দোল উৎসব বা হোলি উৎসব হল প্রাণের উৎসব। ভারতে এই রঙের মেলা বা উৎসব পালিত হয় বসন্তকালে। ইংরিজি ক্যালেন্ডারে তারিখ পড়ে ফেব্রুয়ারি বা মার্চ মাসে। পশ্চিমবঙ্গ তথা বাংলায় যেদিন দোল পূর্ণিমা (Dol Purnima in West Bengal) বা দোল উৎসব পালত হয় বাকি দেশে তার পরের দিন হোলি উৎসব পালিত হয়। সবাইকে এক রঙে রাঙিয়ে দেওয়ার এই উৎসব যেন সম্প্রীতির চিহ্ন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে পালন করতেন বসন্ত উৎসব (Basanta Utsav)। গোটা বোলপুর রাঙিয়ে দেওয়া হত আবির দিয়ে, গাওয়া হত গান। সেই প্রথা আজও বর্তমান।সাড়া বিশ্ব নত মস্তকে স্বীকার করেছে যে এরকম আনন্দময় উৎসব সত্যিই কম দেখা যায়। হোলি খেলা তাই বিদেশীদের কাছে একটি বিস্ময়। সেই কারণেই বহু পর্যটক এই সময় আমাদের দেশে আসেন বসন্ত উৎসব বা দোল উৎসব (Dol Purnima) দেখবেন বলে। হোলির ইতিহাস বলছে দোল উৎসব বা হোলি খেলা আদতে একটি বৈষ্ণব প্রথা। কথিত আছে বৃন্দাবনে দোল পূর্ণিমা বা ফাল্গুনী পূর্ণিমায় শ্রী রাধিকা ও অন্যান্য গোপিনীদের সঙ্গে আবির ও গুলাল নিয়ে খেলায় মেতেছিলেন। সেখান থেকেই এই খেলার চল চলে আসছে। তবে এখন আর ধর্মের বাঁধ নেই। সবাই একসঙ্গে এক হয়ে হোলি বা দোল উৎসবে মেতে ওঠেন। এই দিনে মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্যদেবের জন্ম বলে এঁকে অনেকে গৌর পূর্ণিমাও বলেন। যাঁদের বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করা রাধা-মাধব আছেন তাঁদের বাড়িতে দোল পূর্ণিমার গান গাওয়ার রেওয়াজ আছে। হোলি খেলা বা দোল উৎসবের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে হোলির গান। আবার যেহেতু এই উৎসব বসন্তকালে হয়, তাই রবি ঠাকুর লিখে গেছেন অসংখ্য বসন্তের গান বা বসন্ত উৎসবের গান। বাংলা, হিন্দি সহ ভারতের অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষায় হোলির গান বা দোল উৎসবের গান লেখা হয়েছে। বাংলা এবং হিন্দি ছবিতেও সময় সময়ে হোলির গান বা দোলের গান (Bengali Holi Songs) ব্যবহৃত হয়েছে। সেই গানের মধ্যে কয়েকটা রীতিমতো ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। আপনাদের জন্য সেরকমই কয়েকটা গান বেছে নিয়ে এসেছি আমরা।
ছবি সৌজন্যে: ক্যানভা
হোলির গান আমরা যখনই বলি, তখনই মনের মধ্যে কতগুলো সুর যেন আপনা থেকেই গুনগুনিয়ে ওঠে। বাংলায় যদিও হোলি শব্দটি ছাড়া বসন্ত উৎসব, দোল বা দোল পূর্ণিমা (Dol Purnima) এই শব্দবন্ধও ব্যবহৃত হয়। তবে শব্দের ব্যবহার যাই হোক না কেন, দোল উৎসব বা হোলির গান বলতে বা বলা চলে বাংলা হোলির গান বলতে এই দশটি বাংলা গানের কথা আপনার মনে পড়বেই। আসুন দেখে নেওয়া যাক সেই সেরা দশটি বাংলা হোলির গান (Holi Songs In Bengali)।
