Combination Skin
শুষ্ক, তৈলাক্ত বা সাধারন ত্বকের ধরন যাই হোক, ত্বকের যত্ন নিন ৭০টি বিউটি টিপস-এর সাহায্যে!
আমাদের এক-একজনের ত্বক এক-এক রকমের হয় আর সব ধরনের ত্বকের যত্নের পদ্ধতিও আলাদা-আলাদা হয়। তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন আপনি যেভাবে নেবেন, যদি কারও শুষ্ক ত্বক হয়, তা হলে তার ত্বকের যত্ন নিশ্চয়ই তিনি সেভাবে নেবেন না! আবার প্রতি ত্বকের জন্য দৈনন্দিন রুটিনও আলাদা হয়, সঙ্গে স্কিন কেয়ার এবং বিউটি প্রোডাক্টও! কোন ধরনের ত্বকের জন্য কেমন যত্ন হওয়া উচিত জেনে নিন এই beauty tips-এর মাধ্যমে।
Table of Contents
- তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন কীভাবে নেবেন (Skincare Routine for Oily Skin)
- শুষ্ক ত্বকের যত্ন কীভাবে নেবেন (Skincare Routine for Dry Skin)
- কম্বিনেশন ত্বকের যত্ন কীভাবে নেবেন (Skincare Routine for Combination Skin)
- সংবেদনশীল ত্বকের যত্ন কীভাবে নেবেন (Skincare Routine for Sensitive Skin)
- ঝটপট ত্বক জেল্লাদার করার জন্য পাঁচটি ঘরোয়া ফেসপ্যাক (5 Best Homemade Face Pack for Glowing Skin)
- নানা ধরনের ত্বকের যত্ন সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর (FAQs)
আরো পড়ুনঃ রূপচর্চায় এবং সুস্বাস্থ্যে পেঁপের দারুণ উপকারীতা
তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন কীভাবে নেবেন (Skincare Routine for Oily Skin)
যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত, তাঁদের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে আমাদের মতো গ্রীষ্মপ্রধান দেশে তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন নেওয়াটা একটা ঝকমারি। তবুও ত্বক বাইরে থেকে সুন্দর দেখানোর জন্য কিন্তু তার যত্ন নেওয়াটা প্রয়োজন। কীভাবে তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন নেবেন জেনে নিন…
তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে প্রতিদিনের অভ্যাস (Daily Skin Care for Oily Skin)
১। ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই খুব ভালভাবে মুখ ধুতে হবে। যেহেতু সারা রাত ধরে ত্বকের উপরে তেলের একটা স্তর পড়ে যায় কাজেই তা দূর করা প্রয়োজন। শুধু জল দিয়ে মুখ ধুলে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর হয় না, কাজেই জেল-বেসড অথবা ফোম-বেসড ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন। যেমন ফেসওয়াশই ব্যবহার করুন না কেন, তা যেন অয়েল-ফ্রি হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। যাঁদের তৈলাক্ত ত্বক, তাঁরা অনেকেই সাবান ব্যবহার করেন মুখ পরিষ্কার করার সময়। এই কাজটি ভুলেও করবেন না; এতে ত্বকের স্বাভাবিক অয়েল ব্যালান্স ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে এবং ভবিষ্যতে ত্বকের ক্ষতি হয়।
২। যখনই বাইরে বেরবেন তার অন্তত ১৫ মিনিট আগে সানস্ক্রিন লাগিয়ে তবেই বেরন। ক্রিম-বেসড সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন না, জেল-বেসড সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। এর ফলে আপনার ত্বক সূর্যের ক্ষতিকর ইউ ভি রশ্মি থেকে রক্ষা পাবে এবং তার সঙ্গেই আপনার ত্বক গ্রিসি বা চিটচিটে হয়ে উঠবে না, বরং একটা ম্যাট লুক আসবে।
৩। বাইরে থাকাকালীনও দু’-একবার ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন। এবং দিনের বেলা হলে সানস্ক্রিন লাগিয়ে নিন
৪। বাড়ি ফিরেও আপনাকে আবার ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে হবে তার কারণ বাইরের ধুলো, ধোঁয়া, ময়লা সবই আপনার ত্বকে ইতিমধ্যেই লেগে গিয়েছে এবং ত্বক তৈলাক্ত হওয়ার কারণে বাইরের দূষণ ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতেও কোনও সমস্যা হয় না। ফলে ফেসওয়াশ করাটা খুব প্রয়োজন। আপনি যদি মেকআপ ব্যবহার করেন তাহলে প্রথমে কোনও ওয়াটার-বেসড মেকআপ রিমুভার দিয়ে মেকআপ তুলে তারপরে ফেসওয়াশ করবেন।
৫। ফেসওয়াশ করা হয়ে গেলে টোনার লাগাতে কিন্তু ভুলবেন না। অ্যালকোহল রয়েছে এমন টোনার কিন্তু তৈলাক্ত ত্বকে একদমই ব্যবহার করা চলবে না।
