মনিষীদের মৃত্যু হয় না, তাঁরা চিরকাল মানুষের হৃদয়ে বিরাজ করেন। স্বামী বিবেকানন্দ (Swami Vivekananda) এমনি একজন প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। অসাধারণ প্রতিভাসম্পন্ন এই সন্ন্যাসী ভারতের যুবসমাজকে অন্যভাবে ভাবতে শিখিয়েছিলেন। তাঁরই জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমাদের তরফ থেকে রইল তাঁর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য। স্বামী বিবেকানন্দের ৬০টি সেরা বাণীর সংকলন রইল (Swami Vivekananda Bani In Bengali) শুধু আপনার জন্য।
Table of Contents
- বিবেকানন্দ জয়ন্তী কবে পালিত হয়? (Swami Vivekananda Jayanti Date)
- স্বামী বিবেকানন্দের থেকে শিক্ষনীয় কিছু বিষয় (Thoughts of Swami Vivekananda)
- স্বামী বিবেকানন্দের বাণী যা সমাজের জন্য উপযোগী (Swami Vivekananda Quotes on Humanity)
- যুবসমাজের জন্য স্বামী বিবেকানন্দের সেরা বাণী (Swami Vivekananda Quotes on Youth)
- শিক্ষাব্যবস্থার জন্য উপযোগী স্বামী বিবেকানন্দের বাণী (Swami Vivekananda Thoughts on Education)
- বাংলা ও বাঙালির জন্য স্বামী বিবেকানন্দের সেরা বাণী (Swami Vivekananda Bani Bangla)
- প্রেমের উপযোগী স্বামী বিবেকানন্দের সেরা উক্তি (Swami Vivekananda Quotes on Love)
- স্বামী বিবেকানন্দের বাণী যা আমাদের আজও উদ্বুদ্ধ করে (Swami Vivekananda Inspirational Quotes)
বিবেকানন্দ জয়ন্তী কবে পালিত হয়? (Swami Vivekananda Jayanti Date)
উত্তর কলকাতার সিমলাতে পৌষের কৃষ্ণপক্ষে দত্ত পরিবারে জন্ম হয় বিলে-র। ভাল নাম নরেন্দ্র নাথ দত্ত। সেই বালক যে একদিন বড় হয়ে গোটা পৃথিবীর যুবসমাজকে নতুনভাবে ভাবতে এবং আধুনিকমনস্ক হতে উদ্বুদ্ধ করবে, তা কে ভেবেছিল! এবছর তাঁর ১৫৭ তম জন্মদিন, ১২ই জানুয়ারি তা পালিত হয় এবং এই অনুষ্ঠানটিই বিবেকানন্দ (Swami Vivekananda) জয়ন্তী নামে পরিচিত।
স্বামী বিবেকানন্দের থেকে শিক্ষনীয় কিছু বিষয় (Thoughts of Swami Vivekananda)
শিক্ষা, দর্শন, ধর্ম, চরিত্র গঠন ও নানা বিষয় রয়েছে যা স্বামী বিবেকানন্দের বাণী (Swami Vivekananda Bani In Bengali) গুলি থেকে আমরা শিখতে পারি। প্রাচ্যের অমুল্য সম্পদ, বেদ-বেদান্ত পাশ্চাত্য সমাজে প্রচারের ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা ভোলার নয়। তাঁর প্রতিটি বক্তব্যের মূল ভাব হল মনুষ্য চরিত্রের সঠিক গঠন।
স্বামী বিবেকানন্দের বাণী যা সমাজের জন্য উপযোগী (Swami Vivekananda Quotes on Humanity)
স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষ্যে তাঁর বলে যাওয়া দশটি মহান উক্তি যা সমাজের জন্য উপযুক্ত –
১। হামবড়া বা দলাদলি বা ঈর্ষা একেবারে জন্মের মতো বিদায় করিতে হইবে। পৃথিবীর ন্যায় সর্বংসহ হইতে হইবে; এইটি যদি পারো, দুনিয়া তোমাদের পায়ের তলায় আসিবে।
