আশেপাশে পেয়ারের লোকেরা থাকলে, তাঁদের তৈরি ‘চাপ’ও একটু থাকবে বই কী! তার উপর আজকের দুনিয়ায় যেখানে সবাই ‘শো অফ’ করতেই ব্যস্ত, সেখানে অন্য়কে অসম্মান করার চক্করে Peer Pressure তো বাড়বেই। আর সেই কারণে ব্রেনের সিটি বেজে যেতে যে বাধ্য, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তাই তো খুড়তুতো-মাসতুতো ভাই-বোন হোক, কী বন্ধু-বান্ধব, কারও সঙ্গেই নিজের তুল্যমূল্য বিচার করতে যাবেন না। অমুক মাসির তমুক ছেলে ইনফোসিসে চাকরি করে, আর আমি ইন্ডেন গ্যাস, এমনটা ভেবে নিজের চাপ বাড়ালে কিন্তু আপনারই ক্ষতি। কারণ, ইঁদুর দৌড়ে সামিল হলে মেন্টাল প্রেশার তো বাড়বেই, সঙ্গে ডিপ্রেশন এবং স্ট্রেসও লেজুড় হবে। তখন সামলে উঠতে পারবেন তো? তাই তো বলি, পারিবারিক চাপ হোক, কী সমাজিক, কোনও প্রেশারেই মাথা নত করবেন না যেন! বরং মাথায় রাখবেন, সকলেই নিজের নিজের ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়। তাই তো কেউ আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট হয়, তো কেউ আর্কিমিডিস। এই কারণেই, পিয়ার প্রেশার (peer pressure) গুরুত্ব দেওয়াটা এক প্রকার বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। যদিও এমন জ্ঞান দেওয়াটা যতটা সহজ কাজ, আদতে সমাজের চাপ এবং কাছের মানুষদের প্রত্যাশাকে উপেক্ষা করাটা অতটা সহজ নয়। তাই তো এবার এমন কিছু টিপসের (Tips) সন্ধান দিতে চলেছে, যা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চললে পিয়ার প্রেশারকে জোড়া গোল দিতে পারবেই পারবেন।
সমালোচকদের দূরে রাখাটাই প্রথম কাজ
‘ওর ছেলে দেখ কেমন ঝপাং-ঝপাং করে প্রমোশন পাচ্ছে। বিদেশও যাচ্ছে। আর এদিকে পিসির ছেলেটার হাল দ্যাখ! কবে যে কিছু করে উঠতে পারবে, জানা নেই!’ অন্দরমহলে কান পাতলে নিজেকে নিয়ে এমন অনেক সমালোচনা হতে শুনবেন। ভাল কথা বললেও যেমন আহ্লাদিত হয়ে যাবেন না, তেমনই খারাপ কিছু কানে এলেও পাত্তা দেবেন না যেন! কারণ, নিজেকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, সেটা আপনার থেকে ভাল কেউ জানে না। তাই কেউ ভাল বললো, কী মন্দ, তাতে কিছু এসে যাওয়ার কথা নয়। নেতিবাচক কথা শুনে খুব খারাপ লাগলে নিজের আশেপাশে একটা দেওয়াল তুলে নেবেন। না না আসল দেওয়াল নয়, দূরত্বের দেওয়াল। পরিবারের যাঁদের সঙ্গে কথা বলতে মন চায়, কেবল তাঁদের সঙ্গে সময় কাটান, আর বাকিদের একটু উপেক্ষা করা শুরু করুন। দেখবেন, একদিন-দু’দিন সমালোচনা করার পরে যখন পাত্তা পাবে না, তখন আপনা থকেই দূরে পালাবে। মোট কথা নেতিবাচক কথা কানে তোলা একেবারেই চলবে না।
আরও পড়ুন: এই ১০টি শারীরিক সমস্যা কিন্তু আসলে মানসিক চাপের লক্ষণ হতে পারে
সমালোচনার চাপে পড়ে হঠকারী সিদ্ধান্ত নেবেন না
খেয়াল করে দেখবেন, অনেক সময়ই মা-বাবাদের কাছের মানুষরা তাঁদের সামনেই আপনাদের নিয়ে এমন কিছু কথা বলে ফেলেন, যা বাবা-মায়ের মনে লেগে যায়। এমন পরিস্থিতিতে বাবা-মাকে বোঝান। ভবিষ্যতে আপনার কী কী প্ল্যান রয়েছে, সে সম্পর্কে তাঁদের খুলে বলুন। আপনার দ্বারা যে এর থেকে বেশি কিছু করে ওঠা সম্ভব হবে না, সেকথাও স্পষ্ট করে তাঁদের জানিয়ে দিন। এই ভাবে মন খুলে বাবা-মার সঙ্গে কথা বললে দেখবেন, ওঁদেরও একটু চাপ কমবে। তা ছাড়া বাবা-মাও বুঝে যাবেন যে, অন্যের কথা শুনে এসে আপনার উপর চাপ সৃষ্টি করে কোনও লাভ নেই। তখন দেখবেন, বাবা-মায়ের উপরে তো বটেই, আপনার উপরেও পিয়ার প্রেশারের তেমন কোনও প্রভাবই পড়বে না। আর এই সব না করে যদি পিয়ার প্রেশারের চাপে পড়ে বাকিদের কথা শুনে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করে দেন, তা হলে কিন্তু একদিন না একদিন গাড্ডায় ঠিক পরবেই পড়বেন। তাই চাপে পড়ে নয়, বরং নিজের ক্ষমতা বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
