বাইরে তাকালেই যেন মনে হয়, কেউ যেন চারিদিকে আগুন ঢেলে দিচ্ছে! বেরোনোর ইচ্ছেটাই চলে যায়। কিন্তু এসি ঘর থেকে বেরিয়ে এসি অফিসে ঢোকা পর্যন্ত মাঝের যে সময়টা, সেই সময়টাই হচ্ছে সব থেকে চাপের। কারণ এই গরমের (Summer) সময়টাতেই মনে হয় যেন সব এনার্জি চলে যায়। স্কিনে (Skin) জ্বালা শুরু হয়ে যায়। স্কিনের নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। তো যা-ই হোক, আবার এসি-তে ঢুকে গেলে শান্তি। কিন্তু এই গরমের (Summer) মাসগুলোয় যেটা দরকার, সেটা হল- শরীরকে ভিতর থেকে ঠান্ডা রাখা। তা-ও ঘরোয়া উপায়ে। নানা রকম খাবার-শরবতের সাহায্য়ে। তবেই আপনার স্কিনও ঠান্ডা থাকবে। জেনে নেওয়া যাক, এই গরমে (Summer) শরীর আর স্কিন ঠান্ডা (Cool) রাখতে গেলে কী কী করতে হবে বা কী কী করতে হবে।
শরীরকে ঠান্ডা রাখতে
ঘরোয়া উপায়ে শরীরটাকে ঠান্ডা রাখার জন্য এই পদ্ধতিগুলো মেনে চলুন। অতিরিক্ত তেলমশলা দেওয়া খাবার, ক্যাফিন যুক্ত পানীয়, অ্যালকোহল এই সময়টায় এড়িয়ে চলুন।
কোল্ড ফুট বাথ
এই গরমে (Summer) শরীর ঠান্ডা (Cool) রাখতে অন্যতম দারুণ দাওয়াই হল কোল্ড ফুট বাথ। কোল্ড ফুট বাথ পা ডুবিয়ে বসে থাকুন। আর কোল্ড ফুট বাথ বানানোর জন্য একটা বালতিতে জল নিয়ে ঠান্ডা জল আর আইস কিউব যোগ করুন। আর তার মধ্যে কয়েক ফোঁটা পিপারমিন্ট এসেন্সিয়াল অয়েল যোগ করতে পারেন। তার মধ্যে পা ডুবিয়ে বসে থাকুন। ২০ মিনিট মতো রিল্যাক্স করুন।
ডাবের জল
এই সময় শরীর ঠান্ডা (Cool) করতে ডাবের জল খাওয়া দরকার। কারণ এর ভিতরে থাকা ভিটামিন, মিনারেলস ও ইলেকট্রোলাইটস আপনাকে রিহাইড্রেট আর রিএনর্জাইজ করে। আপনার হিট স্ট্রেসও কমিয়ে দেয়।
পিপারমিন্ট চা
পিপারমিন্টের মধ্যে থাকা কুলিং উপাদানও শরীর (Body) ঠান্ডা রাখার জন্য দারুণ। তাই এই সময় পিপারমিন্ট চা তৈরি করে রাখতে পারেন। সে গরমই হোক অথবা আইসড পিপারমিন্ট চা হোক। সেই চা-টাই সারা দিন ধরে খেতে হবে।
হাইড্রেটিং খাবার
এই সময়টা ঝাল-মশলা যুক্ত খাবার একেবারেই না। হাইড্রেটিং ফল-সবজি খেতে হবে। যে সব ফল অথবা সবজিতে জলের পরিমাণ বেশি, সেগুলো বেশি করে খাবেন। এই যেমন- তরমুজ, শসা, জামরুল, পটল, ঝিঙে এ সব বেশি করে খাওয়া উচিত এই সময়টায়।
ভিটামিন-সি যুক্ত ফল
এই গরমের (Summer) কয়েকটা মাস লেবুজাতীয় ফল মানে ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল খেয়ে দেখুন। দেখবেন, এতে শরীর ঠান্ডা থাকছে। কারণ এটা বাইরের তাপমাত্রা আর আপনার দেহের তাপমাত্রার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে। ফলে বুঝতেই পারছেন, গরমের দিনে খাবারের সঙ্গে লেবু অথবা লেবুর শরবত কিন্তু মাস্ট!
