কলকাতায় শীত আর ক’দিন থাকে বলুন! গরমটাই মোটামুটি সারাবছর কম-বেশি থাকে। ভাবছেন হঠাত করে আমি আবহাওয়া নিয়ে কেন বকবক করতে বসলাম। আসলে আবহাওয়ার ওপরে কিন্তু আমাদের শরীর, সৌন্দর্য, মন – এমন অনেককিছুই নির্ভর করে। আর যেহেতু পশ্চিমবঙ্গ এবং তার আশেপাশের এলাকাগুলো গ্রীষ্মপ্রধান আবহাওয়ার অন্তর্ভুক্ত কাজেই তার প্রভাব যে আমাদের ত্বক ও চুলের উপরে পড়বে তা বলাই বাহুল্য। বেশিরভাগ মানুষের কিন্তু চুল নিয়ে সমস্যা হল, তাঁদের স্ক্যাল্প বা মাথার তালু তেলতেলে (oily scalp); ফলে চুলও তেলতেলে এবং সবসময় পেতে থাকে… এই তেলতেলে স্ক্যাল্পের সমস্যা থেকে মুক্তির নানা চেষ্টা আমরা প্রায় সব সময়ই করে থাকি কিন্তু সেগুলো বেশ খরচসাপেক্ষ, ফলে সবসময়ে হয়ত করা হয়ে ওঠেনা। তবে চিন্তা নেই, আপনার হাতের কাছেই, বিশেষ করে রান্নাঘরে এমন অনেক উপকরণ রয়েছে যা আপনাকে এই তেলতেলে স্ক্যাল্পের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করতে পারে। সবই জানাবো, কিন্তু সমস্যা সমাধানের আগে একবার তার কারণ জেনে নেওয়াটা ভাল না?
মাথার তালু বা স্ক্যাল্প তেলতেলে কেন হয় (Reasons For Oily Scalp)
প্রথমেই যেমন বললাম, আবহাওয়ার ওপরে আমাদের চুল এবং ত্বকের অনেক বিষয় নির্ভর করে, ঠিক নানা সমস্যাও কিন্তু আবহাওয়া থেকেও হয়। তবে তেলতেলে স্ক্যাল্পের আরও নানা কারণ রয়েছে –
- বাতাসে অতিরিক্ত আর্দ্রতা থাকলে তা মাথার তালু বা স্ক্যাল্প তেলতেলে করে তুলতে পারে। বিশেষ করে গ্রীষ্মপ্রধান দেশে এবং গরমকালে ও বর্ষাকালে এই সমস্যা বেশি হয়।
- প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কন্ডিশনার ব্যবহার করলে
- নিয়মিত মাথায় তেল না লাগালেও কিন্তু স্ক্যাল্প তেলতেলে হয়ে যায়। না অবাক হবেন না প্লিজ, চুলে এবং স্ক্যাল্পে তেল মালিশ করার অর্থ হল তাকে পুষ্টি ডান করা। কিন্তু যদি আপনি চুলে এবং স্ক্যাল্পে নিয়মিত তেল লাগান তাহলে পুষ্টির অভাবে স্ক্যাল্পের প্রাকৃতিক তেল বাইরে বেরিয়ে আসে এবং মাথার তালু ও চুল তেলতেলে করে তোলে।
- নিয়মিত চুল ঠিকভাবে না ধুলে
- বারবার চুল ধরলেও স্ক্যাল্প ও চুল তেলতেলে হয়ে যেতে পারে। হাতের থেকে ধুলো, ময়লা ও তৈলাক্তভাব স্ক্যাল্পে চলে যেতে বেশি সময় লাগে না।
- মাথায় যদি খুশকি থাকে এবং তা নির্মূল না করা হয় তাহলেও কিন্তু স্ক্যাল্প তেলতেলে হয়ে যেতে পারে
- শরীরে হরমোনের তারতম্য থেকেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে
তেলতেলে স্ক্যাল্পের সমস্যা থেকে মুক্তির ঘরোয়া টোটকা (Home Remedies For Oily Scalp)
পার্লারে গিয়ে গুচ্ছখানেক টাকা খরচ করে নানা ট্রিটমেন্ট তো আপনি করাতেই পারেন, তবে তাতে ঠিক কতটা কাজ হবে তা আমরা বলতে পারব না। তার চেয়ে যদি বাড়িতেই বেশ কয়েকটি ঘরোয়া উপায় (home remedies) ট্রাই করেন তা হলে তেলতেলে স্ক্যাল্পের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাবেন আর খরচও বেশি হবে না!
