শরীরকে চাঙ্গা রাখতে ওজন নিয়ন্ত্রণে (Weight Loss) থাকাটা একান্ত প্রয়োজন। কারণ ওয়েট বাড়তে শুরু করলে একের পর এক জটিল রোগ ঘাড়ে চেপে বসার আশঙ্কা যায় বেড়ে। বিশেষত, হার্টের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তো থাকেই, সেই সঙ্গে ডায়াবেটিস, হাই কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ও থাকে। তাই ওজন যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, সেদিকে নজর রাখাটা একান্ত প্রয়োজন।
এখন প্রশ্ন হল ওজন বিপদসীমার বাইরে চলে গেছে কিনা তা বোঝার উপর কী? এক্ষেত্রে “বডি মাস ইনডেক্স” বা বিএমআই-এর উপর ভরসা রাখতে হবে। চিকিৎসকেদের মতে বিএমআই যদি ১৮.৫ থেকে ২৫ এর মধ্যে থাকে, তাহলে চিন্তার কোনও কারণ নেই। কিন্তু ২৫ পেরলেই কিন্তু বিপদ! আর যদি বি এম আই ৩০ পেরিয়ে যায়, তাহলে চটজলদি ওজন কমানো (Ramdev Tips For Weight Loss) যায় কীভাবে সেদিকে নজর ফেরাতে হবে। আর এক্ষেত্রে যদি বাবা রামদেব এর পরামর্শ মেনে চলা যায়, তাহলে ওজন কমতে যে একেবারেই সময় লাগবে না, তা তো বলাই বাহুল্য!
দ্রুত ওজন নিয়ন্ত্রনে বাবা রামদেবের যোগাসন
দ্রুত ওজন কমাতে (Weight Loss) বাবা রামদেব যেমন নিয়মিত যোগাসন (Ramdev Baba Yoga) করার পরামর্শ দেন, তেমনি কিছু নিয়ম মেনে চলার কথাও বলে থাকেন। যেমন ধরো…
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া শুরু করলে শরীর তো সুস্থ হয়ে উঠবেই, সেই সঙ্গে ওজন কমতেও সময় লাগবে না। কারণ পুষ্টিকর খাবার খেলে শরীরে অপ্রয়োজনীয় ক্যালরির প্রবেশ ঘটার আশঙ্কা যাবে কমে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরের ইতিউতি মেদ জমার আশঙ্কাও আর থাকবে না। আর ঠিক একই কারণে ময়দা, চিনি এবং ভাজা জাতীয় খাবার খাওয়াও উচিত নয়। বরং রোজের ডায়েটে বেশি করে জায়গা করে দেওয়া উচিত সবুজ শাক-সবজি এবং ফলেদের। সেই সঙ্গে দৈনিক যে পরিমাণ ক্যালরি বার্ন হচ্ছে, ঠিক সেই পরিমাণে বা তার থেকে একটু বেশি পরিমাণে ক্যালরি গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই দেখবে কেল্লা ফতে!
