সেই ১৯৫০ সাল থেকে ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই তেলের ব্যবহার হয়ে আসছে। কারণ, এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আরও সব উপকারী উপাদান ত্বকের ভিতরে জমে থাকা টক্সিক উপাদানগুলিকে শরীর থেকে বের করে দেয়। সঙ্গে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে এবং জেল্লা বাড়তেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে এখানেই শেষ নয় ত্বকের যত্নে আরও নানাভাবে এই তেল কাজে আসে। আর যদি সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়া যায়, তা হলে শরীরেরও নানা উপকার হয়। যেমন ধরুন, হার্টের ক্ষমতা বাড়ে, ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ব্রেনের ক্ষমতা বাড়ে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও কিছু ক্ষেত্রে ভিটামিন ই (Benefits of Vitamin E Capsule In Bengali) বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তা হলে বুঝতেই পারছেন ভিটামিন ই তেল কতটা উপকারী।
ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই তেলকে কাজে লাগালে যে-যে উপকার মেলে
চুলের যত্নেও ভিটামিন ই ক্যাপসুল বিশেষ ভূমিকা নেয়
চুলের যত্নে কীভাবে কাজে লাগাতে হবে ভিটামিন ই তেলকে?
ভিটামিন ই তেল সম্পর্কিত সাধারণ কিছু প্রশ্নের উত্তর
ভিটামিন ই ক্যাপসুল কিনে এনে ট্যাবলেটটা (Vitamin E Capsule) ফাটিয়ে তার মধ্যে থাকা তেলটা সংগ্রহ করে নিতে হবে। তারপর সেটা মুখে লাগালেই কেল্লা ফতে! এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল যে, ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই তেলকে কাজে লাগালে যতটা উপকার পাওয়া যায়, ততটাই উপকার মেলে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার খেলেও। এই ভিটামিনটির সন্ধান মেলে বাদাম, অ্যাভোকাডো, পালং শাক, সি ফুড এবং বেশ কিছু ফলে। এই সব খাবার নিয়মিত খেলে শরীর নিয়ে চিন্তা তো থাকবেই না, ত্বকের জেল্লাও বাড়বে চোখে পড়ার মতো।
POPxo Recommends: Virateck Vitamin E Capsules
রক্তে টক্সিক উপাদানের মাত্রা বাড়লে যেমন বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে, তেমনই ত্বকের ভিতরে free radicals জমতে শুরু করলে ত্বকের সৌন্দর্য একেবারে তলানিতে এসে ঠেকে। লেজুড় হয় বলিরেখাও। ফলে অসময়ে ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তো বাড়েই। সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্যও কমে চোখে পড়ার মতো। এই Free Radicals বা টক্সিক উপাদানগুলিকে নিমেষে ধ্বংস করে ভিটামিন ই তেল (Vitamin E Oil for Skin)। তাই তো ত্বকের যত্নে এই তেলকে কাজে লাগালে একাধিক উপকার পাওয়া যায়। যেমন ধরুন...
সারা বছরই কি ড্রাই স্কিনের সমস্যায় ভোগেন? তা হলে ত্বকের যত্নে আজ থেকেই কাজে লাগান ভিটামিন ই তেলকে (Vitamin E Oil)। তাতে উপকার মিলবে হাতে-নাতে! রাতে শুতে যাওয়ার আগে কয়েক ফোঁটা ভিটামিন ই তেল নিয়ে তার সঙ্গে অল্প করে ময়শ্চারাইজার অথবা অলিভ অয়েল মিশিয়ে ভাল করে মালিশ করুন। প্রতিদিন এভাবে ত্বকের যত্ন নিলে ত্বকের পুষ্টির ঘাটতি মিটবে, সঙ্গে বাড়বে আর্দ্রতাও। ফলে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়তে দেখবেন সময়ই লাগবে না।
ভিটামিন ই তেল মুখে লাগিয়ে সার্কুলার মোশনে মালিশ করলে ত্বকের ভিতরে কোলাজেনের মাত্রা বাড়ে। সঙ্গে Fiber-Like Protein-এর পরিমাণও বাড়তে শুরু করে, যে কারণে ত্বকের ইলাস্টিসিটি এতটাই বেড়ে যায় যে, বলিরেখা নিমেষে উধাও হয়ে যায়। ফলে কমে ত্বকের বয়স। বাড়ে জেল্লাও। তাই তো বলি, খাতায় কলমে শরীরের বয়স বাড়লেও ত্বকের বয়স এক কাঁটাও না বাড়ুক, এমনটা যাঁদের ইচ্ছে, তাঁর ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই তেলকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন!