বলতে বাধা নেই বাংলা হোলির গান বলতে প্রথমেই এই সুপারহিট গানটার কথা মনে পড়ে। অচেনা ছন্দে অপর্ণা সেন। আর তাঁর সঙ্গে ভিক্টর ব্যানার্জির দারুণ কেমিস্ট্রি। প্রেমিক প্রেমিকাদের প্রিয় গান এটি। আর হোলির মেজাজের সঙ্গে খুব সুন্দর খাপ খেয়ে যায় গানের কথাগুলোও।
আবার অপর্ণা সেন। কিন্তু তখন তাঁর বয়স অনেক কম। আর তাঁর হিট জুটি ছিল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সাথে। মজার কথা হল ছবিতে সৌমিত্রর নামও কিন্তু শ্যাম। দুর্দান্ত কমিক টাইমিংসয়ে যোগ্য সঙ্গত চিন্ময় রায়, অনুপ কুমার আর রবি ঘোষের।
বাংলা গান নিয়ে কথা হচ্ছে আর সেখানে বাঙালির ম্যাটিনি আইডল উত্তম কুমার থাকবেন না, তা কী করে সম্ভব। তাই মঞ্জরী অপেরা ছবির এই হোলির গান (Bengali Holi Songs) বাদ দেওয়া গেল না। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের স্বর্গীয় কণ্ঠস্বর কে ভুলতে পারে।
দাদার কীর্তি ছবিটার সঙ্গে বাঙালির কী যেন একটা মায়া জড়িয়ে আছে। তাই ছবিটা কেউ আজও ভুলতে পারেনি। গানটা খুব সুন্দর (বসন্তের গান), কারণ এখানে হিন্দি ও বাংলা দুটোকেই মিলিয়ে দিয়েছেন গীতিকার ও গায়ক হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।
বাঙালির প্রাণের ঠাকুর হলেন রবি ঠাকুর। তাঁর সোনার কলম ছুঁয়ে গেছে সব ঋতুকেই। তাই তাঁর লেখা এই বসন্ত উৎসবের গান অবশ্যই থাকবে আমাদের তালিকায় (Holi Songs In Bengali)। দোল উৎসব হল সবাইকে এক রঙে রাঙিয়ে দেওয়ার উৎসব আর কবি তাঁর গানে সেটাই বলছেন।
বেশ মজাদার এই গানটি। ছবিতে দেখা যায় যে মঞ্চে অনুষ্ঠান হচ্ছে। যেখানে রাধা আর কৃষ্ণ দোল উৎসব পালন করছেন। তবে রাধা এখনও ঘরের কাজ শেষ করতে পারেননি তাই সকাল্বেলা কৃষ্ণের রং খেলতে আসায় ছদ্মকোপ দেখাচ্ছেন তিনি।
মাঠের মধ্যে জমিয়ে রং খেলছে ছবির নায়ক, নায়িকা ও বাকিরা। একটু হিন্দি ছবির ধাঁচে দৃশ্যটির নির্মাণ হয়েছে। মানে সবাই সাদা পোশাক, থালায় করে আবির ওড়ানো এইসব।তবে এসব তো বাড়তি আয়োজন, আসল হল মন দিয়ে দোল পূর্ণিমা (Dol Purnima) পালন কড়া। তাই সব কিছু বাদ দিয়েও গানখানা (বসন্তের গান) শুনতে মন্দ লাগে না।
দলবল নিয়ে হোলি খেলছেন প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়। গানের সুরে খুব একটা তারতম্য নেই। এমনিতে আধুনিক বাংলা হোলির গান যেমন হয় তেমনটাই। হোলি এসে গেছে আর তাই আনন্দ বাঁধ ভেঙে গেছে এটাই বলা হচ্ছে গানের মাধ্যমে।
রবি ঠাকুর এখানে যথার্থ কথা বলেছেন। বসন্ত ঋতু যে কবিতার ঋতু। তাই তিনি বসন্তকে আবাহন করেছেন। তাঁকে স্বাগত জানিয়েছেন রং দিয়ে। এই উৎসব যে সবার উৎসব সেটাই কবি খুব সহজ করে বলতে চেয়েছেন। সব ধর্ম, সব বর্ণের মানুষ এখানে একত্রে যোগ দিতে পারেন। তাই তো বলা হচ্ছে সবার রঙে রং মিশিয়ে সবাই আপন করে নিতে।