বাবা রামদেবের মতে দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল (Enough Water) পান শুরু করলে শরীরের ভিতরে উপস্থিত টক্সিক উপাদান বেরিয়ে যায়। ফলে শরীরের কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যেমন থাকে না, তেমনি হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন বাড়ার আশঙ্কা যায় কমে (Weight Loss)।
শরীরে যাতে কোনও সময়ই জলের ঘাটতি দেখা না দেয়, তা সুনিশ্চিত করতে একটা নিয়ম মেনে চলতে হবে। কী নিয়ম? সকালে ঘুম থেকে ওঠা মাত্র ২ গ্রাস জল খেতে হবে। আর সারাদিনে কম করে ৩ লিটার জল পান মাস্ট! এমনটা করলে দেখবে শরীর এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি তো ঘটবেই, সেই সঙ্গে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও আর থাকবে না।
শরীরে ফাইবারের (Fibre) মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করলে খিদে কমে যায়। আর খিদে কমে গেলে স্বাভাবিকভাবেই খাবার খাওয়ার পরিমাণও হ্রাস পায়। ফলে কম পরিমাণ খাবার খাওয়ার কারণে ওজন কমতে (Weight Loss) সময় লাগে না। সেই সঙ্গে আরও বেশ কিছু উপকার পাওয়া যায়। যেমন ধরো -শরীরে ফাইবারের মাত্রা বাড়তে থাকলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে চোখে পড়ার মতো। সেই সঙ্গে কনস্টিপেশনের প্রকোপ যেমন কমে, তেমনি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং যে কোনও ধরনের পেটের রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না।
এতসব উপকার পেতে তাই নিয়মিত খেতে হবে কলা, আপেল,আম অথবা লিচুর মতো ফল, নয়তো রোজের ডায়েটে জায়গা করে দিতে হবে হবে গাজর,বিট, ব্রকলি, পালং শাক অথবা মিষ্টি আলুর মতো সবজিকে। ইচ্ছা হলে নিয়মিত খেতে পারো এক বাটি করে বাদামও। কারণ এতেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার (Fibre Rich Foods)।
চটজলদি যদি ওজন কমাতে হয় (Weight Loss), তাহলে রাত ৯ টার পরে ডিনার করা চলবে না। কারণ একাধিক গবেষণা অনুসারে রাত যত বাড়তে থাকে, তত আমাদের মেটাবলিজম রেট কমতে থাকে। ফলে বেশি রাত করে খাবার খেলে স্বাভাবিকভাবেই খাবার ঠিক মতো হজম হতে না পারার কারণে শরীরে মেদের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। আর এমনটা দিনের পর দিন হতে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে সময় লাগে না। তাই অতিরিক্ত ওজনের কারণে যদি চিন্তায় থাকো, তাহলে রাত ৮-৯ টার মধ্যে ডিনার সেরে ফেলো। সেই সঙ্গে খাবার পরিমাণও একটু কমাতে হবে। এমনটা করলেই দেখবে উপকার পাবে একাবের হাতে-নাতে!
সাধারণত আমরা দিনে তিনবার খাবার খেয়ে থাকে। কিন্তু ওজন কমাতে (Weight Loss) চাইলে দিনে তিনের জায়গায় ৫-৬ বার খাবার খেতে হবে। শুধু তাই নয়, খেয়াল করে প্রতি ২-৩ ঘন্টা অন্তর অল্প পরিমাণে খাবার খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ এমনটা করলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। আর মেটাবলিজম রেট যখন বেড়ে যায় , তখন স্বাভাবিকভাবেই শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত ফ্যাট বার্ন (Fat Burn) হয় আরও বেশি পরিমাণে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে একেবারেই সময় লাগে না।
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত ৩০ মিনিট সাইকেল চালালে প্রায় ৫০০-১০০ ক্যালরি বার্ন (Calorie Burn) হয়। আর নিয়মিত এত পরিমাণে ক্যালরি বার্ন হতে শুরু করলে স্বাভাবিকভাবেই অতিরিক্ত মেদ ঝরে যেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে সারা শরীরে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রতিটি অঙ্গের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় চোখে পড়ার মতো। তাই তো বলি, যারা নিয়মিত যোগাসন বা শরীরচর্চা (Ramdev Baba Yoga) করার সময় পায় না, তাদের প্রতিদিন অন্তত সাইক্লিং (Cycling) করা উচিত।