প্রেগন্যান্সির পরে স্ট্রেচ মার্ক নিয়ে যারা চিন্তায় রয়েছেন, তাঁরা ঝটপট ভিটামিন ই তেল ব্যবহার করতে শুরু করুন। দেখবেন, উপকার পাবেন হাতে-নাতে। একটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল নিয়ে পিনের সাহায্যে ফুটো করে তেলটা সংগ্রহ করে নিন। এবার সেই তেলটা স্ট্রেচ মার্কের উপর লাগিয়ে কম করে মিনিটপাঁচেক ভাল করে মালিশ করুন। প্রতিদিন এমনটা করলে নতুন কোষের উৎপাদন বাড়বে। ফলে স্ট্রেচ মার্ক মিলিয়ে যেতে সময় লাগবে না।
আরও পড়ুন: ত্বকের জেল্লা বাড়ান বিটরুটের গুণে
প্রতিদিন রাতে শুতে যাওয়ার আগে হাতের তালুতে কয়েক ফোঁটা ভিটামিন ই তেল নিয়ে যদি মুখে (Vitamin E Oil for Face) লাগিয়ে মালিশ করা যায়, তা হলে যে-কোনও ধরনের দাগ মিলিয়ে যায় নিমেষে! উধাও হয় ব্রণর দাগও। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শরীরে আরও কোথাও দাগ থাকলে সেখানেও যদি ভিটামিন ই তেল লাগিয়ে মালিশ করা যায়, তা হলে উপকার মিলতে পারে।
এই গরমে ছাতা ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরলেই বিপদ! কারণ, সূর্যের যা তাপ, তাতে ত্বক পুড়ে কালো হয়ে যেতে সময় লাগে না। আর এমনটা হলে স্বাভাবিক ভাবেই দেখতে বেশ খারাপ লাগে। কমে সৌন্দর্যও। তাই তো সারা গরমকাল জুড়ে মুখে এবং হাতে ভিটামিন ই তেল লাগিয়ে মালিশ করতে হবে। তাতে পোড়া ভাব কমবে। বাড়বে ত্বকের জেল্লাও। ভিটামিন ই তেলে (Vitamin E Oil) রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বকের উপরে যাতে অতি বেগুনি রশ্মির খারাপ প্রভাব না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখে। ফলে ত্বকের হারিয়ে যাওয়া জেল্লা ফিরে আসতে সময় লাগে না। এত উপকার পেতে নিয়মিত তিনটে ক্যাপসুল থেকে সংগ্রহ করা তেল, হাতে, মুখে এবং গলায় লাগিয়ে ভাল করে মালিশ করতে হবে।
মুখে জমে থাকা ময়লা এবং নানা ক্ষতিকর উপাদান ধুয়ে ফেলতে ভিটামিন ই তেলের কোনও বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে একটা তুলোয় দু-তিন ফোঁটা ভিটামিন তেল ফেলে ভাল করে মুখে ঘষুন। দিনে দু'বার এই ভাবে মুখ পরিষ্কার করলে জেল্লা তো বাড়বেই, সঙ্গে ত্বকের ভিতরে তেলের ভারসাম্য ঠিক থাকার কারণে কোনও ধরনের ত্বকের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও আর থাকবে না।
মুখে যে ক্রিম লাগান, তার সঙ্গে দু-তিন ফোঁটা ভিটামিন ই তেল মিশিয়ে চোখের তলায় লাগাতে হবে। টানা ২-৩ দিন লাগালেই দেখবেন উপকার মিলবে। হাতের কাছে কোনও ক্রিম না থাকলে শুধু ভিটামিন ই তেলও লাগাতে পারেন। তাতেও কিন্তু সমান উপকার পাওয়া যাবে।
মানুষের উপর এখনও পরীক্ষিত না হলেও ইঁদুরের উপর করা বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাব কমানোর মধ্যে দিয়ে স্কিন ক্যান্সারের মতো রোগকে দূরে রাখতে ভিটামিন ই তেল (Vitamin E Oil) বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে যদিও আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে বাড়ি থেকে বেরনোর আগে সানস্ক্রেনে যদি তিন-চার ফোঁটা ভিটামিন ই তেল ফেলে সেই মিশ্রণ মুখে লাগানো যায়, তা হলে অতি বেগুনি রশ্মির কারণে ত্বকের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না।
আরও পড়ুন: কাঁচা হোক বা পাকা, রূপচর্চায় এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য পেঁপে কিন্তু দারুণ উপকারী
অল্প দিনেই চুলের জেল্লা বাড়াতে চাইলে ভিটামিন ই তেল (Vitamin E for Hair) লাগিয়ে মালিশ করতে ভুলবেন না যেন! কারণ, এই তেল নিমেষে স্ক্যাল্প এবং চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। ফলে নানা উপকার পাওয়া যায়। যেমন...
