বিয়ে মানে নতুন সংসার, নতুন সম্পর্ক, নতুন যাত্রাপথের শুরু। সেই সঙ্গে পুরনো অনেক কিছুতে দাঁড়িও টেনে দেওয়া। এই নতুন-পুরনোর দোলাচলে যিনি সবচেয়ে সমস্যায় পড়েন, তিনি হলেন নতুন বউটি। চেনাপরিচিত চৌহদ্দি ছেড়ে নতুন পরিবেশে, নতুন রোলে মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগাটা স্বাভাবিক। আর এই ট্রানজিশন পিরিয়ডটা সকলের জন্য যে একেবারে মাখনের মতো মসৃণ হবে, তেমনটা ভাবারও কোনও কারণ নেই। অনেকেরই এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সমস্যা হয়। আর সেই সময়ই অহেতুক পিছু নিতে পারে মানসিক অবসাদ (depression), চাপ এবং অ্যাংজাইটির মতো সমস্যা। বিয়ের পরে (post wedding) খুব বেশিদিন এই মন খারাপের ঘনঘটা পিছু নিয়ে থাকলে কিন্তু তা ছাপ ফেলতে পারে পরবর্তী জীবনে। তাই তাড়াতাড়ি এর কবল থেকে নিজেকে মুক্ত করাটাই হল বুদ্ধিমানের কাজ। সেই কাজেই সাহায্য করতে আসছি আমরা…
নিজের জন্য সময় বের করাটা জরুরি
একথা ঠিক যে, ব্যাচেলর জীবনের সঙ্গে সাংসারিক জীবনের কোনও মিল নেই। বিয়ের পরে হাত-পা ছেড়ে ঘুরে বেরানোর সময় কোথায়? কত দায়িত্ব যে সামলাতে হবে, তার হিসেব রাখা দায়। তাই বিয়ের আগে থাকতেই এই সব নিয়ে মানসিক প্রস্তুতিটা সেরে ফেলা উচিত। কিন্তু বিয়ে করছেন মানেই যে স্বাধীনতা হারিয়ে অন্যের মর্জিমতো চলতে হবে, তা কিন্তু নয়। দায়িত্ব সামলান না, কোনও ক্ষতি নেই! কিন্তু নিজের জন্য সময় বের করাটাও যে আপনারই দায়িত্ব, সেটা ভুলে যাবেন না যেন! নিজের প্রতি এই দায়িত্বটা ঠিকমতো পূরণ করতে না পারলেই বিপদ। ভাবছেন কী করণীয়? এক্ষেত্রে কতগুলি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমন ধরুন, বিয়ের আগে থাকতেই পার্টনারের সঙ্গে এই নিয়ে কথা সেরে ফেলুন। প্রয়োজনে বিয়ের পর পর শ্বশুর-শাশুড়িকেও বিষয়টা বুঝিয়ে বলতে হবে। কারণ, কিছুটা সময় নিজের মতো কাটাতে না পারলে যে স্ট্রেস ঘাড়ে চেপে বসবেই। তাই বিয়ের প্রথম দিন থেকেই পার্টনারের সঙ্গে দায়িত্ব ভাগ করে নিন। নিজের হবির জন্য দিনের একটা সময় বেছে রাখুন। সেই সঙ্গে নিজের প্রতিটা ইচ্ছে পূরণের চেষ্টাও চালান। প্রথম-প্রথম কাজটা হয়তো সহজ হবে না। কিন্তু তাই বলে হেরে গেলে চলবে না।
বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে ভুলবেন না
বিয়ের পর পর বন্ধুদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ালে চলবে না। উল্টে বিয়ের দিন দশেকের মধ্যেই বন্ধুদের সঙ্গে বরের আলাপটা করিয়ে দিন। তাতে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে আপনার আর কোনও সমস্যা থাকবে না। ফলে মানসিক চাপ কিছুটা হলেও কমবে বই কী! আসলে কী জানেন, এমন অনেক কথা আছে যা বরকে বলা না গেলেও বন্ধুদের বলা যায়। তাই তো নিয়ম করে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা-গল্প চালিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজনে তাঁদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে আগের মতো জমিয়ে পার্টিও করতে পারেন। ভাবছেন, শ্বশুর-শাশুড়ি কী বলবে? একটু বুদ্ধি খাটিয়ে বরকে এই বিষয়ে রাজি করিয়ে নিন। আর তাকেই বলুন বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলতে। জানবেন, বরকে একবার বুঝিয়ে দিতে পারলে তাঁদের বাগে আনা কোনও সমস্যাই নয়। মোট কথা হল, সংসার সামলেও ব্যাচেলর লাইফের সুখের সময়গুলোকে কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায়, তা আপনাকেই ভাবতে হবে। খেয়াল করে দেখবেন, অনেক মেয়েই বিয়ের পরে বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন না। এদিকে অনেক সময় বরের সঙ্গেও মন খুলে কথা বলা সম্ভব হয় না। ফলে একাকিত্ব দানা বাঁধে। আর সেই থেকেই তো মানসিক চাপ বেড়ে গিয়ে হাজার রকমের ঝামেলা ঘিরে ধরে। তাই বুঝতেই পারছেন, এই টিপসটা মেনে না চললে আপনারই বিপদ!
