প্রতিদিন এক্সারসাইজ করা যে শরীরের পক্ষে ভাল, সেকথা আমরা সকলেই জানি এবং কখন এক্সারসাইজ করা উচিত তা-ও জানি। তবে গর্ভাবস্থায় কোন ব্যায়াম করা উচিত, তা নিয়ে নানা মুনির নানা মত! আগেকার দিনে মা-ঠাকুরমারা গর্ভাবস্থায় ঘরের কাজ করতেন। ফলে কাজের মাধ্য়মেই যোগ ব্যায়াম করা হয়ে যেত এবং তার উপকারিতাও পেতেন তাঁরা! খেয়াল করে দেখবেন, বেশিরভাগ সময়েই তাঁদের নর্মাল ডেলিভারি হত। ইদানীং, ঘরের কাজ বেশিরভাগটাই নানা আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে হয়ে যায়। ফলে আমরা জিমে গিয়ে ব্যায়াম করি। তবে সাধারণ সময়ে যেরকম এক্সারসাইজ করা যায়, গর্ভাবস্থায় কিন্তু সেরকম ব্যায়াম একেবারেই চলে না। কীরকম ব্যায়াম করলে pregnancy-তে সমস্যাও হবে না আবার উপকারও পাওয়া যাবে, চলুন তা জেনে নেওয়া যাক।
জেনে নিনঃ প্রেগন্যান্সি স্ট্রেচ মার্ক দূর করার ঘরোয়া উপায়
Pregnancy–তে এই পাঁচ রকমের ব্যায়াম করতে পারেন
গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম যখন করবেন, চেষ্টা করবেন মেশিনের সাহায্যে না করতে এবং যতটা সম্ভব ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে। আপনি সহজ কিছু যোগ ব্যায়াম করতে পারেন, সকাল-বিকেল হাঁটতে পারেন, সাঁতার কাটতে পারেন অথবা অ্যারোবিক্স করতে পারেন; তবে হ্যাঁ ব্যায়াম করার সময়েও কিন্তু কিছু সেফটি টিপস মেনে চলতে হবে।
১। সাঁতার
সাঁতার হল এমন এক প্রকার ব্যায়াম, যাতে গোটা শরীরের মাংসপেশি সচল হয় এবং গোটা শরীরেই তার প্রভাব পড়ে। আপনি গর্ভাবস্থায় নিয়মিত সাঁতার কাটতে পারেন নিজেকে সচল রাখার জন্য।
সেফটি টিপস: যখন সাঁতার কাটবেন তখন এমন কোনও মুভমেন্ট বা স্ট্রোক করবেন না যাতে আপনার পেটে, কোমরে, ঘাড়ে বা হাঁটুতে চাপ পড়ে। প্রয়োজনে পুলের রেলিং ধরে হাঁটুন এবং ডুব সাঁতার কিন্তু একদম চলবে না এসময়।
২। ব্রিস্ক ওয়াকিং
অনেকেই pregnancy প্ল্যান করার আগে থেকেই নানা ব্যায়াম করেন। আপনিও যদি সেরকম একজন হন তা হলে তো খুবই ভাল। কিন্তু যদি ঠিক উল্টোটা হয় অর্থাৎ এক্সারসাইজ করতে আপনার এতটুকুও ভাল লাগে না, সেক্ষেত্রে আপনি সকাল-বিকেল হাঁটতে পারেন। অন্তত আধ ঘণ্টা হাঁটুন।
সেফটি টিপস: সূর্যের তাপ বাড়ার আগে অর্থাৎ সম্ভব হলে ভোরবেলা এবং সূর্য ডোবার পরেই হাঁটতে যান। হাঁটার জন্য ভিড়ভাট্টার জায়গা এড়িয়ে চলুন। এবড়ো-খেবড়ো রাস্তায় হাঁটবেন না। সম্ভব হলে এমন কোথাও হাঁটুন যেখানে অনেক গাছপালা আছে।
৩। এরোবিক্স
হার্ট এবং ফুসফুস সুস্থ রাখার জন্য এবং মাসল টোন-ডাউন করার জন্য এরোবিক্স খুব ভাল একটা ব্যায়াম। কিন্তু যেহেতু আপনি pregnancy-তে বেশি লাফালাফি করতে পারবেন না, তাই হালকা-ফুলকা এরোবিক্স করতে পারেন। এতে লাফানো, হাই কিক, দৌড়োনো, এসব থাকে না। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য স্পেশ্যাল এরোবিক্স ক্লাসের ব্যবস্থাও আছে অনেক জায়গায়। আপনি চাইলে সেখানেও ভর্তি হতে পারেন।
সেফটি টিপস: এমন এরোবিক্সও করবেন না যাতে শরীরের উপরে, বিশেষ করে পেটে চাপ পড়ে।
৪। যোগ ব্যায়াম
শরীরের ফেলিক্সিবিলিটি বাড়ানো জন্য এবং তা ধরে রাখার জন্য যোগ ব্যায়াম খুব ভাল। তা ছাড়া যোগ ব্যায়াম করলে শুধু শরীর না, মনও শান্ত থাকে। যোগব্যায়াম করলে রক্ত চলাচল ভাল হয়, মাংসপেশি মজবুত হয় এবং শরীর রিল্যাক্সড থাকে। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় যোগ ব্যায়াম করেন, তা হলে আপনার শরীরের রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
আরো পড়ুনঃ পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমের লক্ষণ ও চিকিৎসা
সেফটি টিপস: এমন কোনও যোগব্যায়াম করবেন না, যাতে আপনার ব্যালান্স হারানোর সম্ভাবনা থাকে। বাটারফ্লাই বা ইউটেরাসকে মজবুত করতে সাহায্য করে এরকম এক্সারসাইজই করুন।
৫। স্কোয়াটস
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রসবের প্রস্তুতিতে স্কোয়াটস-এর চেয়ে ভাল এক্সারসাইজ আর নেই। কারণ, এই ব্যায়াম আপনার পেলভিস খুলতে এবং ফ্লেক্সিবল করতে সাহায্য করে। দেওয়ালে হেলান দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ান, এবারে আস্তে-আস্তে দেওয়ালের সাহায্য নিয়েই নীচের দিকে বসার চেষ্টা করুন ঠিক যেন একটা অদৃশ্য চেয়ারে বসছেন, এভাবে! ৩০-৪০ সেকেন্ড থাকুন এবং আবার আস্তে-আস্তে দেওয়ালের সাহায্য নিয়েই সোজা হয়ে দাঁড়ান। এর ফলে আপনার পেলভিক মাসল মজবুত হয় এবং আপনার কোমর, হাটু এবং গোড়ালিতেও শক্তি বাড়ে।
সেফটি টিপস: স্কোয়াটস শুনতে যতটা সহজ মনে হচ্ছে, এই ব্যায়ামটি কিন্তু অতটাও সহজ নয়, বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের পক্ষে মেঝেতে বসাটা বেশ কঠিন। কাজেই ট্রেনারের সাহায্য নিয়ে তবেই এই ব্যায়ামটি করুন।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এগুলোও আপনি পড়তে পারেন
ঘরোয়া পদ্ধতিতে দূর করুন মর্নিং সিকনেস
প্রেগন্যান্সি পিরিয়ডে কীভাবে ভালো থাকবেন ওয়ার্কিং মহিলারা
গর্ভবতী মহিলারা কি ধরনের পোশাক পরবেন
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!