৬। রাতে শোওয়ার আগে ময়শ্চারাইজার লাগাতে ভুলবেন না। অনেকেরই একটি ভুল ধারণা রয়েছে ত্বক যদি তৈলাক্ত হয় তাহলে ময়শ্চারাইজার না ব্যবহার করলেও চলে – একথা সম্পূর্ণ ভুল! অয়েল-ফ্রি, ওয়াটার-বেসড কোনও ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন, যেহেতু আপনার ত্বক তৈলাক্ত।
তৈলাক্ত ত্বকে মেকআপ করার সময় কী-কী বিষয় খেয়াল রাখবেন (Makeup Tips for Oily Skin)
১। মেকআপ করার সময়ে সবার প্রথমেই প্রাইমার লাগিয়ে নেওয়া খুব প্রয়োজন, তা সে আপনার যদি তৈলাক্ত ত্বক হয় সেক্ষেত্রেও! প্রাইমার যদি আপনার কাছে না থাকে তাহলে আপনি ওয়াটার-বেসড কোনও ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
২। মেকআপ করার সময় একটা বিষয় অতি অবশ্যই মাথায় রাখবেন, তৈলাক্ত ত্বকে কিন্তু খুব বেশি মেকআপ দেখতে ভাল লাগে না, যত কম প্রোডাক্ট ব্যবহার করা যায় তত দেখতে ভাল লাগে।
৩। ফাউন্ডেশনের বদলে আপনি কনসিলার অথবা বি বি/সি সি ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। কারণ ফাউন্ডেশনের তুলনায় এই দুটো প্রোডাক্টে তৈলাক্ত ভাব অনেক কম থাকে।
৪। যদি ফাউন্ডেশন একান্তই ব্যবহার করতে হয় তা হলে অয়েল-ফ্রি এবং ওয়াটার-বেসড ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন। মিনিটদশেক অপেক্ষা করে তারপর সেটিং পাউডার লাগান।
৫। ভুল করেও কিন্তু শিমারি পাউডার ব্যবহার করবেন না, তা হলে ঝকমকে দেখতে লাগবে।
৬। আইশ্যাডো অথবা ব্লাশ যাই ব্যবহার করুন না কেন, পাউডার-বেসড প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন তা না হলে তৈলাক্ত ত্বকে তা ভালভাবে মিশবে না এবং দেখতে খুবই খারাপ লাগবে।
৭। লিপস্টিক ব্যবহার করুন ম্যাট।
৮। সবশেষে মেকআপ সেটিং স্প্রে ব্যবহার করুন যাতে বেশ কয়েক ঘণ্টা আপনার মেকআপ ঠিক থাকে। কারণ তৈলাক্ত ত্বকে ঘাম হয় খুব আর ঘামের সঙ্গে প্রচুর তেলও বের হয় ফলে মেকআপ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি থাকে।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ফেসওয়াশ – হিমালয়া হারবালস পিউরিফাইং নিম ফেসওয়াশ (Face Wash for Oily Skin)
সুবিধে
- কোনও কেমিক্যাল নেই
- ভিতর থেকে ত্বক পরিষ্কার করে
- ব্রণ-ফুসকুড়ি দূর করে
- ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করে
- পকেটসই
অসুবিধে
- তেমন কিছুই নেই
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ময়শ্চারাইজার- নিউট্রোজেনা ভিসিবলি ক্লিয়ার পিঙ্ক গ্রেপফ্রুট অয়েল-ফ্রি ময়শ্চারাইজার (Moisturizer for Oily Skin)
সুবিধে
- ডারমাটোলজিক্যালি অনুমোদিত
- চটচটে নয়
- হালকা সুগন্ধ
অসুবিধে
- বেশ দামি
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য সানস্ক্রিন – ল্যাকমে নাইন টু ফাইভ হাইড্রেটিং সুপার সানস্ক্রিন এসপিএফ ৫০ (Sunscreen for Oily Skin)
সুবিধে
- হালকা
- ফুল কভারেজ দেয়
- সিলিকন-বেসড প্রোডাক্ট, কাজেই চিটচিটে নয়
অসুবিধে
- বেশ দামি
- সিলিকন থাকার জন্য সেনসিটিভ স্কিনে র্যাশ বেরতে পারে
অয়েল কন্ট্রোলের জন্য ঘরোয়া ফেসপ্যাক (Homemade Oil Control Face Pack)
আপনার ত্বক যদি অতিরিক্ত তেলতেলে হয় তাহলে অয়েল কন্ট্রোল করার জন্য আপনি এই ঘরোয়া ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। দুই টেবিল চামচ বেসনের সঙ্গে এক টেবিল চামচ টকদই ভালভাবে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিন। ওই পেস্ট মুখে, গলায় এবং ঘাড়ে লাগিয়ে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন। আপনি চাইলে এই প্যাকটি প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারেন আর যদি সময় না থাকে তা হলে সপ্তাহে অন্তত দু’দিন ব্যবহার করুন। এতে ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর হবে এবং ত্বক উজ্জ্বল ও নরম হয়ে উঠবে।
শুষ্ক ত্বকের যত্ন কীভাবে নেবেন (Skincare Routine for Dry Skin)
যাঁদের ত্বক শুষ্ক, তাঁদেরও কিন্তু ত্বকের যত্ন নেওয়াটা বেশ কঠিন। সারাক্ষণ ত্বকে একটা টান অনুভূত হতে থাকে এবং সবসময়ে ময়শ্চারাইজার লাগিয়েই যেতে হয় এক্ষেত্রে। জেনে নিন, কীভাবে শুষ্ক ত্বকের যত্ন নেবেন যাতে ত্বক কোমল এবং সুন্দর থাকে চিরকাল।