২। হে ভ্রাতৃবৃন্দ, আমাদের সকলকেই এখন কঠোর পরিশ্রম করিতে হইবে, এখন ঘুমাইবার সময় নহে। আমাদের কার্যকলাপের উপরই ভারতের ভবিষ্যত নির্ভর করিতেছে ঐ দেখ, ভারতমাতা ধীরে ধীরে নয়ন উন্মীলন করিতেছেন। তিনি কিছুকাল নিদ্রিত ছিলেন মাত্র। উঠ, তাহাকে জাগাও— আর নূতন জাগরনে নূতন প্রাণে পূর্বাপেক্ষা অধিকতর গৌরবমণ্ডিতা করিয়া ভক্তিভাবে তাঁহাকে তাঁহার শাশ্বত সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত কর।
৩। আমাদের প্রথম কর্তব্য হল নিজেকে ঘৃণা না করা। উন্নত হইতে হইলে প্রথম নিজের উপর, তারপরে ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস আবশ্যিক। যাহার নিজের উপর বিশ্বাস নাই, তাহার কখনই ঈশ্বরে বিশ্বাস আসিতে পারে না (Swami Vivekananda Bani Bengali)। কর্মযোগী জানেন, অপ্রতিকারই সর্বোচ্চ আদর্শ – তিনি আরও জানেন যে উহাই শক্তির উচ্চতম বিকাশ এবং অন্যায়ের প্রতিকার।
৪। হে ভারত, এই পরানুবাদ, পরানুকরণ, পরমুখাপেক্ষা, এই দাসসুলভ দুর্বলতা, এই ঘৃণিত জঘন্য নিষ্ঠুরতা-এইমাত্র সম্বলে তুমি উচ্চাধিকার লাভ করিবে? এই লজ্জাকর কাপুরুষতাসহায়ে তুমি বীরভোগ্যা স্বাধীনতা লাভ করিবে? হে ভারত, ভুলিও না—তোমার নারীজাতির আদর্শ সীতা, সাবিত্রী, দময়ন্তী; ভুলিও না—তোমার উপাস্য উমানাথ সর্বত্যাগী শঙ্কর; ভুলিও না-তোমার বিবাহ, তোমার ধন, তোমার জীবন ইন্দ্রিয়সুকের-নিজের ব্যক্তিগত সুখের জন্য নহে; ভুলিও না—তুমি জন্ম হইতেই ‘মায়ের’ জন্য বলিপ্রদত্ত; (Vivekananda Bani In Bengali) ভুলিও না—নীচজাতি, মূর্খ, দরিদ্র, অজ্ঞ, মূচি, মেথর তোমার রক্ত, তোমার ভাই! হে বীর, সাহস অবলম্বন কর; সদর্পে বল—আমি ভারতবাসী, ভারতবাসী আমার ভাই। বল—মূর্খ ভারতবাসী, দরিদ্র ভারতবাসী, ব্রাহ্মণ ভারতবাসী, চণ্ডাল ভারতবাসী আমার ভাই, ভারতবাসী আমার প্রাণ, ভারতের দেবদেবী আমার ঈশ্বর, ভারতের সমাজ আমার শিশুশয্যা, আমার যৌবনের উপবন, আমার বার্ধক্যের বারাণসী; বল ভাই—ভারতের মৃত্তিকা আমার স্বর্গ, ভারতের কল্যাণ আমার কল্যাণ; আর বল দিন-রাত, ‘হে গৌরীনাথ, হে জগদম্বে, আমায় মনুষ্যত্ব দাও; মা, আমার দুর্বলতা কাপুরুষতা দূর কর, আমায় মানুষ কর (বিবেকানন্দের বাণী)।
৫। সাফল্য লাভ করিতে হইলে প্রবল অধ্যবসায়, প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি থাকা চাই। অধ্যবসায়শীল সাধক বলেন,’ আমি গণ্ডূষে সমুদ্র পান করিব। আমার ইচ্ছামাত্র পর্বত চূর্ণ হইয়া যাইবে।’ এইরূপ তেজ, এইরূপ সংকল্প আশ্রয় করিয়া খুব দৃঢ়ভাবে সাধন কর। নিশ্চয়ই লক্ষে উপনীত হইবে।
৬। তোমরা কাজ করে চল। দেশবাসীর জন্য কিছু কর-তাহলে তারাও তোমাদের সাহায্য করবে, সমগ্র জাতি তোমার পিছনে থাকবে। সাহসী হও, সাহসী হও! মানুষ একবারই মরে। আমার শিষ্যেরা যেন কখনো কোনমতে কাপুরুষ না হয়।
