আপনি যতই আধুনিকা হোন, একথা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই যে, সরস্বতী পুজোয় বাসন্তী রংয়ে নিজেকে মুড়বেনই। তা সে আপনি কলেজফেরত হোন কিংবা সদ্য চাকরিতে জয়েন করা মহিলা, হাউজওয়াইফ হোন কিংবা মধ্যবয়স্কা, বাঙালি জন্ম থেকে যে কয়েকটি পুজোর সঙ্গে পরিচিত, তার মধ্যে একটি হল এই সরস্বতী পুজো (Saraswati puja)। আজ না হয় এটিকেই বাঙালির ভ্যালেন্টাইনস ডে হিসেবে ধরে নেওয়া হয়েছে, কিন্তু পড়াশোনা-প্রিয় বাঙালির কাছে এই দিনটি বিদ্যার দেবীকে সন্তুষ্ট করার দিনই আছে এখনও। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের কাছে এই দিনটি স্কুলে ইউনিফর্ম ছাড়া অন্য পোশাকে ফুরফুরে হয়ে যাওয়ার দিন। এদিন মূলত বাসন্তী রংয়ের (yellow) পোশাক পরেন সকলে এবং সেটিও সাধারণত শাড়িই হয়। কিন্তু আমরা বলছি, বাসন্তী রংয়ের পোশাক পরুন, ক্ষতি নেই। দিনটির নাম যখন বসন্ত পঞ্চমী, তখন কাঁচা হলুদ রংয়ের পোশাক পরাটাই ভাল। আমরা এখানে নিয়ে এসেছি সরস্বতী পুজোর ফ্যাশন গাইড, এখানে ৯টি আউটফিট আইডিয়া (Outfit ideas) দেওয়া হল, তা-ও আবার বিভিন্ন বডি শেপের (body shape) কথা মাথায় রেখে। সঙ্গে রইল সেই আউটফিট কীভাবে অ্যাকসেসরাইজ করবেন, সেই আইডিয়াও…
আরও পড়ুন: পুজো থেকে পালা পার্বণ, কানের সাজে হ্যান্ড পেন্টেড দুলের চমক
যা-ই বলুন, তা-ই বলুন, সরস্বতী পুজোর দিন হলুদ রংয়ে সাজতেই ভাল লাগে এবং সেই সাজ যদি শাড়ির সাজ হয়, তা হলে তো কথাই নেই। কিন্তু শাড়ির সাজেও আনুন নানা ধরনের চমক। আপনার বডি শেপ অনুযায়ী বেছে নিন শাড়ির মেটেরিয়াল। কীভাবে, বাতলে দিচ্ছি আমরা…
১) হলুদ রংয়ের ক্রেপ, জর্জেট, শিফন, যাঁরা রোগাসোগা, তাঁদের জন্য
২) মাল্টিকালার হলুদ জমির ডিজিট্যাল প্রিন্ট লিনেন, একটু ভারীক্কি চেহারার জন্য
৩) ভারী সিল্ক, যাঁরা না রোগা, না মোটা, তাঁদের জন্য
যদি আপনি একটু বেশিই রোগা হন, তা হলে হলুদ রংয়ের ক্রেপ, জর্জেট কিংবা শিফন শাড়িতে হয়ে উঠুন আধুনিকা। কারণ, এই শাড়ি আপনার রোগা চেহারাকে করে তুলবে আরও আকর্ষক। শাড়ির জমি হতে পারে একরঙা, আবার তাতে থাকতে পারে কনট্রাস্ট কালারের প্রিন্টও। ব্লাউজ হতে হবে অতি অবশ্যই কনট্রাস্ট কালারের, আর লম্বা হাতার। স্লিভলেস আপনাদের চলবে না। চুল খুলে রাখুন। কপালে ছোট্ট টিপ, কিন্তু গাঢ় রংয়ের লিপস্টিক, হালকা মেকআপ আর গয়না…ব্যস, ভিড়ের মধ্যেও আপনার দিকে সকলের নজর যাবেই।