শুষ্ক ত্বকের যত্নে প্রতিদিনের অভ্যাস (Daily Skin Care for Dry Skin)
১। সকালে উঠেই সবার আগে ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন। এ সময়ে কোনও ফেসওয়াশ বা সাবান ব্যবহার করবেন না। কিছুক্ষন জলে ঝাপটা দিতে থাকুন।
২। এবারে একটা নরম তোয়ালে দিয়ে মুখ হালকা করে মুছে নিয়ে ক্রিম-বেসড কোনও ভাল ক্লেনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন। মুখ পরিষ্কার করা হয়ে গেলে ঘন কোনও ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। যদি আপনি সকালে উঠেই স্নান সেরে নেন তাহলে স্নানের পর ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করবেন।
৩। স্নানের আগে সম্ভব হলে কোনও ভেষজ তেল ভাল করে সারা শরীরে মালিশ করে নিন। যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে স্নানের পর মুখে ময়শ্চারাইজার লাগানোর সঙ্গেই সারা শরীরে কোনও অয়েল-বেসড বডি লোশন লাগিয়ে নিন।
৪। বাড়ি থেকে বেরন অথবা না বেরন, দিনের বেলা কিন্তু সানস্ক্রিন লাগাতে একদম ভুলবেন না। শুষ্ক ত্বকের জন্য অয়েল-বেসড অথবা ক্রিম-বেসড সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
৫। যদি আপনি মেকআপ ব্যবহার করেন, তাহলে খেয়াল রাখবেন প্রোডাক্টগুলো যেন ময়শ্চারাইজারযুক্ত হয়।
৬। বাইরে থাকাকালীনও মাঝে-মাঝেই ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন যাতে শুষ্ক ত্বকে টান না ধরে।
৭। রাতে বাড়ি ফিরে অয়েল-বেসড কোনও মেকআপ রিমুভার দিয়ে মেকআপ তুলে উষ্ণ জলে মুখ ধুয়ে নিন।
৮। এবারে সকালে যা-যা স্টেপ ফলো করেছেন রাতেও সেই ভাবেই ত্বকের যত্ন নিন, শুধু সানস্ক্রিনের বদলে ঘন কোনও নাইট ক্রিম লাগিয়ে ঘুমোতে যান।
শুষ্ক ত্বকে মেকআপ করার সময় কী-কী বিষয় খেয়াল রাখবেন (Makeup Tips for Dry Skin)
১। শুষ্ক ত্বকে মেকআপ করাটা বেশ কঠিন কাজ। যেহেতু ত্বক শুষ্ক কাজেই মেকআপ ভালভাবে বসতে চায়না ত্বকে। তাই মেকআপ করার সময়ে সবার প্রথমেই প্রাইমার লাগিয়ে নেওয়া খুব প্রয়োজন। প্রাইমার যদি আপনার কাছে না থাকে তা হলে আপনি কোনও ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। প্রাইমার লাগানোর ফলে ত্বকের উপরিভাগ পেল হয়ে যায় ফলে বাকি মেকআপ প্রোডাক্ট ভালভাবে বসতে পারে।
২। আপনি ফাউন্ডেশনের বদলে বি বি/সি সি ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
৩। যদি কোনও স্পেশাল অকেশন থাকে তাহলে ক্রিম-বেসড ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন।
৪। প্রয়োজনে অল্প শিমারি পাউডার ব্যবহার করতে পারেন।
৫। আইশ্যাডো থেকে শুরু করে ব্লাশ, লিপস্টিক সবই যেন ক্রিম-বেসড হয় খেয়াল রাখবেন।
শুষ্ক ত্বকের জন্য ফেসওয়াশ – হিমালয়া ময়শ্চারাইজিং অ্যালোভেরা ফেসওয়াশ (Face Wash for Dry Skin)
সুবিধে
- সোপ-ফ্রি ফর্মুলা
- দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য ভাল
- আয়ুর্বেদিক উপাদান
- পকেটসই
অসুবিধে
- তেমন কিছুই নেই
শুষ্ক ত্বকের জন্য ময়শ্চারাইজার – বায়ো অ্যাক্টিভ ইনটেন্স নাইট ক্রিম (Moisturizer for Dry Skin)
সুবিধে
- কোনও রাসায়নিক উপাদান নেই
- সালফেট এবং পারাবেন নেই
- শুধুমাত্র শুষ্ক ত্বক নয়, সংবেদনশীল ত্বকের জন্যও ভাল
অসুবিধে
- ব্লেন্ড হতে সময় লাগে
শুষ্ক ত্বকের জন্য সানস্ক্রিন – ল্যাক্টোক্যালামাইন সান শিল্ড এসপিএফ ৩০ পিএ (Sunscreen for Dry Skin)
সুবিধে
- ত্বকের কোনও ক্ষতি করে না
- বোতলের গায়ে সমস্ত উপকরণের নাম লেখা আছে
- সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে
অসুবিধে
- একটু উগ্র গন্ধ, সকলের পছন্দ নাও হতে পারে
শুষ্ক ত্বকের যত্নে ঘরোয়া ফেসপ্যাক (Homemade Face Pack for Dry Skin)
শুষ্ক ত্বকের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল ত্বকের উপরিভাগে প্রচুর পরিমাণে মরা কোষ বা ডেড সেল থাকে, ফলে ত্বকে সবসময়ে আরও বেশি টান ধরে। কয়েক টুকরো পাকা পেঁপে চটকে নিন এবং তার সঙ্গে এক টেবিল চামচ দুধের সর মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরি করুন। এই প্যাকটি মুখে লাগিয়ে মিনিট ১৫ পর ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু’বার এই প্যাক ব্যবহার করুন, ধীরে-ধীরে ত্বক কোমল হয়ে উঠবে।