আবার একটা জবরদস্ত হোলির গান। সবাই মিলে জমিয়ে নাচ গান আর হোলি খেলার মুহূর্ত। গানের দৃশ্য আর বাকি সব কিছু রূপায়িত হয়েছে একটু ভোজপুরি স্টাইলে। গানের লয় (Bengali Holi Songs) আর সুরও অনেকটা ওইরকম, তবে শুনতে মন্দ লাগে না। যদিও রঙের ব্যাবহার আরেকটু বেশি হলে ভাল হত।
বাংলা হোলির গান যেমন আপনার মন ছুঁয়ে যায়, ঠিক সেরকমই হিন্দি হোলির গানও কিছু কম নয়। বাংলার দোল উৎসব যেমন খুব ধুমধাম করে পালিত হয় সেরকম গোটা দেশে হোলি খেলা বা হোলি উৎসব পালিত হয়। তাই দশটা সেরা বাংলা হোলির গান যেমন আপনাদের শনালাম এবার শোনাব সেরা পাঁচটি হিন্দি হোলির গান।
এই গানটা নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার আছে কি? এপিক ছবি, এপিক গান। উপরি পাওনা হেমা মালিনির নাচ। তাছাড়া ছবির গল্পের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত গানটি। রঙিন দৃশ্যে জয়া ভাদুড়ির শ্বেতশুভ্র শাড়ি আর আমাদের অ্যাংরি ইয়াং ম্যানের তাঁর দিকে তাকানো জাস্ট কেয়া বাত!
অমিতাভ বচ্চন হলেন এভারগ্রিন। সেই শোলে ছবির পর আবার বাগবান ছবিতে তিনি মাত করে দিলেন। আর এবার তিনি শুধু অভিনয় করলেন না, রীতিমতো গান গেয়েও চমকে দিলেন ভক্তদের। তাছাড়া গানের কথা, সুর এবং দৃশ্যায়ন সব কিছুই লা জবাব।
এই গানটি বলিউডের হোলি সংক্রান্ত সব গানের ধারা ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। হোলির দৃশ্য হলেই নায়িকাকে সাদা শাড়ি বা সালওয়ার কামিজ পরতে হবে তা কিন্তু নয়। জিন্স পরেও দিব্যিও বন্ধুদের সঙ্গে জমিয়ে হোলি খেলা যায়। তাছাড়া রণবীর আর দীপিকার দুর্দান্ত রসায়নও এই গানের উষ্ণতা কয়েকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে।
এই গানটি নিয়ে এবং এই ছবিটি নিয়ে গসিপ কম হয়নি। শোনা যায় সেই সময় নাকি সত্যিই রেখার সঙ্গে জমিয়ে প্রেম করছিলেন বিগ বি। আর সেটাই পর্দায় তুলে ধরতে তাঁদের অসুবিধে হয়নি। আবার কেউ বলেন সবটাই ছবির স্বার্থে প্রচার মাত্র। তবে রটনা বা ঘটনা যাই হোক না কেন, গানটি চমৎকার, সেই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
রাজেশ ‘কাকা’ খান্নার অবিস্মরণীয় স্টাইল। আর তার সঙ্গে কিশোরকুমার আর লতা মঙ্গেশকরের অমর কণ্ঠস্বর। আশা পারেখও কিছু কম যান না। যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন তিনিও। তবে বলিউডের প্রথম সুপারস্টারের ম্যানারিজম অনবদ্য করে তুলেছে এই গানকে।
এটিও পড়ুন :
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আমাদের এক্কেবারে নতুন POPxo Zodiac Collection মিস করবেন না যেন! এতে আছে নতুন সব নোটবুক, ফোন কভার এবং কফি মাগ, যেগুলো দারুণ ঝকঝকে তো বটেই, আর একেবারে আপনার কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে। হুমম…আরও একটা এক্সাইটিং ব্যাপার হল, এখন আপনি পাবেন ২০% বাড়তি ছাড়ও। দেরি কীসের, এখনই POPxo.com/shopzodiac-এ যান আর আপনার এই বছরটা POPup করে ফেলুন!
Image Source: Instagram