হেলদি টিপস গুলি মেনে চলার পাশাপাশি ওজন কমাতে (Ramdev Tips For Weight Loss) যদি বেশ কিছু যোগাসন যদি নিয়মিত করা যায়, তাহলে ফল মেলে আরও দ্রুত (Ramdev Baba Yoga)। যেমন ধরো…
এক্ষেত্রে পেটে চাপ দিয়ে সোজা হয়ে শুয়ে পড়তে হবে। তারপর কুনুই দুটি মাটিতে সোজা ভাবে রেখে দু হাতের তালুর উপরে থুতনিটা রাখতে হবে। এই সময় দৃষ্টি থাকবে সামনের দিকে। আর পেট মাটিতে ছুঁয়ে থাকবে। যেমনটা উপরের ছবিতে দেখানো হয়েছে। এই আসনটি করার সময় শরীরের অবয়ব অনেকটা কুমিরের মতো হয়ে যায়। তাই তো এই আসনটিকে অনেকে ক্রকোডাইল পোজ নামেও ডেকে থাকে।
নিয়মিত কয়েক মিনিট এই আসনটি (Yogasan) করলে পেটের চর্বি তো কমবেই। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটবে, পেটের পেশীর ক্ষমতা বাড়়বে এবং শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়বে চোখে পড়ার মতো।
মাটিতে বসে পা দুটো সোজা রাখতে হবে। আর হাত দুটো থাকবে শরীরের পাশে। এই সময় দু পায়ের গোড়ালি লেগে থাকবে। আর স্পাইনাল কর্ড থাকবে একেবারে সোজা। এই অবস্থায় ডান পা ভাঁজ করে রাখতে হবে বাঁ পাঁয়ের হাঁটুর কাছে। তারপর বাম হাতটা ডান হাঁটুর উপর দিয়ে নিয়ে গিয়ে ডান কোমরের কাছে রাখতে হবে। এই সময় মুখ থাকবে পিছনের দিকে। আর ডান হাতটা একেবারে সোজা থাকবে। এইভাবে দেড় থেকে তিন মিনিট থাকার পরে স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসতে হবে। নিয়মিত এই আসনটি (Yogasan) করলে পিঠের ব্যথা তো কমবেই, সেই সঙ্গে তলপেটের পেশীর ক্ষমতা বাড়বে, পেটের মেদ ঝরবে (Weight Loss) এবং শরীরের সচলতা বৃদ্ধি পাবে।
পদ্মাসনে বসে বাঁ হাতটা কাঁধের উপর থেকে পিঠের দিকে নিয়ে যেতে হবে। তারপর ডান হাতটা পিঠের নিচের দিক থেকে নিয়ে গিয়ে বাঁ হাতটা ধরতে হবে। এই সময় স্পাইনাল কর্ড একেবারে সোজা রাখতে হবে এবং স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে হবে। এইভাবে কয়েক মিনিট থাকার পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে হবে। এই আসনটি করলে হাতের চর্বি যেমন ঝরে যেতে সময় লাগে তেমনি আরও বেশ কিছু উপকার মিলবে। যেমন ধরো- পেটের মেদ কমবে (Weight Loss), শরীরের প্রতিটি পেশীর সচলতা বৃদ্ধি পাবে এবং শরীর এত মাত্রায় চাঙ্গা হয়ে উঠবে যে ব্য়াক পেন এবং কোমরের ব্যথা হওয়ার মতো সমস্যা ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবে না।
এই আসনটি করার সময় সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে প্রথমে। এই সময় খেয়াল রাখতে হবে দুটি পায়ের পাতা যেন লেগে থাকে। এমন অবস্থায় শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে দু-হাত উপরে তুলে ধীরে ধীরে নিচের দিকে ঝুঁকে দু হাত দিয়ে গোড়ালির পিছন দিকটা স্পর্শ করতে হবে। এই সময় দৃষ্টি থাকবে মাটির দিকে। এমনভাবে ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে হবে। এইভাবে নিয়মিত এই আসনটি (Yogasan) করলে পেটের মেদ ঝরতে (Weight Loss) একেবারেই সময় লাগবে না। সেই সঙ্গে শরীরের সচলতাও বৃদ্ধি পাবে চোখে পড়ার মতো।
ছবির কৃতজ্ঞতা স্বীকার: YouTube
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এগুলোও আপনি পড়তে পারেন
ট্রাই করুন কেমিক্যালবিহীন বাবা রামদেবের বিউটি প্রোডাক্ট
কীভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে স্তনের আকার কমানো সম্ভব