১। টি-ট্রি অয়েল (Tea Tree Oil)
টি-ট্রি অয়েল অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদানে সমৃদ্ধ এবং অয়েল কন্ট্রোল করতেও কাজে আসে। মাথার তালুতে যাতে অতিরিক্ত তেল বার না হয় এবং স্ক্যাল্প অ্যাকনের সমস্যা না দেখা দেয় সেদিকেও খেয়াল রাখে।
উপকরণ – ১৫ ফোঁটা টি-ট্রি অয়েল এবং ৩০ মিলি যে-কোনও ক্যারিয়ার অয়েল (অলিভ বা নারকোল)
কীভাবে ব্যবহার করবেন – একটি ছোট বাটিতে দু’ধরনের তেল মিশিয়ে নিন। এবারে যেমন মাথায় তেল মাসাজ করা হয় তেমনভাবেই চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত আধঘন্টা মাসাজ করুন। পরে কোনও সালফেটহীন শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। অনেকেই বলেন যে মাথার তালুতে সরাসরি টি-ট্রি অয়েল ব্যাবহার করা যায়, তবে আমাদের পরামর্শ নিতে চাইলে বলব যে ওভাবে সরাসরি লাগাবেন না, কারণ আপনার যদি সেনসিটিভ স্ক্যাল্প হয় তাহলে চুলকানি বা র্যশ বেরতে পারে।
কত দিন ব্যবহার করবেন – সপ্তাহে দুই-তিন বার এই তেলটি অবশ্যই মালিশ করুন।
২। নারকেল তেল (Coconut Oil)
শ্যাম্পু করার আগে স্ক্যাল্পে এবং চুলে ভাল করে নারকেল তেল মাসাজ করলে তা কিন্তু কন্ডিশনারের কাজ করে। শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করলে চুল নরম হয় ঠিকই, কিন্তু অনেকসময়েই চিপচিপে হয়ে যায় এবং চুল পেতে থাকে, তবে নারকেল তেল ব্যবহার করলে কিন্তু এই সমস্যাটি হয় না।
উপকরণ – পরিমাণমতো অরগানিক নারকেল তেল
কীভাবে ব্যবহার করবেন – আপনার চুলের ঘনত্ব অনুযায়ী নারকোল তেল নিয়ে তা সামান্য গরম করে নিন। সরাসরি আগুনে গরম না করে গরম জলের মধ্যে নারকোল তেলের বাটি বসিয়ে গরম করে নিন। এতে তেলের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় না। এবারে স্বাভাবিকভাবে মাথার তালু এবং চুলে মাসাজ করে ঘণ্টাখানেক পর মাইল্ড কোনও শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এরপরে আর আলাদা করে কন্ডিশনার লাগাবেন না।
কত দিন ব্যবহার করবেন – সপ্তাহে একবার করলেই যথেষ্ট।
৩। অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার (Apple Cider Vinegar)
অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারে অ্যাসিটিক অ্যাসিড রয়েছে যা চুলের পি এইচ ব্যালান্স রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং চুল ও স্ক্যাল্প অতিরিক্ত তেলতেলে বা শুষ্ক হতে দেয় না। তবে এটি কিন্তু সরাসরি চুলে দেবেন না।
উপকরণ – দুই-তিন টেবিল চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার এবং এক কাপ জল