৭। যারা তোমায় সাহায্য করেছে, তাঁদের কখনও ভুলে যেও না। যারা তোমাকে ভালোবাসে, তাদের কোনওদিন ঘৃণা করো না। আর যারা তোমাকে বিশ্বাস করে, তাদের কখনও ঠকিয়ো না।
৮। তুমি খ্রিষ্টের মতো ভাবলে তুমি একজন খ্রিষ্টান, তুমি বুদ্ধের মতো ভাবলে তুমি একজন বৌদ্ধ। তোমার ভাবনা, অনুভূতিই তোমার জীবন, শক্তি, জীবনীশক্তি (Vivekananda Bani In Bengali)। যতই বুদ্ধি দিয়ে কাজ করো, এগুলি ছাড়া ভগবানের কাছে পৌঁছনো সম্ভব নয়।
৯। উঠে দাঁড়াও, শক্ত হও, দৃপ্ত হও। যাবতীয় দায়িত্ব নিজের কাঁধে নাও। আর এটা সব সময় মাথায় রেখো, তুমিই তোমার নিয়তির স্রষ্টা। তোমার যে পরিমাণ শক্তি প্রয়োজন, সবটা তোমার মধ্যেই রয়েছে। সুতরাং নিজের ভবিষ্যত্ নিজেই তৈরি করে নাও।
১০। আমাদের জীবনের সবচেয়ে সুখকর মুহুর্ত সেইগুলি, যখন আমরা নিজেদের একেবারে ভুলে যাই।
যুবসমাজের জন্য স্বামী বিবেকানন্দের সেরা বাণী (Swami Vivekananda Quotes on Youth)
স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষ্যে তাঁর বলে যাওয়া দশটি মহান বাণী (Swami Vivekananda Bani Bengali) যা যুবসমাজের জন্য উপযুক্ত –
১। এসো, মানুষ হও। নিজের সংকীর্ণ গর্ত থেকে বেরিয়ে এসে বাইরে গিয়ে দেখ, সব জাতি কেমন উন্নতির পথে চলেছে। তোমরা কি মানুষকে ভালবাসো? তোমরা কি দেশকে ভালবাসো? তাহলে এস, আমরা ভাল হবার জন্য—উন্নত হবার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করি।
২। কার্যক্ষেত্রে অবতরণ কর। কুড়েমির কাজ নয়। ঈর্ষা অহমিকাভাব গঙ্গার জলে জন্মের মতো বিসর্জন দাও ও মহাবলে কাজে লাগিয়া যাও। (swami vivekananda) (quotes)
৩। চরিত্র গঠনের জন্য ধীর ও অবিচলিত যত্ন, এবং সত্যপোলব্ধীর জন্য তীব্র প্রচেষ্টাই কেবল মানব জাতির ভবিষৎ জীবনের উপর প্রভাব বিস্তার করিতে পারে।
৪। জোর করে সংস্কারের চেষ্টার ফল এই যে, তাতে সংস্কার বা উন্নতির গতি রোধ হয়। কাউকে বোলো না, “তুমি মন্দ”, বরং তাঁকে বোলো, “তুমি ভালই আছো, আরও ভাল হও”
৫। দর্শনবর্জিত ধর্ম কুসংস্কারে গিয়ে দাঁড়ায়, আবার ধর্মবর্জিত দর্শন শুধু নাস্তিকতায় পরিণত হয়। আমাদের নিম্নশ্রেণীর জন্য কর্তব্য এই, কেবল তাহাদিগকে শিক্ষা দেওয়া এবং তাহাদের বিনষ্টপ্রায় ব্যক্তিত্ববোধ জাগাইয়া তোলা (বিবেকানন্দের বাণী)।
৬। ‘অমৃতের পুত্র’ – কী মধুর ও আশার নাম! হে ভ্রাতৃগণ, এই মধুর নামে আমি তোমাদের সম্বোধন করতে চাই। তোমরা অমৃতের অধিকারী।
৭। মানুষকে সর্বদা তাহার দুর্বলতার বিষয় ভাবিতে বলা তাহার দুর্বলতার প্রতীকার নয়- তাহার শক্তির কথা স্মরণ করাইয়া দেওয়াই প্রতিকারের উপায়। তাহার মধ্যে যে শক্তি পূর্ব হইতে বিরাজিত,তাহার বিষয় স্মরণ করাইয়া দাও।
