) বলিরেখা দেখা দিয়েছে, সেখানে প্যাকটি (Natural Remedies For Wrinkles) লাগিয়ে নিন। আধঘন্টা চুপ করে বসে থাকুন। আধ ঘন্টা পর উষ্ণ জলে প্যাক ধুয়ে আলতো করে মুছে নিন। আপনার ত্বকের উপযোগী ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
কতদিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে হবে – বলিরেখার সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে পেঁপে ও কলার এই ফেসপ্যাকটি সপ্তাহে তিনবার করে লাগান।
৬। শশা
আগেই বলেছি wrinkles বা বলিরেখার অন্যতম কারণ হল ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা কমে গিয়ে ইলাস্টিসিটি নষ্ট হয়ে যাওয়া। কাজেই, বলিরেখা বা ফাইনলাইন দূর করতে শশার ফেসপ্যাক যে দারুণ একটু ঘরোয়া চিকিৎসা, সেকথা আশা করি আর বলতে হবে না। শশায় ৯৫%-ই জল, কাজেই ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে শশা দারুণ কাজ করে। এছাড়াও শশার মধ্যে রয়েছে নানা প্রাকৃতিক ভিটামিন ও খনিজ।
কী কী উপকরণ প্রয়োজন – একটি গোটা শশার রস
কীভাবে ব্যবহার করবেন – শশার খোসা ছাড়িয়ে ছোট ছোট টুকরো করে নিন। এবারে একটি চামচের সাহায্যে বীজ বার করে শশাটি ম্যাশ করে নিন। শশার রস বার করে যেখানে যেখানে বলিরেখা দেখা দিয়েছে লাগিয়ে নিন। কিছুক্ষন পর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন
কতদিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে হবে – প্রতিদিন শশার রস লাগালে খুব তাড়াতাড়ি বলিরেখা থেকে মুক্তি পাবেন।
৭। অ্যালো ভেরা
বেশিরভাগ সময়েই যেহেতু আমাদের মুখের ত্বকেই বলিরেখা পড়ে কাজেই অ্যালো ভেরা জেল যদি আপনি লাগান তাহলে বলিরেখা তো দূর হবেই (Anti Wrinkle Home Remedies), একইসঙ্গে ত্বক উজ্জ্বল, কোমল ও দাগ-ছোপহীনও হবে। তবে অ্যালো ভেরা জেল লাগানোর সময়ে একটি বিষয় মাথায় রাখবেন। কখনোই অ্যালো ভেরার পাতা থেকে জেল বার করে তা সরাসরি মুখে বা শরীরের কোনও অংশেই লাগাবেন না। এতে ত্বকে র্যাশ বেরতে পারে। চেষ্টা করুন কোনও আয়ুর্বেদিক কোম্পানির অ্যালো ভেরা জেল ব্যবহার করতে।
কী কী উপকরণ প্রয়োজন – এক টেবিল চামচ অ্যালো ভেরা জেল এবং একটি ডিমের সাদা অংশ
কীভাবে ব্যবহার করবেন – দুটি উপকরণই কাচের বাটিতে ঢেলে কাঠের চামচের সাহায্যে মিশিয়ে একটি স্মুদ পেস্ট তৈরি করে নিন। এবারে একটি মেকআপ ব্রাশের সাহায্যে বলিরেখাযুক্ত ত্বকে ওই পেস্ট লাগিয়ে নিন। মিনিট পাঁচেক মাসাজ করার পর শুকোতে দিন। ফেসপ্যাকটি শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। যদি ত্বক খুব শুস্ক মনে হয় তাহলে নিজের ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়শ্চারাইজার লাগাতে পারেন।
কতদিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে হবে – সপ্তাহে অন্তত দু’দিন এই প্যাক ব্যবহার করুন।
৮। পেট্রোলিয়াম জেলি
যেহেতু ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা নষ্ট হয়ে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার ফলে বলিরেখার সমস্যা বেশি দেখা যায়, কাজেই এমন কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা (Anti Wrinkle Home Remedies) যদি করা যায়, যাতে ত্বকের আর্দ্রতা নষ্ট হবে না, তাহলে তার থেকে ভাল আর কিছুই হয় না। পেট্রোলিয়াম জেলি একদম সেই কাজটিই করে। অর্থাৎ, পেট্রোলিয়াম জেলি ত্বকের ময়শ্চার লোক করে ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। আপনি চাইলে ভ্যাজলিন অথবা যে-কোনও রেগুলার পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে পারেন ত্বকের চামড়া টানটান করে তোলার জন্য।
কী কী উপকরণ প্রয়োজন – ভ্যাজলিন অথবা যে-কোনও পেট্রোলিয়াম জেলি
কীভাবে ব্যবহার করবেন – ভাল করে ফেশওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে যতটা প্রয়োজন পেট্রোলিয়াম জেলি নিয়ে মাসাজ করুন। ত্বকের যেখানে বলিরেখা রয়েছে সেখানে তো বটেই, এছাড়াও গোটা মুখেও মাসাজ করতে পারেন। তবে হ্যাঁ, আলতো হাতে মাসাজ করবেন। মিনিট পাঁচেক মাসাজ করলেই দেখবেন যে ত্বকে পেট্রোলিয়াম জেলি বসে গেছে।
কতদিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে হবে – প্রতিদিন শুতে যাওয়ার আগে পেট্রোলিয়াম জেলি দিয়ে মাসাজ করুন, মাসখানেকের মধ্যেই দেখবেন বলিরেখা কতটা কমে গেছে।
বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ : যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত এবং অ্যাকনের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা বলিরেখা দূর করার ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে এই টোটকাটি একদম ট্রাই করবেন না।
৯। শিয়া বাটার
পেট্রোলিয়াম জেলির মতো, শিয়া বাটারও ত্বকে ময়শ্চার লোক করে একে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও ত্বকের স্বাভাবিক ইলাস্টিসিটি ধরে রেখে ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে (Home Remedies For Wrinkles On Face)।
কী কী উপকরণ প্রয়োজন – এক চা চামচ অরগানিক শিয়া বাটার
কীভাবে ব্যবহার করবেন – যেখানে যেখানে বলিরেখা বা Wrinkles রয়েছে সেখানে সার্কুলার মোশনে শিয়া বাটার মাসাজ (Anti Wrinkle Home Remedies) করুন। মিনিট দশেক মাসাজ করে রেখে দিন। মুখ ধোওয়ার দরকার নেই।
কতদিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে হবে – স্নানের পর একবার এবং রাতে শুতে যাওয়ার আগে একবার, দিনে দুবার করে প্রতিদিন শিয়া বাটার দিয়ে মাসাজ করলে খুব তাড়াতাড়ি বলিরেখা দূর হয়।
১০। অ্যাস্পিরিন
অ্যাস্পিরিনে রয়েছে acetylsalicylic অ্যাসিড যা আমাদের ত্বকের বড় ও খোলা লোমকূপগুলোকে পরিষ্কার করে এবং আকারে ছোট হতে সাহায্য করে।
কী কী উপকরণ প্রয়োজন – দশটি অ্যাস্পিরিন ট্যাবলেট, পরিমাণমতো জল
কীভাবে ব্যবহার করবেন – একটি কাচের বাটিতে ট্যাবলেট ভেঙে গুঁড়ো করে নিন। এবারে পরিমাণমতো জল মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। মুখে, গলায়, কপালে, ঘাড়ে যেখানে বলিরেখা ও ফাইনলাইন রয়েছে সেখানে ওই পেস্টটি লাগিয়ে নিন। ১৫ মিনিট পর ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন এবং শুকনো করে মুছে নিজের ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়শ্চারাইজার লাগান।
কতদিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে হবে – সপ্তাহে একবার করলেই যথেষ্ট।
বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ : যাঁদের ত্বক রুক্ষ ও শুষ্ক, তাঁরা বলিরেখা দূর করার ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে এই টোটকাটি একদম ট্রাই করবেন না।
বলিরেখা সংক্রান্ত কিছু জরুরি প্রশ্নোত্তর (FAQs)
১। বেশি হাসলে কি চোখের চারপাশে বলিরেখা পড়তে পারে?
উত্তর – এই প্রশ্নটিই অবান্তর! বলিরেখা পড়তে পারে, এই ভয়ে যদি আপনি নিজের আবেগ প্রকাশ করা বন্ধ করে দেন, তাহলে বাঁচবেন কীভাবে? আর বেশি হাসলে বলিরেখা পড়ে, এমন ধারণা সম্পূর্ণভাবে ভ্রান্ত। সঠিকভাবে ত্বকের পরিচর্যা ও জীবনযাত্রা করলে (ঠিক সময়ে ঘুমানো, সঠিক ডায়েট মেনে চলা, ধূমপান না করা ইত্যাদি) বলিরেখা পড়ার আশঙ্কা অনেকটাই কম হয়।
২। খাদ্যাভ্যাসে কোনও পরিবর্তন এনে কি বলিরেখা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়?
উত্তর – নিশ্চয়ই। ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার যেমন পেঁপে, পালং শাক, গাজর, সোয়াবিন, মাছ ইত্যাদি বেশি করে খান। প্রচুর পরিমাণে জল এবং জলীয় খাবার খান সারাদিন ধরে। গ্রিন টি খেতে পারেন। ফাইবারযুক্ত খাবার খান। বেশি তেল-মশলাযুক্ত খাবার, ভাজা, প্রসেস করা খাবার না খাওয়াই ভাল। এতে ত্বকের তারুণ্য বজায় থাকে।
৩। বলিরেখা দূর করতে কি ফেসিয়াল এক্সারসাইজ কোনও কাজে আসে?
উত্তর – হ্যাঁ, ফেসিয়াল এক্সারসাইজ অবশ্যই বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে, তবে তা নিয়মিত করা উচিত এবং বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আমাদের এক্কেবারে নতুন POPxo Zodiac Collection মিস করবেন না যেন! এতে আছে নতুন সব নোটবুক, ফোন কভার এবং কফি মাগ, যেগুলো দারুণ ঝকঝকে তো বটেই, আর একেবারে আপনার কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে। হুমম…আরও একটা এক্সাইটিং ব্যাপার হল, এখন আপনি পাবেন ২০% বাড়তি ছাড়ও। দেরি কীসের, এখনই POPxo.com/shopzodiac-এ যান আর আপনার এই বছরটা POPup করে ফেলুন!
Image Source: Instagram, Shutterstock
এগুলোও আপনি পড়তে পারেন
ন্যাচারালি শার্প জ-লাইন চাইলে করতেই হবে ফেসিয়াল এক্সারসাইজ
ত্বকের নানা সমস্যার সমাধানে রইল দারুণ কিছু ক্লে মাস্কের হদিশ