কীভাবে ব্যবহার করবেন – প্রথমেই চুলে মাইল্ড কোনও শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। গরম জলে চুল ধোবেন না শ্যাম্পুর পর। এবারে চুলের অতিরিক্ত জল চিপে বার করে দিন এবং এক কাপ জলে দুই-তিন টেবিল চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে তা চুলে ঢেলে ফেলুন। মিনিট পাঁচেক পর ঠাণ্ডা জলে আবার চুল ধুয়ে ফেলুন।
কত দিন ব্যবহার করবেন – সপ্তাহে তিন-চার বার করতে পারেন।
৪। অ্যালোভেরা জেল (Aloe Vera Gel)
চুল যাতে মোলায়েম থাকে সেই জন্য আমরা কন্ডিশনার ব্যবহার করি। কিন্তু অনেকসময়েই ভুলবশত মাথার তালুতেও কন্ডিশনার লেগে যায় এবং স্ক্যাল্প তেলতেলে হয় যায়। অ্যালোভেরা জেল এই তেলতেলে স্ক্যাল্পের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। এতে অ্যাস্ট্রিজেন্ট রয়েছে যা চুল এবং স্ক্যাল্প থেকে অতিরক্ত তেল দূর করে এবং চুল মোলায়েম করতেও সাহায্য করে।
উপকরণ – দুই টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল, ১ টেবিল চামচ পাতিলেবুর রস, এক কাপ জল
কীভাবে ব্যবহার করবেন – প্রতিটি উপকরণ ভালভাবে মিশিয়ে শ্যাম্পু করার পর তা দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। কিছুক্ষণ রেখে পরে ঠান্ডা জলে চুল ধুয়ে ফেলুন।
কত দিন ব্যবহার করবেন – সপ্তাহে একবার করতে পারেন।
৫। আরগান অয়েল (Argan Oil)
আরগান অয়েল দিয়ে স্ক্যাল্প মাসাজ করলে তা সিবাম অর্থাৎ তৈলগ্রন্থি থেকে তেল নিঃসরণ কম করতে সাহায্য করে। এছাড়া রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক করে চুলে এবং মাথার তালুতেও পুষ্টি যোগায়।
উপকরণ – পরিমাণমতো অরগানিক আরগান অয়েল এবং একটি তোয়ালে
কীভাবে ব্যবহার করবেন – যেভাবে মাথার তালুতে অন্যান্য তেল দিয়ে মাসাজ করা হয়, ঠিক সেভাবেই আরগান অয়েল দিয়ে মাসাজ করে নিন। স্ক্যাল্পের সঙ্গে চুলেও তেল লাগাবেন। এবারে তোয়ালে জড়িয়ে নিন মাথায় এবং ঘণ্টাখানেক তোয়ালে সরাবেন না। এক ঘণ্টা পর মাইল্ড কোনও শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। ঊষ্ণ জল ব্যবহার করতে পারেন এক্ষেত্রে।
কত দিন ব্যবহার করবেন – সপ্তাহে দু’বার করে দেখতে পারেন
৬। বেকিং সোডা (Baking Soda)
বেকিং সোডা কিন্তু ড্রাই শ্যাম্পু হিসেবে খুব ভাল কাজ করে। শুধু তাই নয়, চুলের এবং স্ক্যাল্পের পি এইচ ব্যালান্স সঠিক রেখে মাথার তালু থেকে অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব দূর করতেও সাহায্য করে।
উপকরণ – একটি কাঠের চিরুনি এবং পরিমাণমতো বেকিং সোডা
কীভাবে ব্যবহার করবেন – মাথার তালুতে এবং চুলে বেকিং সোডা ছড়িয়ে দিন। এবারে কাঠের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে নিন যাতে মাথায় তা ভাল করে ছড়িয়ে পড়তে পারে। পরে আপনি চুল ধুয়ে নিতে পারেন।
বেকিং সোডা আপনি অন্য একটি পদ্ধতিতেও ব্যবহার করতে পারেন। ভিজে চুলে পরিমাণমতো বেকিং সোডা লাগিয়ে নিন। কিছুক্ষন রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন।
