এমনিতেই বিয়ের মরসুম চলছে। ব্যাক টু ব্যাক বন্ধুর বিয়েতে সাজ, বিশেষ করে চুলের (hair) উপর সব চেয়ে বেশি স্ট্রেস পড়ে। হেয়ার স্টাইলিং, কালার ট্রিটমেন্ট ও নানা ধরনের প্রোডাক্টস ব্যবহার করে চোখ ধাঁধানো হেয়ার স্টাইল করা হয়। কারণ এর মধ্যে রয়েছে হাজারো কেমিক্যালস। যা আপনার চুল নষ্ট করে দেয়। শুধু তা-ই নয়, চুল সেট করতে চুলে (hair) যে হিট দেওয়া হয়, সেটাও সমান ভাবেই ক্ষতিকর। স্বাভাবিক ভাবেই চুলের জৌলুস হারিয়ে যেতে থাকে। তাই চুলের জন্য বিশেষ যত্নের দরকার। সেটা হল হেয়ার ডিটক্স (hair detox)! হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন! চুলও ডিটক্স করা যায়। শরীর সুস্থ রাখতে ঠিক যে ভাবে আমরা ডিটক্স প্রোসেস ফলো করি, সে ভাবেই হেয়ার ডিটক্স (hair detox) করা যায়! আসলে রোজ চুল (hair) পরিষ্কার করা (cleansing) বা ধুলেই চুলের সব ময়লা চলে যাবে, সেটা কিন্তু একেবারেই নয়। এমনকি রোজ ভাল করে শ্যাম্পু (shampoo) করা, বা চুলকে কন্ডিশন (conditioning) করা, তাতে কিন্তু কোনও লাভ নেই।তো চুলের (hair) সেই স্বাস্থ্য ফিরিয়ে দিতে প্রয়োজন হেয়ার ডিটক্স (hair detox)।
নিশ্চয়ই আপনার মনে প্রশ্ন জাগছে, কী ভাবে করবেন হেয়ার ডিটক্স। এমনকি ঘরে বসেও করে ফেলতে পারেন হেয়ার ডিটক্স (hair detox)। পার্লারে যাওয়ারও প্রয়োজন নেই। আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেব কয়েকটা সহজ হেয়ার ডিটক্স রেসিপি।
আরও পড়ুনঃ ঘরোয়া উপায়ে ফ্রিজি হেয়ার থেকে মুক্তি
বেকিং সোডা
এর জন্য লাগবে-
আধ কাপ বেকিং সোডা
৩ কাপ গরম জল
বেকিং সোডা আর গরম জল মিশিয়ে নিন। এ বার চুল একেবারে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন। পুরো চুলটা যেন ভিজে থাকে। এ বার চুলে বেকিং সোডার মিশ্রণটা ঢেলে নিন। এ বার কয়েক মিনিট ধরে চুলের স্ক্যাল্পে (scalp) মাসাজ করুন। এ বার চুল ধুয়ে কন্ডিশনিং (conditioning) করে নিন। আর ন্যাচারালি কন্ডিশনিং করতে মধু ব্যবহার করতে পারেন। এটা আপনি সপ্তাহে এক বার অথবা ২ সপ্তাহে এক বার ব্যবহার করতে পারেন। গরম জল আপনার কিউটিকল আলগা করে ডিপ ক্লিন (cleansing) করবে। আর বেকিং সোডা আপনার স্ক্যাল্পের অতিরিক্ত তেল, খুশকি দূর করবে। পাশাপাশি, কোনও ক্ষতিকর রাসায়নিক চুলে বা স্ক্যাল্পে (scalp) থাকলে সেটাও দূর করে।
অ্যাপল সাইডার ভিনিগার
এই হেয়ার ডিটক্স বানাতে লাগবে-
১/৪ কাপ অ্যাপল সাইডার ভিনিগার
২ কাপ জল
জলের মধ্যে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার ভাল করে গুলে নিতে হবে। এ বার শ্যাম্পু (shampoo) করে চুল ভাল করে পরিষ্কার (cleansing) করে নিন। ন্যাচারাল সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু ব্যবহার করলে ভাল ফল মিলবে। তার পর কন্ডিশনার লাগিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এ বার অ্যাপল সাইডার ভিনিগার (apple cider vinegar) আর জলের মিশ্রণটা চুলে ঢেল নিন। এটা কিন্তু ধোবেন না। চুলের মধ্যে থাকা ন্যাচারাল অয়েলস দূর না করেই চুলকে পরিষ্কার করে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার। হেয়ার ডিটক্স (hair detox) করার সব চেয়ে সোজা উপায় এটা।