যাঁদের চেহারা একটু ভারীক্কি গোছের, তাঁরা পরতে পারেন হলুদ রংয়ের ডিজিট্যাল প্রিন্ট লিনেন। এই শাড়ি শরীরের একেবারে সেঁটেও থাকবে না, ফুলেও থাকবে না। ফলে আপনার শরীরে ইতিউতি জমে থাকা চর্বি লুকিয়ে যাবে। তা ছাড়া, এই ধরনের শাড়ির প্রিন্ট এতটাই নজর টেনে রাখে যে, আপনাকে একটুও মোটাসোটা লাগবে না। এর সঙ্গে ব্লাউজ হোক সাহসী। স্লিভলেস, ব্যাকলেস, যা ইচ্ছে পরুন। তবে ফুলস্লিভ কিংবা থ্রি-কোয়ার্টার স্লিভ এড়িয়ে চলুন। চুল বেঁধে রাখুন অবশ্যই। সাজও হোক স্নিগ্ধ। কানে একটা বড় দুল, ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক। এটুকুই যথেষ্ট।
যাঁরা খুব রোগাও নন আবার মোটাও নন, তাঁরা এদিন পরুন ভারী সিল্কের শাড়ি। দক্ষিণী সিল্ক, জর্জেট বেনারসি, কাঞ্জিভরম ইত্যাদি পরতে পারেন। সাজুনও জমকালো ভাবে। সোনালি কিংবা রুপোলি নয়, মুক্তোর গয়না পরুন। সকালের সাজে ফাটাফাটি লাগবে। ব্লাউজ পরুন একই রংয়ের। হাতা কনুই পর্যন্ত।
বাঙালি বিয়েবাড়িতে আজকাল লেহঙ্গা চোলির সাজে সাজতে শুরু করে দিয়েছে। তা হলে সরস্বতী পুজোই বা বাদ থাকে কেন? এদিনও আপনি পরতে পারেন নানা শেডের হলুদের লেহঙ্গা-চোলি। আর সবচেয়ে বড় কথা হল, এই পোশাকটি মোটা, রোগা, দোহারা, যে-কোনও বডি শেপের সঙ্গেই মানানসই। শুধু চোলির কাটে আপনাকে একটু সতর্ক থাকতে হবে। দেখে নিন, কোন ধরনের লেহঙ্গা-চোলি পরতে পারেন আপনি…
১) যাঁদের দোহারা গড়ন, তাঁরা পরুন হাই-রাইজ লেহঙ্গা, সঙ্গে ছোট স্লিভ চোলি ব্লাউজ
২) ভারীক্কি চেহারায় পরুন একরঙা লেহঙ্গা, নেটের চোলি দিয়ে
৩) রোগাদের জন্য পারফেক্ট ভারী কাজের একরঙা লেহঙ্গা, স্ট্রাকচারাল স্লিভলেস চোলি
আরও পড়ুন: পুজো স্পেশ্যাল শপিং: কলকাতার সেরা দশটি রেডিমেড ব্লাউজের দোকানের হদিশ
প্রিন্টেড হাইরাইজ লেহঙ্গা, সঙ্গে ছোট স্লিভ চোলি ব্লাউজে সেজে এবারের সরস্বতী পুজোর ফ্যাশন গেম জিতে নিন আপনি, তা-ও অনায়াসে। চুল মাঝখান দিয়ে পার্টিং করে টুইস্টেড পনিটেল করুন। ওড়না নিন সাইড করে। সাজবেন একেবারে হালকা, যাতে আপনার লেহঙ্গাটি সকলের নজর কাড়ে।
কে বলেছে, একটু ভারীক্কি চেহারায় লেহঙ্গা মানায় না? আপনারা বেছে নিন একরঙা লেহঙ্গা, যার পাড়ের দিকে ভারী কাজ থাকতে পারে। সঙ্গে পরুন নেটের ব্লাউজ, ডিপ ব্যাক, হাতাও হবে নেটের, কিন্তু লাইনিং ছাড়া। ওড়নাটা নিতে হবে একটু কায়দা করে, বেল্ট দিয়ে কোমরে আটকে। চুল সাইড পার্টিং করে একদিকে নিয়ে আসুন। কানে ছোট্ট দুল, হাতে একগোছা চুড়ি। ব্যস, সরস্বতী পুজোর সাজ কমপ্লিট।