নিজের সিদ্ধান্তকে সম্মান করতে শিখুন
আপনি যে স্ট্রিমেই পড়াশোনা বা চাকরি করুন না কেন, সেটা নিশ্চয়ই আপনারই সিদ্ধান্ত? তা হলে সেই নিয়ে যখন কেউ সমালোচনা করছে, তখন তাতে মাথা ঘামাচ্ছেন কেন? কোনও বন্ধু সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করে বড় মাইনের চাকরি পেতেই পারেন। কিন্তু আপনার যদি ফোটোগ্রাফার হওয়ার শখ থাকে, তা হলে সে পথেই হাঁটুন। হয়তো বন্ধুর কাছ থেকে অল্প টাকা রোজগার করবেন, কিন্তু দিনের শেষে দেখবেন খুশি মনে ঘুমোতে যেতে পারছেন। একবার ভাবুন তো এর থেকে বড় আয় আর কিছু হয় কি? তাই পিয়ার প্রেশারের চাপে ভুলেও ভিড়ের আংশ হবেন না। বরং ঠান্ডা মাথায় ভাবুন আপনি কী করতে চান। আর সেই মতো এগিয়ে যান। সমালোচনা হবে, তুল্যমূল্য বিচারে আপনাকে নিচু দেখানোর চেষ্টাও করবেন কিছু আত্মীয়-বন্ধু। কিন্তু তাই বলে নিজের সিদ্ধান্তকে অসম্মান করতে যাবেন না যেন! বরং যাঁরা সমালোচনা করছেন, তাঁদের উপেক্ষা করে সেই সব আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে বেশি সময় কাটান, যাঁরা আপনার সিদ্ধান্তে পাশে রয়েছে। দেখবেন, ভাল মানুষদের সঙ্গে সময় কাটালে ভাল চিন্তাই আসবে, তাতে করে পিয়ার প্রেশারই হোক, কী মেন্টাল প্রেশার, কোনও চাপই ধারেকাছে ঘেঁষতে পারবে না।
সবাইকে খুশি করা আপনার কাজ নয়
যদি ভেবে থাকেন সবার মন বুঝে চললে পরিবারের প্রতিটা সদস্য, সব বন্ধু, সব প্রতিবেশী আপনার গুণকীর্তন গাইবে, তা হলে ভুল ভাবছেন। কারণ, জীবনের প্রতিটা মোড়েই সমালোচকদের দেখা ঠিক পেয়েই যাবেন। তাঁরা কিন্তু আপনার তুলোধোনা করতে পিছপা হবেন না। তাই পিয়ার প্রেশারের ভয়ে সকলকে তুষ্ট করে চলাটা বোকামি। তাছাড়া সকলের মন যে আপনি জিততে পারবেন, এমন নয়। তাই সেই চেষ্টা করাটাও উচিত নয়। আপনার সমালোচনা করছে, করুক না, ক্ষতি নেই! আপনি নিজের পথে এগিয়ে যান। সেই সঙ্গে অন্যের মন জয় করার পিছনে সময় নষ্ট না করে বরং নিজেকে স্কিলকে কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, সেই চেষ্টায় ঘাম ঝরান। দেখবেন, সফল আপনি হবেই হবেন।
আরও পড়ুন: জানেন কি, প্রিয়জনের কাছ থেকে নিয়মিত জাদু কী ঝপ্পি কমিয়ে দিতে পারে স্ট্রেস ও টেনশন?
টাকাকে নয়, সুখকে গুরুত্ব দিন
‘ও দ্যাখ কত টাকা মাইনে পায়, আর তুই সেখানে হাজারের কোটাতেই আটকে!’ এমন কথা কানে এলে মাথা গরম করবেন না। বরং ঠান্ডা মাথায় বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত। তাতে অকারণ ঝুট-ঝামেলা বাড়ার আশঙ্কা কমবে বই কী! তা ছাড়া যে কাজটা করে আপনি আনন্দে আছেন, তা অন্যের কথা শুনে ছেড়ে দিয়ে টাকার পিছনে দৌড়ানোটা কি বোকামি মনে হয় না? তাই যে যাই কিছু বলুক না কেন, আপনি আপনার জীবন থেকে কী চান, সেটা একবার ঠান্ডা মাথায় ভেবে নিন। টাকা চাইলে টাকার পিছনে দৌড়ান, ক্ষতি নেই। আর যদি কাজের সুখ পেতে চান, তাহলে টাকার নয়, মনের কথা শুনুন।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এসে গেল #POPxoEverydayBeauty – POPxo Shop-এর স্কিন, বাথ, বডি এবং হেয়ার প্রোডাক্টস নিয়ে, যা ব্যবহার করা ১০০% সহজ, ব্যবহার করতে মজাও লাগবে আবার উপকারও পাবেন! এই নতুন লঞ্চ সেলিব্রেট করতে প্রি অর্ডারের উপর এখন পাবেন ২৫% ছাড়ও। সুতরাং দেরি না করে শিগগিরই ক্লিক করুন POPxo.com/beautyshop-এ এবার আপনার রোজকার বিউটি রুটিন POP আপ করুন এক ধাক্কায়…