কত দিন ব্যবহার করবেন – সপ্তাহে দু’দিন
৭। কোকো পাউডার (Cocoa Powder)
বেকিং সোডার মতো কোকো পাউডারও খুব ভাল ন্যাচারাল ড্রাই শ্যাম্পু।
উপকরণ – একটি কাঠের চিরুনি এবং পরিমাণমতো কোকো পাউডার
কীভাবে ব্যবহার করবেন – মাথার তালুতে এবং চুলে কোকো পাউডার ছড়িয়ে দিন। এবারে কাঠের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে নিন যাতে মাথায় তা ভাল করে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
কত দিন ব্যবহার করবেন – যখনই শ্যাম্পু করার সময় পাবেন না, কোকো পাউডার ব্যবহার করতে পারেন।
৮। টক দই (Yogurt)
টক দই ন্যাচারাল অয়েল রিমুভারের কাজ করে অর্থাৎ টক দই ত্বকের এবং চুলের তেলতেলে ভাব দূর করতে সাহায্য করে কোনও ক্ষতি না করে। কাজেই যদি আপনার অয়েলি স্ক্যাল্পের সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে আপনি অনায়াসে টক দই ব্যবহার করতে পারেন অয়েল কন্ট্রোল করার জন্য।
উপকরণ – আধ কাপ টক দই, এক চা চামচ বেকিং সোডা এবং দুই টেবিল চামচ পাতিলেবুর রস
কীভাবে ব্যবহার করবেন – উপকরণগুলি একসঙ্গে মিশিয়ে ভাল করে ফেটিয়ে নিন। এবারে ওই মিশ্রণ মাথার তালুতে লাগিয়ে নিন এবং একটা তোয়ালে দিয়ে জড়িয়ে রেখে নিন প্রায় আধঘণ্টা মতো। ঠান্ডা জলে চুল ধুয়ে ফেলুন। শ্যাম্পু করবেন না সেদিন।
কতদিন ব্যবহার করবেন – সপ্তাহে একবার করলেই যথেষ্ট।
৯। হেনা (Henna)
আপনাদের মধ্যে হয়তো অনেকেই মাথায় হেনা করেন। বেশিরভাগ মানুষ মাথায় হেনা করেন প্রাক্রিতিকভাবে চুল রাঙানোর জন্য। কিন্তু হেনা যে মাথার তালু এবং চুলের অতিরিক্ত তেল শুষে নিতে সক্ষম, সে ব্যাপারে কি জানা আছে?
উপকরণ – আধ কাপ হেনা পাউডার, একটি ডিমের সাদা অংশ এবং দুই টেবিল চামচ নারকোল তেল
কীভাবে ব্যবহার করবেন – সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিন এবং ভাল করে ফেটিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। পেস্টটি ঘণ্টাখানেক মাথার তালুতে এবং চুলে লাগিয়ে পরে ঠান্ডা জলে ভাল করে চুল ধুয়ে ফেলুন। ওই দিন শ্যাম্পু করবেন না।
কত দিন ব্যবহার করবেন – দু’সপ্তাহে একবার করতে পারেন।
১০। পাতিলেবুর রস (Lemon Juice)
পাতিলেবু শুধুমাত্র তৈলাক্ত স্ক্যাল্প নিরাময় করতে সাহায্য করে তা নয়, যে কারণে আমাদের মাথার তালুতে অনেকসময়ে অতিরিক্ত তেল জমে যায় সেটি দূর করতেও সাহায্য করে, অর্থাৎ খুশকি দূর করতে সাহায্য করে।
উপকরণ – দুটি মাঝারি মাপের পাতিলেবুর রস এবং দুই কাপ ডিস্টিল্ড ওয়াটার
কীভাবে ব্যবহার করবেন – পাতিলেবুর রস এবং ডিস্টিল্ড ওয়াটার মিশিয়ে একটি স্প্রে বটলে করে ফ্রিজে রেখে দিন। শ্যাম্পু করার পর চুল থেকে অতিরিক্ত জল নিংড়ে নিয়ে ওই মিশ্রণটি মাথার তালুতে স্প্রে করুন। মিনিটদশেক পর জল দিয়ে ধুয়ে নিন।
