“আমাদের সময়ে তো তোদের মতো এতো মুখে মাখার জিনিস ছিলোনা, আমরা রান্নাঘরের জিনিসই ব্যবহার করতাম, আর দেখ এখনও তোর থেকে আমার স্কিন কতো ভালো” – দিদা যখন কথাটা বললেন, সত্যিই দেখলাম যে এই বয়সেও দিদার স্কিন আর চুল (beautiful skin and hair) কতো সুন্দর! জিজ্ঞেস করলাম, “তুমি রান্নাঘরের কোন জিনিসটা ব্যবহার করতে দিদা যে তোমার স্কিন আর চুল এখনও এতো সুন্দর?” উত্তরে দিদা যেটা বললেন সেটা শুনে একটু অবাকই হলাম, ‘বেসন’! আমি শুনেছি যে অনেকেই বেসন মুখে মাখেন তবে চুলেও বেসন? আমার মতো আপনারাও নিশ্চই একটু অবাক হচ্ছেন? আসলে আমরা অনেকেই জানি না যে বেসন চুল এবং ত্বকের (beautiful skin and hair) জন্য খুবই উপকারী। আপনার সৌন্দর্যকে চতুর্গুণ করতে বেসনের কিন্তু জুড়ি মেলা ভার। চলুন দেখে নি, কীভাবে রূপচর্চায় বেসন (gram flour) আমাদের সাহায্য করে –
আরও পড়ুনঃ জবা ফুলের উপকারিতা ও কিছু আসাধারন গুণাগুণ
আমার মতো হয়তো আপনিও শুনেছেন যে অনেকেই মুখে বেসন মাখেন, কিন্তু বেসন আমাদের স্কিনের ঠিক কি কি উপকার করে সেটা অনেকেই জানেন না। দেখে নিন বেসন (besan) আমাদের ত্বকের ঠিক কি কি উপকার করে –
বেসনে প্রাকৃতিক খনিজ জিঙ্ক রয়েছে যা অ্যাকনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। সমান পরিমানে বেসন আর হলুদগুঁড়ো নিয়ে এক চা চামচ লেবুর রস আর এক চা চামচ মধু মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করুন। জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ভেজা মুখে ওই পেস্ট লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিন। এবারে উষ্ণ জলে মুখ ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার এটা ট্রাই করুন, অ্যাকনে দূর করার জন্য।
আমাদের মতো ট্রপিক্যাল আবহাওয়ায় ট্যান পড়াটা খুব স্বাভাবিক। ট্যান দূর করার জন্য ৪ চা চামচ বেসন, এক চা চামচ লেবুর রস আর ১ টেবিল চামচ টক দই-এর একটা মিশ্রণ তৈরি করে যেখানে যেখানে ট্যান রয়েছে সেখানে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে নিন। প্রতিদিন স্নানের আগে এটা করুন, দেখবেন কিছুদিনের মধ্যেই ট্যানের বিশ্রী দাগ চলে গেছে।
আমরা সবাইই কমবেশি ফেসিয়াল হেয়ার নিয়ে সমস্যায় ভুগি। ওয়াক্স করতে গেলে বা থ্রেডিং করতে গেলে ব্যাথা তো লাগেই তার ওপরে পারমান্যান্টলি এই সমস্যা দূরও হয়না। ফেসিয়াল হেয়ার চিরতরে দূর করার জন্য বেসনের সাথে সমান পরিমানে মেথিগুড়ো আর সামান্য জল মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করে মুখে মেখে নিন। আধ ঘণ্টা পর ধুয়ে নিন। এটা কিন্তু একটু সময়সাপেক্ষ। বেশ কিছুদিন এই মাস্ক আপনাকে প্রতিদিন ব্যবহার করতে হবে।
চুলের যত্ন নিতে বেসন নাকি দারুণ কাজ দেয়! রইল দুটি হেয়ার মাস্কের হদিশ –
বেসনে প্রোটিন সোর্স রয়েছে যা চুলের যত্নে খুব ভালো কাজ দেয়। আমন্ড পাউডার, দই, অলিভ অয়েল আর বেসন মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করে নিন। যদি আপনার চুলে কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট করানো থাকে তাহলে এই উপাদানগুলির সাথে ২টো ভিটামিন ই ক্যাপস্যুলও মিশিয়ে নেবেন। ভেজা চুলের গোঁড়ায় গোঁড়ায় মাস্কটি লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা জলে চুল ভালো করে ধুয়ে নিন। ভালো ফল পেতে সপ্তাহে ২ বার করতে হবে।
দুই টেবিল চামচ বেসন, দুই চা চামচ মধু, এক চা চামচ নারকোল তেল আর কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল আর পরিমান মতো জল মিশিয়ে একটা শ্যাম্প্যু তৈরি করে নিন। এবারে ভেজা চুলে যেমন করে শ্যাম্প্যু করেন সেভাবেই এই মিশ্রণটি দিয়ে শ্যাম্প্যু করে নিন। ৫-৭ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা জলের সাথে সামান্য গরম জল মিশিয়ে চুল এবং স্ক্যাল্প ধুয়ে নিন।
ছবি সৌজন্যেঃ হটস্টার
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এগুলোও আপনি পড়তে পারেন
সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এলোভেরার এই ১২টি গুন অবশ্যই জানুন
চালের গুঁড়ো রূপচর্চায় কীভাবে কাজে লাগে
মজবুত চুল পেতে ঘরোয়া হেয়ার মাস্ক