কম্বিনেশন ত্বকের যত্ন কীভাবে নেবেন (Skincare Routine for Combination Skin)
না তেলতেলে না শুষ্ক – এমন ত্বক যদি আপনার হয়, তা হলে বুঝবেন যে আপনি কম্বিনেশন ত্বকের অধিকারিণী। কম্বিনেশন ত্বক যাঁদের হয় তাঁদের T-Zone অর্থাৎ কপাল, নাক এবং চিবুক – এই অংশগুলি প্রচণ্ড তৈলাক্ত হয় এবং মুখের বাকি অংশ শুষ্ক হয়। এরকম ত্বক হলে কীভাবে ত্বকের যত্ন নিতে হবে জেনে নিন-
কম্বিনেশন ত্বকের যত্নে প্রতিদিনের অভ্যাস (Daily Skin Care for Combination Skin)
১। কম্বিনেশন ত্বকের যত্ন নেওয়া কিন্তু খুব একটা কঠিন কাজ নয়। আপনি যদি প্রতিদিন CTM Routine মেনে চলেন তাহলেই আপনার ত্বক থাকবে সুস্থ এবং সুন্দর। কিন্তু এই CTM Routine কী? ক্লেনজিং, টোনিং এবং ময়শ্চারাইজিং – এই হল সিটিএম।
২। কম্বিনেশন ত্বক হলে মুখ পরিষ্কার করার জন্য ফেসওয়াশ ব্যবহার না করে কোনও মাইল্ড ক্লেনজার ব্যবহার করুন। তুলোয় করে সামান্য ক্লেনজার নিয়ে ভাল করে মুখ পরিষ্কার করে নিন।
৩। এবারে ঠাণ্ডা জলে মুখ ধুয়ে মুখ মোছা হয়ে গেলে আবার তুলোয় করে অ্যালকোহল-ফ্রি টোনার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। টোনিং করাটা কিন্তু খুব জরুরি কম্বিনেশন ত্বকের ক্ষেত্রে।
৪। এরপর কোনও ভাল জেল-বেসড ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন মুখে।
৫। বাইরে বেরনোর সময়েও কিন্তু জেল-বেসড সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না।
৬। সপ্তাহে অন্তত একবার করে এক্সফোলিয়েটিং করা জরুরি, এতে ত্বকের মরাকোষ এবং ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস দূর হয় এবং ত্বক শ্বাস নিতে পারে!
কম্বিনেশন ত্বকে মেকআপ করার সময় কী কী বিষয় খেয়াল রাখবেন (Makeup Tips for Combination Skin)
১। তৈলাক্ত ত্বক এবং কম্বিনেশন ত্বকের ক্ষেত্রে মেকআপ করার সময়ে খুব একটা তফাৎ হয় না। যেহেতু মুখের T-Zone তৈলাক্ত থাকে কাজেই জেল-বেসড বা পাউডার-বেসড মেকআপ প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে ভাল।
২। যে সব মেকআপ প্রোডাক্ট একটা ম্যাট-ফিনিশ লুক দেয়, সেরকম প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে দেখতে ভাল লাগবে।
৩। সবশেষে মেকআপ সেটিং স্প্রে ব্যবহার করুন যাতে বেশ কয়েকঘণ্টা আপনার মেকআপ ঠিক থাকে কারণ কম্বিনেশন ত্বকেও কিন্তু খুব ঘাম হয় আর ঘামের সঙ্গে প্রচুর তেলও বার হয় T-Zone-এ, ফলে মেকআপ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি থাকে।
কম্বিনেশন ত্বকের জন্য ফাউন্ডেশন – ম্যাক স্টুডিও ফিক্স পাউডার প্লাস ফাউন্ডেশন (Foundation for Combination Skin)
সুবিধে
- ম্যাট ফিনিশ লুক দেয়
- ব্যবহার করা সহজ
- বেশি ব্লেন্ড করতে হয় না
- সেনসিটিভ ত্বকের জন্যও ভাল
- আরটিফিশিয়াল মনে হয় না
অসুবিধে
- বেশ দামি
কম্বিনেশন ত্বকের জন্য আইশ্যাডো প্যালেট – হুডা বিউটি অবসেশনস প্যালেট : স্মোকি অবসেশনস (Eye Shadow Palette for Combination Skin)
সুবিধে
- স্মোকি আইজ করার জন্য পারফেক্ট
- ম্যাট এবং শিমার – দু’ধরনের আইশ্যাডোই রয়েছে
অসুবিধে
- দামটা একটু বেশির দিকে
কম্বিনেশন ত্বকের জন্য ব্লাশ – মেবিলিন নিউ ইয়র্ক ফিট মি ব্লাশ (Blush for Combination Skin Tone)
সুবিধে
- সহজেই ব্লেন্ড হয়ে যায়
- ন্যাচারাল লুক দেয়
- পকেটসই
অসুবিধে
- তেমন কিছুই নেই
কম্বিনেশন ত্বকের জন্য পাঁচটি ঘরোয়া ফেসপ্যাক (Homemade Face Pack for Combination Skin)
১। এক চামচ করে মধু, টকদই এবং গোলাপজল নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে একটা ফেসপ্যাক তৈরি করুন। এবারে ওই ফেসপ্যাক মুখে, গলায় এবং ঘাড়ে লাগিয়ে শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে নিন। মধু ত্বকের শুষ্কভাব দূর করতে সাহায্য করে আবার অন্যদিকে গোলাপজল ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্তভাব কন্ট্রোল করে, ফলে এই ফেসপ্যাকটি কম্বিনেশন ত্বকের জন্য খুবই ভাল।