দুধ-মধু
শরীর (Body) ঠান্ডা (Cool) রাখতে এক গ্লাস ঠান্ডা দুধে এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে খান।
বেদানার রস
রোজ বেদানার রস শুধু অথবা আমন্ড অয়েল মিশিয়ে খেতে থাকুন। এতে আপনার শরীরের (Body) তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আর সব ধরনের বয়সের মানুষই এটা খেতে পারেন।
দই
গরম কালে দই তো দারুণ। স্বাস্থ্যকর খাবার আবার শরীরকেও ঠান্ডা রাখে। আর বাজার থেকে কিনে না হয় বাড়িতেও বানিয়ে ফেলতে পারেন। দইয়ের শরবত থেকে শুরু করে দই ভাত- সব রকম ভাবে খেতে পারেন। অথবা মাছ-মাংসের পদেও দই অ্যাড করতে পারেন। দারুণ স্বাদও হবে আবার সেটা হেলদিও বটে!
আখের রস
গরম কালে শরীর ঠান্ডা রাখতে আখের রসও দারুণ উপকারী। প্রচণ্ড রোদে বেরিয়ে হাঁসফাঁস দশা হলে আখের রসে চুমুক দিন। দেখবেন, শরীরও ঠান্ডা হবে আর এনার্জিও পাবেন।
কাঁচা আম
এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ইলেকট্রোলাইট থাকে। কাঁচা আমের শরবত তাই আপনার শরীরকে ঠান্ডা করবে। তা ছাড়াও কাঁচা আম কেটে বিট নুন দিয়েও খেতে পারেন।
স্কিনকে ঠান্ডা রাখার উপায়
শরীরকে তো ভিতর থেকে ঠান্ডা রাখা হল। এতে স্কিনও (Skin) সুস্থ থাকবে। কিন্তু স্কিনের জ্বালা-চুলকানি এ সব চট করে কমাতে এই টোটকাগুলো ট্রাই করুন। আরাম পাবেন।
বরফ
স্কিনকে ঠান্ডা রাখতে আইস কিউব নিয়ে স্কিনে ঘষতে থাকুন। এমনকি কোথাও rash বেরোলে সেখানে আইস কিউব নিয়ে ঘষে নিন। তাতে rash সঙ্গে সঙ্গে গায়েব হয়ে যাবে। স্কিনেও আরাম হবে।
শসা
শরীরকে (Body) ঠান্ডা রাখার জন্য শসা তো খাবেনই। আর স্কিনকে (Skin) ঠান্ডা রাখার জন্যও শসার প্যাক লাগাতে পারেন। ফ্রিজ থেকে একটা ঠান্ডা শসা নিয়ে সেটা পিষে রসটা বার করে নিন। এ বার মুখে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নিন। এটা আপনার স্কিনকে (Skin) হাইড্রেট করবে।
অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরার গুণ আমাদের সকলেরই প্রায় জানা রয়েছে। শরীরকে ঠান্ডা (Cool) রাখতেও সেই অ্যালোভেরা। ধরুন বাইরে চড়া রোদ থেকে ঘরে ফিরেছেন, সেই সময় স্কিনে (Skin) অ্যালোভেরা জেলটা লাগিয়ে নিন। অ্যালোভেরা পাতা থেকে জেলটা বার করে নিয়ে অথবা বাজার থেকে অ্যালোভেরা জেল কিনে এনেও লাগাতে পারেন। অ্যালোভেরা জেল ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে নিলে আরও ভাল। আর অ্যালোভেরা জুসও থেকে পারন। এক কাপ জলে ২ টেবিলচামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে একটা পানীয় তৈরি করে নিয়েও খেতে পারেন। এতে শরীর ঠান্ডা হবে।
টোম্যাটো রস-পেঁপে
সান ট্যান থেকে মুক্তি দেবে টোম্যাটোর রস আর পেঁপে। টোম্যাটোর রস আর অল্প একটু পেঁপে থেঁতলে নিয়ে মিশিয়ে নিন। এ বার এই পেস্ট মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
গোলাপ জল
এই গরমের সময়টায় ফেস মিস্ট দুর্দান্ত কাজ দেয়। তাই ফেস মিস্ট হিসেবে গোলাপ জল ব্যবহার করতে পারেন। ঠান্ডা গোলাপ জলে তুলোর বল ডুবিয়ে মুখের স্কিনে (Skin) লাগাতে থাকুন। অথবা একটি ছোট্ট স্প্রে বোতলে গোলাপ জল ভরে নিয়ে মুখে স্প্রে করতে থাকুন। স্কিন (Skin) ঠান্ডা (Cool) থাকবে।
ছবি সৌজন্যে: পেক্সেলস ও পিক্সঅ্যাবে
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি এবং বাংলাতেও!