৮। ওরে, কেউ কাকেও শেখাতে পারে না। ‘শেখাচ্ছি’ মনে করেই শিক্ষক সব মাটি করে । কি জানিস, বেদান্ত বলে-এই মানুষের ভেতরেই সব আছে । একটা ছেলের ভেতরেও সব আছে । কেবল সেইগুলি জাগিয়ে দিতে হবে, এইমাত্র শিক্ষকের কাজ । ছেলেগুলো যাতে নিজ নিজ হাত-পা নাক-কান মুখ-চোখ ব্যবহার করে নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে নিতে শেখে, এইটুকু করে দিতে হবে । তাহলেই আখেরে সবই সহজ হয়ে পড়বে । কিন্তু গোড়ার কথা-ধর্ম (Swamijir Bani)। ধর্মটা যেন ভাত আর সবগুলো তরকারি । কেবল শুধু তরকারি খেয়ে হয় বদহজম, শুধু ভাতেও তাই।
৯। তোমাদের সকলের উপর ভগবানের আর্শীবাদ বর্ষিত হউক! তাঁহার শক্তি তোমাদের সকলের ভিতর আসুক। আমি বিশ্বাস করি, তাঁহার শক্তি তোমাদের মধ্যেই রহিয়াছে। বেদ বলিতেছেন, ‘ওঠ, জাগো, যতদিন না লক্ষ্যস্থলে পৌছিতেছ, থামিও না।’ জাগো, জাগো, দীর্ঘ রজনী প্রভাতপ্রায় (Swami Vivekananda Bengali Quotes)। দিনের আলো দেখা যাইতেছে। মহাতরঙ্গ উঠিয়াছে। কিছুতেই উহার বেগ রোধ করিতে পারিবে না।
১০। কেবল শারীরিক সাহায্য দ্বারা জগতের দুঃখ দূর করা যায় না। যতদিন না মানুষের প্রকৃতি পরিবর্তিত হইতেছে, ততদিন এই শারীরিক অভাবগুলি সর্বদাই আসিবে এবং দুঃখ অনুভূত হইবেই হইবে। যতই শারীরিক সাহায্য কর না কেন, কোনমতেই দুঃখ একেবারে দূর হইবে না। জগতের এই দুঃখ-সমস্যার একমাত্র সমাধান মানবজাতিকে শুদ্ধ ও পবিত্র করা (বিবেকানন্দের বাণী)। আমরা জগতে যাহা কিছু দুঃখকষ্ট ও অশুভ দেখিতে পাই, সবই অজ্ঞান বা অবিদ্যা হইতে প্রসূত। মানুষকে জ্ঞানালোক দাও, সকল মানুষ পবিত্র আধ্যাত্মিক-বলসম্পন্ন ও শিক্ষিত হউক, কেবল তখনই জগৎ হইতে দুঃখ নিবৃত্ত হইবে, তাহার পূর্বে নয় (বিবেকানন্দের বাণী)। দেশে প্রত্যেকটি গৃহকে আমরা দাতব্য আশ্রমে পরিণত করিতে পারি, হাসপাতালে দেশ ছাইয়া ফেলিতে পারি, কিন্তু যতদিন না মানুষের স্বভাব বদলাইতেছে, ততদিন দুঃখ-কষ্ট থাকিবেই থাকিবে।
শিক্ষাব্যবস্থার জন্য উপযোগী স্বামী বিবেকানন্দের বাণী (Swami Vivekananda Thoughts on Education)
স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষ্যে তাঁর বলে যাওয়া দশটি মহান বাণীর (স্বামী বিবেকানন্দের বাণী) যা শিক্ষাব্যবস্থার জন্য উপযুক্ত –
১। আপানার ভাল কেবল পরের ভালয় হয়, আপনার মুক্তি এবং ভক্তিও পরের মুক্তি ও ভক্তিতে হয়—তাইতে লেগে যাও, মেতে যাও, উন্মাদ হয়ে যাও। ঠাকুর যেমন তোমাদের ভালবাসতেন, আমি যেমন তোমাদের ভালোবাসি, তোমারা তেমনি জগৎকে ভালবাস দেখি ।
২। আমাদের জাতের কোনও ভরসা নাই। কোনও একটা স্বাধীন চিন্তা কাহারও মাথায় আসে না—সেই ছেঁড়া কাঁথা, সকলে পড়ে টানাটানি
৩। আমাদের মতো কূপমণ্ড ক তো দুনিয়ায় নাই। কোন একটা নূতন জিনিস কোন দেশ থেকে আসুক দিকি, আমেরিকা সকলের আগে নেবে। আর আমরা? ‘আমাদের মতো দুনিয়ায় কেউ নেই, ‘আর্য’ বংশ!!!’ কোথায় বংশ তা জানি না!…এক লাখ লোকের দাবানিতে ত্রিশ কোটি কুকুরের মত ঘোরে, আর তারা ‘আর্যবংশ’!!!