২। কয়েক টুকরো পেঁপে এবং একটি ছোট মাপের পাকা কলা ভাল করে চটকে নিয়ে তাতে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করে নিন। মুখে লাগিয়ে নিন এবং শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের তেলতেলে ভাব কমিয়ে ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধির জন্য এই ফেসপ্যাকটি খুবই কার্যকরী।
৩। ত্বকের মরাকোষ দুর করতে ওটমিলের কোনও তুলনা হয়না, আর অন্যদিকে মুলতানি মাটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করে ত্বকের ভেতর থেকে ময়লা টেনে বার করে। এক টেবিল চামচ ওটমিল গুঁড়ো, ২ চা চামচ মুলতানি মাটি, এক টেবিল চামচ করে কাঁচা দুধ এবং শশার রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এবারে মুখে, গলায় ও ঘাড়ে আধঘন্টার জন্য লাগিয়ে রেখে শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দু’বার করলেই যথেষ্ট।
৪। চার টেবিল চামচ ওটমিল এবং চারটি আমন্ড একসঙ্গে গুঁড়ো করে নিন। সামান্য মধু ও কাঁচা দুধ মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগিয়ে নিন। মিনিট পাঁচেক রেখে হালকা প্রেশার দিয়ে মাসাজ করে নিন। এবারে উষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে নিন। ত্বকের মরাকোষ দূর করতে এবং ত্বক কোমল করতে এই প্যাকটি সাহায্য করে।
৫। ৪-৫ টি আমন্ড সামান্য দুধে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে আমন্ডের খোসা ছাড়িয়ে দুধ আর আমন্ডের পেস্ট তৈরি করে নিন। ঘণ্টা দুয়েক ওই পেস্ট মুখে লাগিয়ে বসে থাকুন। পরে ভাল করে ঠাণ্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন। ত্বক বেশ উজ্জ্বল হবে। সপ্তাহে একবার করলে তফাৎ চোখে পড়বেই।
সংবেদনশীল ত্বকের যত্ন কীভাবে নেবেন (Skincare Routine for Sensitive Skin)
সংবেদনশীল ত্বকের যত্ন নেবার আগে যে বিষয়টা না জানলেই নয় সেটা হল, সংবেদনশীল ত্বক ব্যাপারটা কি। যখন স্কিন একেবারে রুক্ষ হয়ে যায় কিম্বা স্কিনে দানা, ব্রণ, লালচে ছোপ, র্যাশ, অ্যালার্জি অথবা অন্য স্কিনের সমস্যা দেখা দেয় তখন সেটা সেনসিটিভ স্কিনের লক্ষণ। এমতাবস্থায় ত্বকে টান ধরে এবং শুষ্ক হয়ে যায়।
সংবেদনশীল ত্বকের যত্নে প্রতিদিনের অভ্যাস (Daily Skin Care for Sensitive Skin)
১। ধুলো, ময়লা, দূষণ এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক জিনিসের থেকে ত্বককে রক্ষা করার জন্য দিনে দু’বার (সকালে এবং রাত্রে) ভালো করে মুখ ধুয়ে পরিস্কার করা জরুরি।
২। আপনি যদি মনে করেন যে যত বেশি মুখ ধোবেন ততো বেশি স্কিনের ভালো হবে তাহলে জেনে রাখুন যে এই ভাবনা একেবারেই ভুল। কারন দু’বারের বেশি মুখ ধুলে স্কিনে ইরিটেশন হতে পারে।
৩। মুখ ধোবার পর তোয়ালে দিয়ে রগড়ে রগড়ে না মুছে জাস্ট ড্যাব করে নিন, অর্থাৎ একটা নরম তোয়ালে বা টিস্যু দিয়ে আসতে আসতে চেপে চেপে মুখের জলটা মুছে নিন।
৪। অনেকেই আছেন যারা বাইরে থেকে এসে মুখ না ধুয়েই শুয়ে পড়েন। সারাদিনের ধুলো, মেকআপ এগুলো যে ভালোভাবে পরিস্কার করা উচিত সেটা ভুলে যান। মেকআপ ঠিকভাবে না তুললে কিন্তু স্কিনের প্রচণ্ড ক্ষতি হয় আর স্কিন যদি সংবেদনশীল হয় তাহলে তো আর কথাই নেই। সেনসিটিভ স্কিনে মেকআপ তোলার জন্য অলিভ অয়েল কিম্বা খুব মাইল্ড কোন মেকআপ রিমুভার ব্যবহার করুন।
৫। এছাড়া মনে রাখবেন, কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন না। এখন নানারকম হারবাল বিউটি প্রোডাক্ট আর মেকআপ পাওয়া যায়, দরকার হলে সেগুলো ব্যবহার করুন। আর একান্তই যদি কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে হয় তাহলে যতটা কম সম্ভব ব্যবহার করুন। কারন বেশি কেমিক্যাল মানেই কিন্তু সেনসিটিভ স্কিনের বেশি ক্ষতি।
৬। আরেকটা ব্যাপার মাথায় রাখবেন, যতটা সম্ভব ক্লোরিনযুক্ত জলের থেকে দূরে থাকুন, সুইমিং পুল কিম্বা ওয়াটার পার্কের জলে কিন্তু ক্লোরিন মেশানো থাকে যা আপনার ত্বকের পক্ষে খুব খারাপ।
সংবেদনশীল ত্বকে মেকআপ করার সময় কী কী বিষয় খেয়াল রাখবেন (Makeup Tips for Sensitive Skin)