কত দিন ব্যবহার করবেন – যখন মাথার তালু খুব বেশি তৈলাক্ত হয়ে যাবে, তখনই পাতিলেবুর রস ব্যবহার করুন, অন্যথায় নয়। বেশি ব্যবহারে কিন্তু চুল এবং স্ক্যাল্প দুই’ই শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
১১। গ্রিনটি (Green Tea)
গ্রিন টি যে এমনিতে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে তা তো নিশ্চয়ই জানেন, তবে চুল এবং স্ক্যাল্পের তেলতেলে ভাব দূর করতেও কিন্তু গ্রিন টি সাহায্য করে।
উপকরণ – এক কাপ জল এবং একটি গ্রিন টি ব্যাগ
কীভাবে ব্যবহার করবেন – এক কাপ গরম জলে পাঁচ মিনিট গ্রিন টি ব্যাগ ভিজিয়ে রেখে ঠান্ডা হলে একটি স্প্রে বটলে ভরে ভাল করে স্ক্যাল্পে এবং চুলে স্প্রে করুন। আধ ঘণ্টা পর ঠান্ডা জলে চুল ধুয়ে নিন।
কত দিন ব্যবহার করবেন – সপ্তাহে একবার করুন।
১২। ওটমিল (Oatmeal)
ওটমিল খুব তাড়াতাড়ি স্ক্যাল্প থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নিতে পারে। ফলে আপনার যদি মাথার তালু এবং চুল তেলতেলে হয় তাহলে আপনি ওটমিলের হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন।
উপকরণ – পরিমাণমতো সেদ্ধ ওটমিল
কীভাবে ব্যবহার করবেন – ওটমিল ভাল করে ধুয়ে সেদ্ধ করে নিন। এবারে অতিরিক্ত জল ফেলে দিয়ে সেদ্ধ ওটমিলের পেস্ট তৈরি করে নিন এবং হেয়ার মাস্কের মতো স্ক্যাল্পে এবং চুলে লাগিয়ে রাখুন। ১৫-২০ মিনিট পর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
কত দিন ব্যবহার করবেন – সপ্তাহে একবার করতে পারেন। যদি খুব বেশি তৈলাক্ত হয় তা হলে দুবার ব্যবহার করুন।
১৩। জোজোবা অয়েল (Jojoba Oil)
স্ক্যাল্পের ময়লা পরিষ্কার করতে এবং তৈলাক্ত গ্রন্থি থেকে তেল নিঃসরণ বন্ধ করতে জোজোবা অয়েল সাহায্য করে।
উপকরণ – পরিমাণমতো জোজোবা অয়েল
কীভাবে ব্যবহার করবেন – ঠিক যেভাবে অন্যান্য তেল দিয়ে মাথার তালুতে মাসাজ করেন এক্ষেত্রেও তাই করতে হবে। মিনিট ২০ ভাল করে মাসাজ করুন এবং পরে মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
কত দিন ব্যবহার করবেন – সপ্তাহে অন্তত একবার করতেই হবে
১৪। এপসম সল্ট (Epsom Salt)
এপসম সল্টে ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে যা চুলে পুষ্টি যোগায় এবং প্রাক্রিতিকভাবে কোনও ক্ষতি না করে স্ক্যাল্প থেকে অতিরিক্ত তেল দূর করে।
উপকরণ – দুই চা চামচ এপসম সল্ট
কীভাবে ব্যবহার করবেন – আপনি যে শ্যাম্পু ব্যবহার করেন তার মধ্যে এপসম সল্ট মিশিয়ে নিন। সপ্তাহে দুবার করে নুন মেশানো শ্যাম্পু দিয়ে মাথা পরিষ্কার করুন।
কত দিন ব্যবহার করবেন – সপ্তাহে দু’বার ব্যবহার করতে পারেন।
১৫। ডিমের কুসুম (Egg Yolk)