সুযোগ পেলেই বরের সঙ্গে সময় কাটান
চাকরি আর সংসারের দায়িত্ব সামলে নিশ্চয়ই একে অপরকে সময় দিতে পারেন না? তাই ছুটির দিন এক সঙ্গে সময় কাটানো মাস্ট! শনি-রবিবার দু’জন মিলে সারা দিনটা কাটান। সিনেমা দেখুন। সুযোগ থাকলে নতুন নতুন রেস্তরাঁয় ঢুঁ মারুন। আর যদি হাতে কয়েকটা দিন ছুটি থাকে, তা হলে কাছেপিঠে ঘুরে আসুন না! ভাবছেন, এই সব করে কী লাভ? বরের সঙ্গে যত সময় কাটাবেন, ততই তো একে অপরকে আরও ভাল করে চিনে ফেলার সুযোগ পাবেন। একে অপরের ভাল-মন্দ দিকগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন। আর এই ভাবেই তো আপনারা কাছে আসবেন। যত দূরত্ব ঘুচবে, ততই তো একে অপরের বন্ধু হয়ে ওঠার সুযোগ পাবেন। জানবেন, বর যখন বন্ধু হয়ে ওঠে, তখন কিন্তু সংসার জীবন অনেক সহজ হয়ে যায়। তাই ছুটির দিন পার্টনারের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ হারালে চলবে না।
কাপল কাউন্সিলিং করাতে পারেন
এত কিছু করেও যদি সমস্যা না মেটে, তা হলে একবার কাউন্সিলারের সাহায্য নিতে পারেন। আসলে কী জানেন, কাউন্সিলারের সঙ্গে কথা বলার সময় স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই মন খুলে কথা বলার সুযোগ পান, যে কারণে একে অপরের মনের কথা বুঝে ফেলার সুযোগ থাকে। তাছাড়া মনে জমে থাকা নানা অনিশ্চয়তা এবং ভয়ও দূর হয়। ফলে বিয়ের পর পর মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা নানা ভুল বোঝাবুঝি মিটে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। শুধু তাই নয়, কাউন্সিলারের সাহায্য নিলে সম্পর্কের ভিতটা কিছুটা হলেও দৃঢ়তা পায়, যা বৈবাহিক জীবনকে আরও সুন্দর করে তোলে। তাই প্রয়োজন মনে করলে কাপল কাউন্সিলিং করাতে পিছপা হবেন না যেন!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
২০২০ সালটা শুরু করুন আমাদের দারুণ সব প্ল্যানার এবং সেটমেন্ট মেকিং সোয়েটশার্ট দিয়ে, যেগুলো দারুণ ঝকঝকে তো বটেই, আর একেবারে আপনার কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে। হুমম…আরও একটা এক্সাইটিং ব্যাপার হল, এখন আপনি পাবেন ২০% বাড়তি ছাড়ও। দেরি কীসের, এখনই POPxo.com/shop-এ যান আর আপনার এই বছরটা POPup করে ফেলুন!