১। সত্যি কথা বলতে কী, সংবেদনশীল ত্বকে মেকআপ করা এবং নিজের হাতে নিজের পায়ে কুড়ুল মারা ব্যাপারটা মোটামুটি এক। সংবেদনশীল ত্বকে মেকআপ না করাটাই ভাল, তবুও একান্তই যদি মেকআপ করতে হয় তাহলে মাথায় রাখবেন মেকআপের পর কিন্তু খুব ভালভাবে মেকআপ তোলা এবং ত্বকের যত্ন নেওয়াটা প্রয়োজন।
২। সস্তা বা অতিরিক্ত রাসায়নিকযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার না করাই ভাল। পারলে অরগানিক মেকআপ প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন ।
৩। আর কয়েকটা ছোট্ট ছোট্ট কয়েকটা বিষয় মাথায় রেখে মেকআপ করুন না, কে বারন করেছে! মিনেরালযুক্ত ফেস পাউডার এবং সিলিকন বেসড ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন, এতে স্কিনে কম রিঅ্যাকশন হয়।
৪। যাদের স্কিন সেনসিটিভ তাদের পক্ষে লিক্যুইড আইলাইনারের বদলে পেন্সিল আইলাইনার ভালো, কারণ লিক্যুইড আইলাইনারে ল্যাটেক্স নামক একটি পদার্থ থাকে যা স্কিনে ইরিটেশন ঘটাতে পারে।
সংবেদনশীল ত্বকের জন্য ফেসওয়াশ – সেটাফিল জেন্টল স্কিন ক্লেনজার (Face Wash for Sensitive Skin)
সুবিধে
- ত্বক বিশেষজ্ঞ দ্বারা অনুমোদিত
- সালফেটহীন
- সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষতি করে না
অসুবিধে
- কিছুই না
সংবেদনশীল ত্বকের জন্য সানস্ক্রিন – সানক্রস ৫০ অ্যাকোয়ালোশন এসপিএফ ৫০ (Sunscreen for Sensitive Skin)
সুবিধে
- ত্বকের পোরস ব্লক করে না ফলে ত্বকে ময়লা জমে ব্রণ বা অ্যাকনের সমস্যা দেখা দিতে পারে না
- ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং অকালে ত্বককে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে
- যেহেতু এসপিএফ-এর মাত্র বেশি কাজেই সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে
অসুবিধে
- সানস্ক্রিনটি ত্বকে লাগানোর পর একটু অপেক্ষা করতে হয় যাতে ত্বকে ভালভাবে মিশে যেতে পারে
সংবেদনশীল ত্বকের জন্য পাঁচটি ঘরোয়া ফেসপ্যাক (Homemade Face Pack for Sensitive Skin)
১। হলুদ অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে খুবই ব্যবহৃত হয়। আপনার যদি সেনসিটিভ স্কিন হয় তাহলে আপনি হলুদ দিয়ে তৈরি এই ফেস প্যাকটি লাগাতে পারেন। খুব সহজেই আপনি এই প্যাকটি বানাতে পারবেন। এক টেবিল চামচ হলুদ নিয়ে (আপনি চাইলে কাঁচা হলুদ বেটে নিতে পারেন) তাতে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল এবং দুই টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে এই প্যাক মুখে লাগিয়ে নিন, সাথে গলায় এবং ঘাড়েও লাগান। শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন। হলুদ যেহেতু অ্যান্টিসেপ্টিক তাই ব্রণ ফুসকুড়ি এবং ত্বকের অন্যান্য ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে, আবার অন্যদিকে মধু স্কিনকে উজ্জ্বল করে এবং অলিভ অয়েল ত্বককে ময়েশ্চারাইজড রাখতে সাহায্য করে।
২। আপনার কাছে যদি অ্যাভোকাডো থাকে তাহলে একটা অ্যাভোকাডোর ভেতরের অংশ নিয়ে তার সাথে মধু মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এবারে যেখানে যেখানে ইচিং বা র্যাশ আছে সেখানে ওই পেস্ট লাগিয়ে নিন। ১০ মিনিট পর জল দিয়ে ধুয়ে নিন। এতে সেনসিটিভ স্কিনের ইচিং এবং জ্বালা দূর হয় আর আরাম মেলে।
৩। সেনসিটিভ স্কিনের জন্য অ্যালোভেরা খুব ভালো কাজ দেয়। অ্যালোভেরাতে ভিটামিন ই রয়েছে যা নানাধরনের স্কিন প্রবলেম যেমন র্যাশ, ইচিং ইত্যাদির উপশমে অতুলনীয়। অ্যালোভেরার পাতা কেটে নিয়ে তার ভেতর থেকে জেল বার করে নিন। যেখানে যেখানে র্যাশ আছে সেখানে এবং গলায় অ ঘাড়ে জেল লাগিয়ে নিন। সারা রাত এভাবে রেখে পরদিন সকালে ভালো করে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। অ্যালোভেরা জেল লাগানোর পরে একটু ইচিং হতে পারে কিন্তু তাতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
৪। কলা খাওয়া যে স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো, সেটা তো আমরা সবাই জানি, কিন্তু সেনসিটিভ স্কিনের জন্যও যে কলা খুব উপকারী সেটা কি আপনি জানেন? একটা পাকা কলার পেস্ট বানিয়ে তার মধ্যে এক চামচ মধু আর ২ চামচ টক দই মিশিয়ে ভালো করে মুখে লাগিয়ে নিন। ৭ থেকে ১০ মিনিট এই প্যাক রেখে ধুয়ে ফেলুন।