যাঁরা খুব রোগা, তাঁরা এবার পুজোয় সাজুন একটু সাহসী সাজে। লেহঙ্গা হোক জমকালো, তাতে ক্ষতি নেই। বিয়েবাড়ির মরসুম তো রইলই, কাজে লেগে যাবে। কিন্তু তার সঙ্গে ব্লাউজ বা চোলি পরুন স্ট্রাকচারাল কাটিংয়ের, অনেকটা অনন্যা পাণ্ডের মতো। চুল বাঁধুন কায়দা করে। কিন্তু কোনও গয়নাগাঁটি পরতে যাবেন না। চোলি আর চুলের সাজ দিয়েই সকলের নজর কাড়ুন।
বাঙালির জাতীয় পোশাক শাড়ি হলেও, সালোয়ার-কামিজ পরতেও আমরা বড্ড ভালবাসি। তাই অনেকেই সরস্বতী পুজোর দিন বেছে নেন এই পোশাকটি। কোই বাত নহি, এই ভারতীয় পোশাকটিতেও আপনি হয়ে উঠতে পারেন নজরকাডা়, যদি বডি শেপ অনুযায়ী পরেন এবং সাজেন। এখানে রইল তিনটি আইডিয়া…
১) চাপা চুড়িদারের সঙ্গে স্ট্রেট কাট কামিজ, দোহারা চেহারার জন্য
২) স্ট্রেট কাট প্যান্ট-কামিজ, ভারী চেহারার জন্য
৩) শরারা-কামিজ কম্বিনেশন, রোগাদের জন্য
চাপা চুড়িদারের সঙ্গে একহারা কামিজ হল এই চেহারার মহিলাদের জন্য পারফেক্ট। আপনি না রোগা, না মোটা। সুতরাং, আপনার বডি শেপকে ফুটিয়ে তুলতে চাপা পোশাক পরতে হবে আপনাকে। সরস্বতী পুজোর জন্য বেছে নিন হলুদ রংয়ের একরঙা চুড়িদার, কামিজ। ওড়না হোক কনট্রাস্ট কালারের। ভারী সিল্কের ওড়নাও নিতে পারেন। চুল খুলে রাখুন। সাজুন হালকা।
একটু ভারী চেহারা হলে এই কম্বিনেশনের পোশাক আপনার জন্য আদর্শ। স্ট্রেট সিগারেট প্যান্টের ঝুল শেষ হবে গোড়ালির একটু উপরে। কামিজই হোক স্ট্রেট কাট, দু’ পাশে স্লিটওয়ালা। এতে আপনাকে আর মোটা দেখাবে না। ওড়না নিতে পারেন গলা দিয়ে, আবার একপাশে করেও। বেশি জমকালো নেবেন না। সিল্কের ওড়না এক্কেবারে নো নো। চুল অবশ্যই বেঁধে রাখুন। ঠোঁট রাঙান গাঢ় লিপস্টিকের রংয়ে।
যাঁরা টিংটিংয়ে রোগা, তাঁদের তো ভাই খ্যাংরাকাঠি-আলুরদম চেহারাটি চাপাঢাকা দেওয়ার দরকার আছে। তাঁরা বেছে নিন একরঙা শরারা, সঙ্গে শর্ট কামিজ। শরারার ঘের একটু বেশি হওয়ার জন্য তা আপনার চেহারার খামতি ঢেকে দেবে। উপরে শর্ট কামিজ পরলে লম্বাও দেখাবে আবার রোগাও লাগবে না। কামিজের হাতা যদি ফুল স্লিভ হয়, আরও ভাল। সঙ্গে নিন কনট্রাস্ট কালারের ওড়না। শকিং পিঙ্ক, কমলা, শকিং ব্লু রং বাছতে পারেন ওড়নার জন্য।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আমাদের এক্কেবারে নতুন POPxo Zodiac Collection মিস করবেন না যেন! এতে আছে নতুন সব নোটবুক, ফোন কভার এবং কফি মাগ, যেগুলো দারুণ ঝকঝকে তো বটেই, আর একেবারে আপনার কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে। হুমম…আরও একটা এক্সাইটিং ব্যাপার হল, এখন আপনি পাবেন ২০% বাড়তি ছাড়ও। দেরি কীসের, এখনই POPxo.com/shopzodiac-এ যান আর আপনার এই বছরটা POPup করে ফেলুন!