দু-তিনটে Vitamin E capsule থেকে সংগ্রহ করা তেলের সঙ্গে সম পরিমাণে নারকেল তেল, নয়তো অলিভ অয়েল মিশিয়ে সেই মিশ্রণটি চুলে এবং স্ক্যাল্পে লাগিয়ে মিনিট পাঁচেক মাসাজ করুন। এর পরে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে হালকা গরম জল দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এক দিন অন্তর একদিন যদি এই ভাবে তেল মালিশ করা যায়, তা হলে ভিটামিন ই তেলে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কারণে চুলের গোড়ায় রক্তের প্রবাহ বেড়ে যাবে, যে কারণে চুল পড়ার হার কমে। বাড়ে চুলের ঘনত্বও।
অনেক সময় স্ট্রেসের কারণে তো বটেই। সেই সঙ্গে থাইরয়েড রোগের কারণে, ভিটামিন বি-১২-এর ঘাটতি হলে এবং মাত্রাতিরিক্ত স্মোকিং করলেও অসময়ে চুল পেকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে এমন পরিস্থিতি থেকে নিজেকে দূরে রাখা সম্ভব। কীভাবে? নিয়মিত ভিটামিন ই তেল (Vitamin E Oil) চুলে লাগাতে হবে, তা হলেই ফল মিলবে হাতে-নাতে।
বেশি মাত্রায় হেয়ার ড্রায়ার এবং কেমিক্যাল ভর্তি প্রসাধনী ব্যবহার করলে অনেক সময় চুলের গোড়া ফেটে যেতে পারে। এক্ষেত্রে একটা পাত্রে তিন ফোঁটা করে অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, জোজোবা তেল এবং ভিটামিন ই তেল নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই মিশ্রণটা একটু গরম করে নিয়ে সারা চুলে লাগিয়ে মিনিটেপাঁচেক মালিশ করুন। নিয়মিত এমনটা করলে চুলের গোড়া ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা যেমন কমবে, তেমনই চুলের জেল্লাও বাড়বে।
আরও পড়ুন: পার্লার নয়, বাড়িতে নিজেই কোনও হিট ছাড়াই সহজে চুল কার্ল করে নিন
নিয়মিত স্ক্যাল্পে ভিটামিন ই তেল লাগিয়ে মালিশ করলে একদিকে যেমন ড্রাই স্ক্যাল্পের সমস্যা দূর হয়, তেমনই sebaceous glands থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণে তেলের ক্ষরণ হতে থাকে। ফলে খুশকির প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। সপ্তাহে দু’বার ভিটামিন ই তেল দিয়ে তৈরি হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করলেও সমান উপকার পাওয়া যায়।
Vitamin E Capsule থেকে তেলটা সংগ্রহ করে কখনও নারকেল তেল, তো কখনও অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে যেমন চুলে লাগাতে পারেন, তেমনই বাজার চলতি যে সব তেলে ভিটামিন ই তেল রয়েছে, তা ব্যবহার করলেও সমান উপকার পাওয়া যায়। ভিটামিন ই তেল চুলে এবং স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ভাল করে মালিশ করতে হবে। তারপর চিরুনি দিয়ে চুলটা আঁচড়ে নিয়ে মিনিটপনেরো অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে হালকা গরম জল দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে।
১| একজিমার চিকিৎসাতেও নাকি ভিটামিন ই তেল দারুণ কাজে আসে?
যেখানে একজিমা হয়েছে, সেখানে দিনে দু'বার এই তেল লাগালে রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। এমনকী, সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের রোগের চিকিৎসাতেও ভিটামিন ই তেল (Vitamin E Oil) কাজে আসে।
২| আগুনে হালকা পুড়ে যাওয়ার পরে সেখানে ভিটামিন ই তেল লাগালে নাকি উপকার মেলে?
একেবারেই! তুলোতে অল্প করে ভিটামিন ই তেল (Vitamin E Oil) নিয়ে যে জায়গাটা পুড়ে গেছে সেখানে এই তেল লাগালে দারুণ উপকার মেলে।
৩| ভিটামিন ই তেল কি সরাসরি ত্বকে লাগানা যায়?
অবশ্যই লাগানো যায়। নিয়মিত এই তেল (Vitamin E Oil for Face) মুখে লাগিয়ে মালিশ করতেও পারেন।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!