৪। আমি দৃঢ়ভাবে বলিতেছি, হিন্দুসমাজের উন্নতির জন্য ধর্মকে নষ্ট করিবার কোন প্রয়োজন নাই এবং ধর্মের জন্যেই যে সমাজের এই অবস্থা তাহা নহে, বরং ধর্মকে সামাজিক ব্যাপারে (বিবেকানন্দের বাণী) যেভাবে কাজে লাগানো উচিত, তাহা হয় নাই বলিয়াই সমাজের এই অবস্থা।
৫। এই কথা মনে রেখো—দুটো চোখ, দুটো কান, কিন্তু একটা মুখ। উপেক্ষা উপেক্ষা, উপেক্ষা। ‘ন হি কল্যাণকৃৎ কশ্চিৎ দুর্গাতিং তাত গচ্ছতি’ (Swami Vivekananda Bani Bangla)।
৬। হাপুরুষেরা বিশেষ শিক্ষা দিতে আসেন, নামের জন্যে নহে, কিন্তু চেলারা তাঁদের উপদেশ বানের জ্বলে ভাসাইয়া নামের জন্য মারামারি করে—এই তো পৃথিবীর ইতিহাস।
৭। একটা পুরানো গল্প শোন। একটা লোক রাস্তা চলতে চলতে একটা বুড়োকে তার দরজার গোড়ায় বসে থাকতে দেখে সেখানে দাঁড়িয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলে—’ভাই, অমুক গ্রামটা এখান থেকে কতদূর? ‘বুড়োটা কোন জবাব দিলে না। তখন পথিক বার বার জিজ্ঞাসা করেত লাগলো, কিক্ত বুড়ো তবু চুপ ক’রে রইল। পথিক তখন বিরক্ত হয়ে আবার রাস্তায় গিয়ে চলবার উদ্যেগ করলে। তখন বুড়ো দাঁড়িয়ে উঠে পথিককে সম্বোধন ক’রে বললে, ‘আপনি অমুক গ্রামটার কথা জিজ্ঞাসা করছিলেন—সেটা এই মাইল-খানেক হবে। তখন পথিক তাকে বললে, ‘তোমাকে এই একটু আগে কতবার ধরে জিজ্ঞাসা করলাম, তখন তো তুমি (Swamijir Bani) একটা কথাও কইলে না—এখন যে ব’লছ, ব্যাপারখানা কি ?’ তখন বুড়ো বললে, ‘ঠিক কথা। কিন্তু প্রথম যখন জিজ্ঞাসা করছিলেন, তখন চুপচাপ দাঁড়িয়েছিলেন, আপনার যে যাবার ইচ্ছে আছে, ভাব দেখে তা বোধ হচ্ছিল না—এখন হাঁটতে আরম্ভ করেছেন, তাই আপনাকে বললাম।
৮। কাজ চিরকালই ধীরে ধীরে হয়ে এসেছে, চিরকালই ধীরে হবে; এখন ফলাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ ক’রে শুধু কাজ করেই খুশী থাকো; সর্বোপরি, পবিত্র ও দৃঢ়-চিত্ত হও এবং মনে প্রাণে অকপট হও—ভাবের ঘরে যেন এতটুকু চুরি না থাকে, তা হলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
৯। কার্যসিদ্ধর জন্য আমার ছেলেদের আগুনে ঝাঁপ দিতে প্রস্তুত থাকতে হবে। (quotes) এখন কেবল কাজ, কাজ, কাজ-বছর কতক বাদে স্থির হয়ে কে কতদূর করলে মিলিয়ে তুলনা ক’রে দেখা যাবে। ধৈর্য’অধ্যবসায় ও পবিত্রতা চাই ।
১০। কোন ধর্মকে ফলপ্রসূ করতে হ’লে তাই নিয়ে একেবারে মেতে যাওযা দরকার; অথচ যাতে সঙ্কীর্ণ সাম্প্রদায়িক ভাব না আসে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