মধুর শ্যাম্পু
হেয়ার ডিটক্স এই রেসিপির জন্য লাগবে-
১ টেবিল চামচ মধু
৩ টেবিল চামচ ফিল্টার্ড ওয়াটার
আপনার পছন্দমতো যে কোনও এসেন্সিয়াল অয়েল (অপশনাল)
জল আর মধু মিশিয়ে নিতে হবে। এ বার চুলটা ধুয়ে ভিজিয়ে নিন। তার পর ওই মধু জলের মিশ্রণ চুলে দিন। স্ক্যাল্পে মাসাজ করে চুলের আগা পর্যন্ত ভাল করে লাগিয়ে নিন। এ বার ইষদুষ্ণ গরম জলে বা ঠান্ডা জলে চুল ধুয়ে নিন। তবে অ্যাপল সাইডার ভিনিগারের (apple cider vinegar) মিশ্রণ দিয়ে চুল (hair) ধুলে আরও ভাল হবে। আসলে মধু আপনার চুলকে নরম আর ন্যাচারালি ময়েশ্চারাইজ করবে। আর বাজারের কেমিক্যাল শ্যাম্পু ব্যবহার না করে এটা ব্যবহার করলে চুল মজবুত আর সুন্দর হবে। তাই চুল ধোয়ার সময় শ্যাম্পুর (shampoo) বদলে এটা ব্যবহার করা যায়।
লেবু-শসা
১টা বড় লেবু
১টা মাঝারি মাপের শসা
আপনার পছন্দের এসেন্সিয়াল অয়েল
শসা আর লেবুর খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে নিন। এ বার এসেন্সিয়াল অয়েলের মধ্যে সেগুলোকে দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এ বার শ্য়াম্পুর বদলে এই মিশ্রণই শ্যাম্পু হিসেবে ব্যবহার করুন। কারণ লেবুর মধ্যে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড আপনার স্ক্যাল্পকে ভাল করে পরিষ্কার করবে। আর শসা স্ক্যাল্পকে ভাল রাখে। বিশেষ করে যাঁদের অয়েলি স্ক্যাল্প (scalp) তাঁদের জন্য এটা পারফেক্ট হেয়ার ডিটক্স (hair detox)।
দারচিনি ডিটক্স মাস্ক
এর জন্য লাগবে-
আধ চা-চামচ দারচিনি গুঁড়ো
১ চা-চামচ বেকিং সোডা
২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল
এ বার তিনটি উপকরণ ভাল ভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। যাতে একটা মসৃণ পেস্ট তৈরি হয়। এ বার এটা আপনার মাথার স্ক্যাল্পে মাসাজ করুন। তার পর চুল (hair) কয়েকটা সেকশনে ভাগ করে মাসাজ করুন। কুড়ি মিনিট মতো রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন। এটা চুল ভাল করে পরিষ্কার করে এবং চুলকে নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।
নারকেলের দুধ আর অ্যালো ভেরা শ্য়াম্পু
এই ডিটক্স শ্যাম্পু বানাতে প্রয়োজন-
এক ক্যান নারকেলের দুধ
অ্যালোভেরা জেল
আপনার পছন্দমতো কোনও এসেন্সিয়াল অয়েল
একটা বড় কাচের বাটিতে সব উপকরণ নিয়ে ফেটিয়ে নিন। এ বার একটা আইস কিউব ট্রে-তে রেখে ফ্রিজে রাখুন। জমাট বাঁধলে একটা কিউব বার করে নিয়ে রেফ্রিজারেটরের মধ্যেই একটা কাচের বড় বাটিতে কিউবটা রেখে দিন। তার পরের দিন এই মিশ্রণটা শ্যাম্পুর বদলে ব্যবহার করুন। স্ক্যাল্প আর চুলে মাসাজ করুন। এই শ্যাম্পু আপনার স্ক্যাল্পের pH ব্যালান্স করে আর চুলের ময়লা (cleansing) দূর করে।
ছবি সৌজন্যে: পেক্সেলস,পিন্টরেস্ট ও ইউটিউব
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি এবং বাংলাতেও!