৫। দই আর মধু তো সবার বাড়িতেই থাকে। দই আর মধুর সাথে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল (এসেনশিয়াল অয়েল নেবেন, অ্যারোমা অয়েল না) মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন। দশ মিনিট পরে ভালো করে ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এতে আপনার স্কিনের শুষ্কভাব দূর হবে।
ঝটপট ত্বক জেল্লাদার করার জন্য পাঁচটি ঘরোয়া ফেসপ্যাক (5 Best Homemade Face Pack for Glowing Skin)
হাতে একদম সময় নেই কিন্তু কোনও অনুষ্ঠানে যেতে হবে? ট্রাই করুন এই পাঁচটি ঘরোয়া ফেসপ্যাক, চটজলদি জেল্লাদার ত্বক পেতে –
১। বেসন, হলুদ এবং দই-এর ফেসপ্যাক (Besan, Turmeric & Yogurt Face Pack)
উপকরণ – ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো, ৩ টেবিল চামচ দই এবং ৩ টেবিল চামচ বেসন
কীভাবে এই Facepack ব্যবহার করবেন – সব উপকরণ ভাল করে মিশিয়ে মুখে, গলায় এবং শরীরের যে অংশে ট্যান পড়েছে সেখানে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। প্রতিদিন যদি স্নানের আগে করেন তাহলে ভাল ফল পাবেন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী – সব ধরণের ত্বকের জন্যই এই ফেসপ্যাকটি উপযুক্ত, তবে যাঁদের ট্যানের সমস্যা রয়েছে তারাও এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।
২। অ্যালোভেরা এবং গ্লিসারিন দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক (Aloe Vera & Glycerin Face Pack)
উপকরণ – ১ চা চামচ অ্যালোভেরা জেল এবং কয়েকফোঁটা গ্লিসারিন
কীভাবে এই Facepack ব্যবহার করবেন – এক চা চামচ অ্যালোভেরা জেল কয়েক ফোঁটা গ্লিসারিনের সঙ্গে মিশিয়ে মুখে মেখে নিন। ২০-২৫ মিনিট পরে জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। চটজলদি স্কিন গ্লো করবে।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী – সব ধরণের ত্বকের জন্যই এই ফেসপ্যাকটি উপযুক্ত, তবে যাঁদের ত্বক শুষ্ক তারাও এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।
৩। পেঁপে, অ্যাভোকাডো এবং শশার ফেসপ্যাক (Papaya, Avocado & Cucumber Face Pack)
উপকরণ – মাঝারি আকারের একটি অ্যাভোকাডো, কয়েক টুকরো পাকা পেঁপে, ছোট একটি শশার অর্ধেক
কীভাবে এই Facepack ব্যবহার করবেন – একটা অ্যাভকাডো, ২-৪ টুকরো পাকা পেঁপে আর অর্ধেক শশা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। এবারে ওই মিশ্রণ মুখে, গলায় আর ঘাড়ে মেখে নিন। আধ ঘণ্টা পর উষ্ণ জলে ধুয়ে ফেলুন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী – সংবেদনশীল ত্বকের জ্বালা কমাতে উপযোগী।
৪। বেসন এবং অ্যালভেরা জেল-এর ফেসপ্যাক (Besan & Aloe Vera Gel Face Pack)
উপকরণ – ২ টেবিল চামচ বেসন এবং এক টেবিল চামচ অরগানিক অ্যালোভেরা জেল
কীভাবে এই Facepack ব্যবহার করবেন – উপকরণ দুটি মিশিয়ে ওই মিশ্রণ ত্বকে লাগিয়ে শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ২/৩ বার করুন এবং শীতকালে পারলে প্রতিদিন এই প্যাক ব্যবহার করুন। শুষ্ক ত্বকে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে এই প্যাক খুবই উপকারী।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী – শুষ্ক ত্বক এবং Sensitive skin-এর জন্য খুব ভাল।
৫। বেসন আর নীমের ফেসপ্যাক (Neem & Besan Face Pack)
উপকরণ – ১ টেবিল চামচ ড্রাই নীম পাউডার, ১ টেবিল চামচ বেসন এবং ১ টেবিল চামচ টক দই
কীভাবে এই Facepack ব্যবহার করবেন – নীমের পাউডার এবং বেসন ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে তাতে টক দই দিয়ে ভাল করে ফেটিয়ে নিয়ে ওই পেস্ট মুখে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুবার করলেই যথেষ্ট। যাঁদের ব্রণ বা ইনফেকশনের সমস্যা রয়েছে তাঁরা এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী – তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ভাল।
নানা ধরনের ত্বকের যত্ন সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর (FAQs)
১। প্রশ্ন: এসপিএফ ৩০ আর এসপিএফ ৫০-র মধ্যে কি তফাৎ?