বাংলা ও বাঙালির জন্য স্বামী বিবেকানন্দের সেরা বাণী (Swami Vivekananda Bani Bangla)
স্বামী বিবেকানন্দের (Swami Vivekananda) জন্মদিন উপলক্ষ্যে তাঁর বলে যাওয়া দশটি মহান বাণী যা বাঙালি জাতির জন্য উপযুক্ত –
১। সমগ্র জগতের ইতিহাস আলোচনা করলে দেখতে পাবে, মহাপুরুষগণ চিরকাল বড় বড় স্বার্থত্যাগ করেছেন, আর সাধারণ লোক তার সুফল ভোগ করেছে।
২। হে বীরহৃদয় যুবকগণ, তোমরা বিশ্বাস কর যে, তোমরা বড় বড় কাজ করবার জন্য জন্মেছ। কুকুরের ঘেউ ঘেউ ডাকে ভয় পেও না—এমন কি আকাশ থেকে প্রবল বজ্রাঘাত হলেও ভয় পেও না—খাড়া হয়ে ওঠ, ওঠ, কাজ কর।
৩। হে মহাপ্রাণ, ওঠ জাগো ! জগৎ দুঃখে পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে— তোমার কি নিদ্রা সাজে?
৪। হিন্দু সন্তান কখন মাকে টাকা ধার দেয় না, সন্তানের ওপর মায়ের সর্ববিধ অধিকার আছে, সন্তানেরও মায়ের ওপর (Swami Vivekananda Quotes In Bengali)।
৫। পৃথিবী আজ চায় এমন কুড়িজন নরনারী, যাহারা সামনের ঐ পথে সাহসভরে দাঁড়াইয়া বলিতে পারে যে, ভগবান্ ব্যতীত তাহাদের অন্য কোন সম্বল নাই। কে আসিবে? কেন, ইহাতে ভয় কি? যদি এটি সত্য হয়, তবে আর কিসের প্রয়োজন? আর যদি এটি সত্য না হয়, তবে আমাদের বাঁচিয়া কি লাভ?
৬। হিন্দুধর্মের ন্যায় আর কোন ধর্মই এত উচ্চতানে মানবাত্মার মহিমা প্রচার করে না, আবার হিন্দুধর্ম যেমন পৈশাচিক ভাবে গরীব ও পতিতের গলায় পা দেয়, জগতে আর কোন ধর্ম এরূপ করে না (বিবেকানন্দের বাণী)।
৭। তোমরা সকলে ভাবো—’আমরা অনন্ত বলশালী আত্মা’; দেখ দিকি কি বল বেরোয়। ‘দীনহীনা!’ কিসের ‘দীনহীনা’? আমি ব্রহ্মময়ীর বেটা! কিসের রোগ, কিসের ভয়, কিসের অভাব? ‘দীনহীনা’ ভাবকে কুলোর বাতাস দিয়ে বিদেয় কর দিকি।
৮। আমি চাই, যেন আমাদের মধ্যে কোনরূপ কপটতা, কোনরূপ লুকোচুরি ভাব, কোনরূপ দুষ্টামি না থাকে। আমি বরাবরই প্রভুর উপর নির্ভর করিয়াছি, দিবালোকের ন্যায় উজ্জ্বল সত্যের উপর নির্ভর করিয়াছি (Swamijir Bani)। আমার বিবেকের উপর এই কলঙ্ক লইয়া যেন মরিতে না হয় যে, আমি নামের জন্য, এমন কি, পরের উপকার করিবার জন্য লোকোচুরি খেলিয়াছি। একবিন্দু দুর্নীতি, বদ মতলবের একবিন্দু দাগ পর্যন্ত যেন না থাকে ।
৯। আদান-প্রদানই প্রকৃতির নিয়ম ; ভারতের যদি আবার উঠিতে হয়, তবে তাহাকে নিজ ঐশ্বর্য-ভান্ডার উন্মুক্ত করিয়া পৃথিবীর সমুদয় জাতির ভিতর ছড়াইয়া দিতে হইবে এবং পরিবর্তে অপরে যাহা কিছু দেয়,তাহাই গ্রহণের জন্য প্রস্তুত হইতে হইবে (Swami Vivekananda Bani Bangla)।