ডিমের কুসুমে ফ্যাটি আসিড রয়েছে যা চুলের স্বাভাবিক তৈলাক্তভাব ধরে রাখতে সাহায্য করে ফলে স্ক্যাল্পের তৈলগ্রন্থি থেকে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত তে নিঃসৃত হয় না এবং স্ক্যাল্প তেলতেলে করে তোলে না।
উপকরণ – একটি ডিমের কুসুম এবং এক টেবিল চামচ পাতিলেবুর রস
কীভাবে ব্যবহার করবেন – উপকরণ দুটি ভাল করে মিশিয়ে নিন এবং শ্যাম্পু করা চুলে লাগিয়ে রেখে দিন ৪০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত। পরে ঠান্ডা জলে চুল ধুয়ে নিন। শ্যাম্পু করবেন না।
কত দিন ব্যবহার করবেন – সপ্তাহে একবার করুন
স্ক্যাল্পের তেলতেলে ভাব প্রতিরোধ করার টিপস (Tips To Prevent Oily Scalp)
চুল এবং মাথার তালু থেকে তৈলাক্তভাব না হয় দূর করলেন, কিন্তু তা তো আবার ফিরে আসতে পারে! যাতে ফিরে না আসে তার জন্য কী করবেন, জেনে নিন…
কী-কী করবেন না (Don’ts For An Oily Scalp)
- সারাক্ষণ মাথায় হাত দিয়ে রাখবেন না
- স্ক্যাল্পে কন্ডিশনার লাগাবেন না
- গরম জলে চুল ধোবেন না
- তেলমশলাযুক্ত খাবার, চিনি, রেডমিট কম খান
কী কী করবেন (Dos For An Oily Scalp)
- একদিন অন্তর একদিন চুল ধুলে ভাল
- প্রচুর পরিমাণে জল খান
- প্রতি সপ্তাহে বালিশের কভার বদলান
- চুল ধোওয়ার জন্য ঠান্ডা জল ব্যবহার করুন।
- খাবারে ফল, শাক, তরি-তরকারি যোগ করুন
তেলতেলে স্ক্যাল্প নিয়ে কিছু জরুরি প্রশ্নোত্তর (FAQs)
১| প্রশ্ন: স্ক্যাল্প যদি তেলতেলে হয় তা হলে কি চুল পড়ার সমস্যা হতে পারে?
উত্তর: হ্যাঁ, হতেই পারে। স্ক্যাল্পে তেল থাকলে তাতে ময়লা জমার আশঙ্কা বেশি থাকে। যদি চুলের গোড়ায় ময়লা জমে থাকে তাহলে তা চুলের ফলিকল নষ্ট করে দিতে পারে এবং চুল ঝরার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
২| প্রশ্ন: কী করে বুঝব আমার স্ক্যাল্প তৈলাক্ত কিনা?
উত্তর: একটি টিসু পেপার নিন এবং মাথার তালুতে বেশ ভাল করে ঘষতে থাকুন। যদি দেখেন টিসু পেপারে তেল লেগে রয়েছে তা হলেই বুঝতে পারবেন যে আপনার স্ক্যাল্প অয়েলি।
৩| প্রশ্ন: মাথার তালু তেলতেলে হলে কি খুশকি হতে পারে?
উত্তর: না, বরং খুশকিই তৈলাক্ত স্ক্যাল্পের একটি অন্যতম কারণ।
৪| প্রশ্ন: স্ক্যাল্পের এবং চুলের তেলতেলে ভাব দূর করার জন্য কি কোনও ওষুধ আছে?
উত্তর: বাজারচলতি নানা ধরনের পণ্য পাওয়া যায় যার সাহায্যে স্ক্যাল্পের অতিরিক্ত তেল দূর করা যায়, তবে যে-কোনও পণ্য ব্যবহার করার আগে একবার ডারমেটোলজিস্টের সঙ্গে কথা বলে নিন।
৫| প্রশ্ন: আমার স্ক্যাল্প তেলতেলে। আমি কি হেয়ার স্পা করতে পারি?
উত্তর: নিশ্চয়ই! আপনি বাজারচলতি কোনও প্রোডাক্টও ব্যবহার করতে পারেন আবার ঘরোয়া কোনও হেয়ার স্পা তৈরি করেও ব্যবহার করতে পারেন।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!