উত্তর – এসপিএফ ৩০ যুক্ত সানস্ক্রিন মোটামুটি সব ধরণের ত্বকের জন্যই উপযুক্ত। সানস্ক্রিনের এসপিএফ মাত্রা দেখে বোঝা যায় যে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বক কতটা রক্ষা পাচ্ছে। যেমন ধরুন, ডারমেটোলজিস্টদের মতে, এসপিএফ ১৫ ত্বককে ইউভি রশ্মি থেকে ৯৩% রক্ষা করে, আবার এসপিএফ ৩০ ৯৭% রক্ষা করে আর এসপিএফ ৫০ ৯৮% রক্ষা করে।
২। প্রশ্ন: মেঘলা দিনেও কি সানস্ক্রিন লাগানো দরকার?
উত্তর – আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা সানস্ক্রিন শুধুমাত্র তখন ব্যবহার করেন যখন রোদ ওঠে, কিন্তু যেদিন মেঘলা থাকে সেদিন আর ব্যবহার করেন না, এরকম করা কিন্তু একেবারেই উচিত নয়। কারণ সূর্যের তাপ থেকে না, সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করাই সানস্ক্রিনের কাজ। মেঘলা দিনেও কিন্তু সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি যথেষ্ট পরিমানেই থাকে যা ত্বকের ক্ষতি করার জন্য কম নয়। কাজেই, চড়চড়ে রোদ হোক বা মেঘলা, দিনের বেলা যখনই বাইরে বেরবেন সানস্ক্রিন লাগিয়ে তবেই বেরনো ভাল।
৩। প্রশ্ন: প্রতিদিন কি মুখে মুলতানি মাটির ফেসপ্যাক লাগানো যায়?
উত্তর – না। প্রতিদিন মুলতানি মাটি লাগালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। দু’সপ্তাহে একবার মুলতানি মাটির ফেসপ্যাক লাগালেই যথেষ্ট। তবে যদি আপনার অতিরিক্ত তেলতেলে ত্বক হয় সেক্ষেত্রে আপনি সপ্তাহে দুবার ব্যবহার করতে পারেন মুলতানি মাটির Face pack.
৪। প্রশ্ন: মেকাপ আর বিউটি প্রোডাক্টস কি সত্যি এক্সপায়ার করে?
উত্তর: আচ্ছা, সত্যি করে বলুন তো, আপনি কি কখনোই ২ বছর পুরোনো লিপস্টিক বা আই শ্যাডো লাগাননি? অস্বীকার করে লাভ নেই, আমরা সবাই এটা কোনো না কোনো সময়ে করেছি। কিন্তু আপনি কি দু বছর পুরোনো ওষুধ খাবেন? খাবেন না তো! ঠিক সেরকমই, প্রতিটি মেকাপ বা বিউটি প্রোডাক্ট-এর একটা নির্দিষ্ট আয়ু থাকে, তারপরে সেটি ব্যবহার করা মানে ত্বকের ক্ষতি নিজের হাতে করা।
৫। প্রশ্ন: সিসি ক্রিম, ফাউন্ডেশন আর কনসিলারের মধ্যে কি তফাত?
উত্তর: প্রতিটি মেকআপ প্রোডাক্টের আলাদা আলাদা কাজ হয়. সিসি ক্রিম, ফাউন্ডেশন আর কনসিলারের কাজও একে অন্যের থেকে আলাদা। সিসি ক্রিম ফাউন্ডেশনের মতো দেখতে হলেও মোটেই এটা ফাউন্ডেশন না। এর পুরো নাম হলো ‘কালার কারেকশন’ ক্রিম। এটা আপনি রোজ অফিস বা কলেজ যাবার সময় ব্যবহার করতে পারেন। বেশি মেকআপ না করে সিসি ক্রিম লাগালেই মুখে একটা ন্যাচারাল গ্লো দেখা যায়। সেখানেই ফাউন্ডেশনের কাজ হলো মেকআপ-এর বেস তৈরী করা, আর মুখের দাগ-ছোপ বা লালচে ভাব ঢাকার জন্য কনসিলার ব্যবহার করা হয়।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!
Read More From Combination Skin
প্রকারভেদে বদলে যাবে শীতের স্কিন কেয়ার
Debapriya Bhattacharyya