১০। আমি ঈশ্বরকে বিশ্বাস করি, মানুষকে বিশ্বাস করি; দুঃখী দরিদ্রকে সাহায্য করা, পরের সেবার জন্য নরকে যাইতে প্রস্তুত হওয়া—আমি খুব বড় কাজ বলিয়া বিশ্বাস করি।
প্রেমের উপযোগী স্বামী বিবেকানন্দের সেরা উক্তি (Swami Vivekananda Quotes on Love)
স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষ্যে তাঁর বলে যাওয়া দশটি মহান বাণী (স্বামী বিবেকানন্দের বাণী) যা আমাদের মনে প্রেমের মহানুভবতা জাগিয়ে তুলবে –
১। তিনি সকলেরই হৃদয়ে বিরাজ করিতেছেন। যদি দর্পণের উপর ধূলি ও ময়লা থাকে, তবে তাহাতে আমরা আমাদের চেহারা দেখিতে পাই না। আমাদের হৃদয় দর্পণেও এইরূপ অজ্ঞান ও পাপের ময়লা রহিয়াছে।
২। তোমাদের কি মন মুখ এক হয়েছে? তোমরা কি মৃত্যুভয় পর্যন্ত তুচ্ছ ক’রে নিঃস্বার্থভাবে থাকতে পার? তোমাদের হৃদয়ে প্রেম আছে তো? যদি এইগুলি তোমাদের থাকে তবে তোমাদের কোন কিছুকে, এমন কি মৃত্যুকে পর্যন্ত ভয় করবার দরকার নেই (Swami Vivekananda Quotes In Bengali)। এগিয়ে যাও, বৎসগণ। সমগ্র জগৎ জ্ঞানালোক চাইছে—উৎসুক নয়নে তার জন্য আমাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
৩। ধৈর্য, পবিত্রতা ও অধ্যবসায়ের জয় হবে।
৪। পবিত্রতা, সহিষ্ণুতা ও অধ্যবসায়—এই তিনটি, সর্বোপরি প্রেম সিদ্ধিলাভের জন্য একান্ত আবশ্যক।
৫। পূর্ণত্বলাভের পথ এই যে, নিজে ঐরূপ চেষ্টা করতে হবে এবং অন্যান্য স্ত্রী-পুরুষ যারা সচেষ্ট তাদের যথাশক্তি সাহায্য করতে হবে।
৬। প্রেমই জীবন—উহাই জীবনের একমাত্র গতিনিয়ামক; স্বার্থপরতাই মৃত্যু, জীবন থাকিতেও ইহা মৃত্যু, আর দেহাবসানেও এই স্বার্থপরতাই প্রকৃত মৃত্যুস্বরূপ (স্বামী বিবেকানন্দের বাণী)।
৭। ভায়া, সব যায়, ওই পোড়া হিংসেটা যায় না। আমাদের ভিতরও খুব আছে। আমাদের জাতের ঐটে দোষ, খালি পরনিন্দা আর পরশ্রীকাতরতা। হাম্বড়া, আর কেউ বড় হবে না।
৮। যদি ভাল চাও তো ঘণ্টাফণ্টাগুলোকে গঙ্গার জলে সঁপে দিয়ে সাক্ষাৎ ভগবান নর-নারায়ণের—মানবদেহধারী হরেক মানুষের পূজো করগে—বিরাট আর স্বরাট (Bibekananda Bani In Bengali)। বিরাট রূপ এই জগৎ, তার পূজো মানে তার সেবা—এর নাম কর্ম; ঘণ্টার উপর চামর চড়ানো নয়, আর ভাতের থালা সামনে ধরে দশ মিনিট ব’সব কি আধ ঘণ্টা ব’সব—এ বিচারের নাম ‘কর্ম নয়, ওর নাম পাগলা-গারদ।
৯। যে সন্ন্যাসীর অন্তরে অপরের কল্যাণ-সাধন-স্পৃহা বর্তমান নাই, সে সন্ন্যাসীই নহে—সে তো পশুমাত্র!
১০। জীবে প্রেম করিছে যে জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।
স্বামী বিবেকানন্দের বাণী যা আমাদের আজও উদ্বুদ্ধ করে (Swami Vivekananda Inspirational Quotes)
স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষ্যে তাঁর বলে যাওয়া দশটি অনুপ্রেরণামূলক বাণী (Swami Vivekananda Quotes In Bengali) যা কঠিন সময়ে আমাদের অনুপ্রেরণা দেবে –
১। নিজের জীবনে ঝুঁকি নিন, যদি আপনি জেতেন তাহলে নেতৃত্ব করবেন আর যদি হারেন তাহলে আপনি অন্যদের সঠিক পথ দেখাতে পারবেন (স্বামী বিবেকানন্দের বাণী)।
২। মনের শক্তি সূর্যের কিরণের মত, যখন এটি এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত হয় তখনই এটি চকচক করে ওঠে
৩। শক্তিই জীবন, দুর্বলতাই মৃত্যু, বিস্তার জীবন, সংকোচন মৃত্যু, প্রেম জীবন, ঘৃণা মৃত্যু
৪। সব শক্তিই আপনার মধ্যে আছে সেটার উপর বিশ্বাস রাখুন, এটা বিশ্বাস করবেন না যে আপনি দুর্বল। দাঁড়ান এবং আপনার মধ্যেকার দৈবত্বকে চিনতে শিখুন (Swamijir Bani)
৫। অন্য কারও জন্য অপেক্ষা করোনা, তুমি যা করতে পারো, সেটা করো, কিন্তু অন্যের মুখাপেক্ষি না হয়ে।
৬। নিজেকে দুর্বল মনে করা সবচেয়ে বড় পাপ
৭। যদি কোনদিন, আপনার সামান্য কোনো সমস্যা না আসে, আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে আপনি ভুল পথে হাটছেন (স্বামী বিবেকানন্দের বাণী)।
৮। চোখ আমাদের পিছনের দিকে নয় সামনের দিকে, অতএব সামনের দিকে অগ্রসর হও। আর যেই ধর্মকে নিজের ধর্ম বলে গৌরববোধ করো, তার উপদেশ গুলিকে কাজে পরিণত করো
৯। তোমাদের সবার ভিতর মহাশক্তি আছে, নাস্তিকের ভিতর তা নেই। যারা আস্তিক তারা বীর, তাদের মহাশক্তির বিকাশ হবেই (Bangla Bani Of Swami Vivekananda)।
১০। অজ্ঞানতাই বন্ধনের কারণ, আমরা অজ্ঞানেই বদ্ধ হয়েছি, জ্ঞানের উদয়ের দ্বারাই অজ্ঞানতার নাশ হবে, জ্ঞানই আমাদের অজ্ঞানতার পারে নিয়ে যাবে।
মূল ছবি সৌজন্যে – ইনস্টাগ্রাম
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এসে গেল #POPxoEverydayBeauty – POPxo-র স্কিন, বাথ, বডি এবং হেয়ার প্রোডাক্টস নিয়ে, যা ব্যবহার করা ১০০% সহজ, ব্যবহার করতে মজাও লাগবে আবার উপকারও পাবেন! এই নতুন লঞ্চ সেলিব্রেট করতে প্রি অর্ডারের উপর এখন পাবেন ২৫% ছাড়ও। সুতরাং দেরি না করে শিগগিরই ক্লিক করুন POPxo.com/beautyshop-এ এবার আপনার রোজকার বিউটি রুটিন POP আপ করুন এক ধাক্কায়।